রাজ্যে সক্রিয় স্লিপিং সেল, ভারতের বড় নাশকতার আঁতুরঘর পশ্চিমবঙ্গ বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা
সরাসরি নাশকতার ঘটনা হাতে গোণা। কিন্তু, সন্ত্রাসমুক্ত নয় পশ্চিমবঙ্গ। গোয়েন্দা তথ্য বলছে, দেশের অন্যত্র জঙ্গি নাশকতা ঘটাতে অসংখ্যবার পশ্চিমবঙ্গ সীমান্ত ব্যবহার করেছে জঙ্গিরা। জঙ্গিদের আশ্রয় দিতেও, রাজ্যে সক্রিয় অসংখ্য স্লিপিং সেল। রাজ্য কি সন্ত্রাসের আঁতুরঘর?
ওয়েব ডেস্ক: সরাসরি নাশকতার ঘটনা হাতে গোণা। কিন্তু, সন্ত্রাসমুক্ত নয় পশ্চিমবঙ্গ। গোয়েন্দা তথ্য বলছে, দেশের অন্যত্র জঙ্গি নাশকতা ঘটাতে অসংখ্যবার পশ্চিমবঙ্গ সীমান্ত ব্যবহার করেছে জঙ্গিরা। জঙ্গিদের আশ্রয় দিতেও, রাজ্যে সক্রিয় অসংখ্য স্লিপিং সেল। রাজ্য কি সন্ত্রাসের আঁতুরঘর?
***23 জুলাই 2001
খাদিম কর্তা অপহরণ- তিলজলায় নিজের কারখানার কাছে অপহৃত হন খাদিম কর্তা পার্থ রায়বর্মণ। মুক্তিপণের জন্য শিল্পকর্তার অপহরণের সেই ঘটনার তদন্তে জঙ্গিযোগের প্রমাণ পান তদন্তকারীরা।
***22 জানুয়ারি 2002
আমেরিকান সেন্টারে হানা- এখনও পর্যন্ত রাজ্যে সন্ত্রাসবাদী হামলার সবচেয়ে বড় ঘটনাটি ঘটে ২০০২ জানুয়ারিতে। স্বয়ংক্রিয় রাইফেল নিয়ে আমেরিকান সেন্টারে হামলা চালায় বাইকে সওয়ার জঙ্গিরা। গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যান বেশ কয়েকজন নিরাপত্তারক্ষী।
আমেরিকান সেন্টারে হানার পর সরাসরি জঙ্গি নাশকতার ঘটনা এরাজ্যে ঘটেনি। তবে তার মানে এই নয় রাজ্যবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাজ্যপুলিস সফল হয়েছে। গত কয়েকবছরে একাধিক ঘটনায় মিলেছে রাজ্যে জঙ্গিযোগের প্রমাণ। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এই রাজ্যকে গত একদশক ধরে নাশকতা করে পালানোর পথ হিসেবে ব্যবহার করেছে জঙ্গিরা কার্যত অরক্ষিত সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ থেকে অনায়াসেই এরাজ্যে ঢুকে দেশের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়া যায়
মুম্বই ধারাবাহিক বিস্ফোরণ, হায়দরাবাদের মক্কা মসজিদ বিস্ফোরণের ক্ষেত্রে জঙ্গিরা পশ্চিমবঙ্গকেই যাতায়াতের রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করেছিল। রাজ্যে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠীগুলির একাধিক স্লিপিং সেলের সক্রিয়তা নিয়ে বারবার সতর্ক করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি। প্রতিবেশি দেশে পালাবদলের পর পরিস্থিতির বদল হয়। বাংলাদেশে জঙ্গিগোষ্ঠীগুলিকে কঠোরহাতে দমন করে শেখ হাসিনা সরকার। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, সে সময় বাংলাদেশ থেকে বহু জঙ্গিনেতা পালিয়ে এসে এরাজ্যে আশ্রয় নেয়। গত কয়েক বছরে একাধিক ঘটনায় রাজ্যে জঙ্গি সক্রিয়তার ইঙ্গিত মিলেছে।
*** ৮ এপ্রিল ২০১২: মেটিয়াবুরুজের মসজিদ তালাওয়ে বিস্ফোরণে দুজনের মৃত্যু। বোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণ
***১২ জুলাই ২০১২: মেটিয়াবুরুজ বিস্ফোরণের তদন্তে কলকাতায় গ্রেফতার সিমি নেতা হারুন অল রশিদ
***২০ ডিসেম্বর ২০১২: কলকাতার প্রিন্সেপ ঘাটে গ্রেফতার হুজি জঙ্গি মিজানুর রহমান
***১৯ ও ২৩ মে ২০১৩: দার্জিলিং জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে পাঁচ আইএসআই চরকে গ্রেফতার করে পুলিস
***২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪: ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন ও অন্যান্য জঙ্গিগোষ্ঠীর নিরাপদ আশ্রয়ে পরিণত হয়েছে কলকাতা। জানায় NIA।
***২ জুলাই ২০১৪: চিত্পুরের কলকাতা স্টেশন থেকে গ্রেফতার জার্মান বেকারি বিস্ফোরণে অভিযুক্ত ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন জঙ্গি জাহিদ হুসেন
***১৬ অগাস্ট ২০১৪: আলিপুর জেলে বসেই স্মার্ট ফোনের স্কাইপে সফটওয়্যারের মাধ্যমে পাকিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে লস্কর জঙ্গি আর্শাদ খান ও সওকত। জানায় দিল্লি পুলিস।
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জঙ্গি তত্পরতা আটকাতে যে প্রশাসনিক যে উদ্যোগ নেওয়া উচিত, এরাজ্যে তা কখনই চোখে পড়েনি। এজন্য পূর্বতন বাম সরকার ও বর্তমান তৃণমূল সরকার, দুই সরকারকেই দুষেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।