ছেলে মেয়েদের ধমকে নিজের পোস্টার খোলালেন পার্থ
কেন তাঁর ছবি ব্যবহার করা হয়েছে, প্রশ্ন করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সদুত্তর না মেলায় কার্যত বকুনি দিয়েই গোটা প্রেক্ষাগৃহ থেকে নিজের পোস্টার খোলার নির্দেশ দেন তিনি। এরপর কোনও কথা না বাড়িয়েই বেহালা কলেজের ছেলে-মেয়েরা ওই অনুষ্ঠান থেকে সরিয়ে ফেলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের 'ছবি উপস্থিতি'।
কমলিকা সেনগুপ্ত
'সবার ওপরে নেত্রী সত্য, তাহার ওপরে নাই'। আক্ষরিক অর্থে তৃণমূল এখন এই পথেই হাঁটছে। আর যারাই একটু বেলাইন হওয়ার চেষ্টা করছে তাদের আবার কান ধরে লাইনে আনছেন মহাসচিব। গত ৩১ জানুয়ারি তৃণমূলের বর্ধিত সভা থেকে কড়া বার্তা দিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া আর কারোর পোস্টার, হোর্ডিং ব্যবহার করা যাবে না। রাঘববোয়াল থেকে চুনোপুটি, দলের সব স্তরের নেতাকে সেদিন শৃঙ্খলা মানতে অনুরোধও করেছিলেন তিনি। কিন্তু, 'কেউ কথা শোনেনি'। এখনও শহর কলকাতা তো বটেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বড় বড় কাটআউটে তৃণমূলের মুখ হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন অনেক নেতামন্ত্রীরাই। তবে এভাবে আর চলবে না, সাফ বুঝিয়ে দিলেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, দলের অনুষ্ঠানে নিজের পোস্টার খুলিয়ে দৃষ্টান্তও স্থাপন করলেন তিনি।
আরও পড়ুন- 'এক সময় আমিই তো তৃণমূলের সভা-সমিতিতে মাইক ধরে গান গাইতাম'
ঘটনাটা আসলে কী?
সাই-তে (স্পোর্টস অথোরিটি অব ইন্ডিয়া) একটি অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পেয়ে সল্টলেকে হাজির হয়েছিলেন মন্ত্রীমশাই। সেখানে গিয়ে তাঁর চোখ কপালে ওঠার মত অবস্থা। সেকেন্ড ব্যয় না করেই উদ্যোক্তাদের ডেকে পাঠান তিনি। মহাসচিবের ডাক পেয়ে তড়িঘড়ি হাজির আয়োজকরা। 'কী হয়েছে স্যার', বলার আগেই ধমক শুরু শিক্ষামন্ত্রীর। কেন তাঁর ছবি ব্যবহার করা হয়েছে, প্রশ্ন করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সদুত্তর না মেলায় কার্যত বকুনি দিয়েই গোটা প্রেক্ষাগৃহ থেকে নিজের পোস্টার খোলার নির্দেশ দেন তিনি। এরপর কোনও কথা না বাড়িয়েই বেহালা কলেজের ছেলে-মেয়েরা ওই অনুষ্ঠান থেকে সরিয়ে ফেলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের 'ছবি উপস্থিতি'।
আরও পড়ুন- পশ্চিমবঙ্গের স্কুলে দেখানো হবে না মোদীর 'পরীক্ষা পর চর্চা', জানালেন পার্থ
তৃণমূলের একাংশ মনে করছে, এই ঘটনা কেবল দৃষ্টান্তই নয় বরং দলের জন্য শিক্ষণীয় পাঠও। রাজনৈতিক মহলের অনেকে তো আবার মনে করছেন, নিজের নিদান নিজে হাতে পালন করে মহাসচিব আসলে গোটা দলকেই বার্তা দিলেন। বুঝিয়ে দিলেন যেখানে মহাসচিব নেত্রীকে সর্বাধিকার দিচ্ছেন সেখানে বাকিদেরও তা শেখা উচিত এবং অনুকরণ করা উচিত। কারো কারো মতে মুখে না বললেও পার্থ চট্টোপাধ্যায় আসলে এটাই বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন, দলে অনেক মাতব্বর থাকলেও তৃণমূলের ক্যাপ্টেন এবং কোচ কিন্তু একজনই। আর সেটা কে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।