TMC Bijaya Sammiloni: দলনেত্রীর শুভেচ্ছা পৌঁছে দিতে এবার ভিন রাজ্যেও বিজয়া সম্মিলনী তৃণমূলের
ইতিমধ্যেই ৫০০-র বেশি বিজয়া সম্মিলনী করে ফেলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এবার গোয়াতেও বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করল তৃণমূল। দলের কর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের পাশাপাশি আগামী দিনে কীভাবে দল চলবে তাও তুলে ধরা হচ্ছে ওই বিজয়া সম্মিলনীতে
শ্রেয়সী গঙ্গোপাধ্য়ায়: পুজোর পরই বিজয়া সম্মিলনীতে নেমে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে একাধিক বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। তাঁদের উত্সাহ দিয়েছেন। কিছুদিন আগেই শিলিগুড়ির কাউয়াখালিতে বড়সড় বিজয়া সম্মিলনী করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এবার দলনেত্রী ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুভেচ্ছা পৌঁছে দিতে ভিন রাজ্যেও পৌঁছে গেল তৃণমূল কংগ্রেস।
আরও পড়ুন-রাজ্য ও কেন্দ্র থেকে টাকা আসছে না, ‘অর্থকষ্টে’ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়
রাজ্যে ইতিমধ্যেই ৫০০-র বেশি বিজয়া সম্মিলনী করে ফেলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এবার গোয়াতেও বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করল তৃণমূল। দলের কর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের পাশাপাশি আগামী দিনে কীভাবে দল চলবে তাও তুলে ধরা হচ্ছে ওই বিজয়া সম্মিলনীতে। গোয়া বিধানসভা ভোটে ধাক্কা খাওয়ার পর এবার সেখানে ফের জনসংযোগে নেমে পড়ল ঘাসফুল শিবির। আপাতত চিকিত্সক ও মহিলাদের সঙ্গে চলছে পুজোর শুভেচ্ছা বিনিময়। ওই দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হয়েছে কাকলী ঘোষ দস্তিদারকে।
এদিকে বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানকে ঘিরে অস্বস্তিরও শেষ নেই। গত ১৯ অক্টোবর শিলিগুড়ির কাউয়াখালি মাঠে বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে যোগ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই অনুষ্ঠানকে ঘিরে দুটি বিষয় রাজ্যে শোরগোল ফেলে দেয়। একটি হল অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মমতা বলেন, সিঙ্গুর থেকে টাটাদের তাড়িয়েছে সিপিএম। অন্যদিকে, দ্বিতীয় বিষয়টি হল মমতা তাঁর বক্তব্যে বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতা করে জোর সওয়াল করলেও অনুষ্ঠান শেষে অনন্ত মহারাজ দাবি করেন কোচবিহার বাংলার বাইরে। দুটি বিষয় নিয়েই সুর চড়ায় বিরোধীরা।
শিলিগুড়ির ওই বিজয়া সম্মিলনীতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সিঙ্গুর থেকে টাটাদের তাড়িয়েছে সিপিএম। আমরা বরং চাষীদের জমি ফেরত দিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রীর ওই মন্তব্য নিয়ে শুরু হয়ে গেল রাজনৈতিক তরজা। মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, কেউ কেউ বাজে কথা বলে বেড়াচ্ছে। বলছে, আমি টাটাদের তাড়িয়ে দিয়েছি। আর টাটা এখন চাকরি দিচ্ছে। টাটাকে আমি তাড়াইনি। সিপিএম তাড়িয়েছে। পলিটিক্য়াল কথা এখানে আমি বলতে চাই না। আপনারা লোকের জমি জোর করে দখল করতে গিয়েছিলেন। আমরা জমি ফেরত দিয়েছি। জায়গার তো অভাব নেই! কেন জোর করে জমি নেব? এত প্রজেক্ট তো আমরা করেছি, জোর করে তো জমি নিই নি! আমরা চাই সবাই বেঙ্গল ইনভেস্ট করুক। এখানে মানুষের চাকরি হোক।
পৃথক কোচ রাজ্য চাই বলে প্রায়ই ভিডিয়ো বার্তা জারি করে হুমকি দেন কেএলও নেতা জীবন সিং। তাঁর দাবি, কোন যুক্তিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোচবিহারকে বঙ্গ হিসেবে দাবি করেন? কামতাপুরের মানুষের উপরে কলকাতার শাসন চাপিয়ে দেওয়া যাবে না। নাম না করে কেএলও প্রধানের ওই হুঁশিয়ারির জবাব দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার শিলিগুড়ির কাওয়াখালী গ্রাউন্ডে বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানে অনন্ত মহারাজকে পাশে বসিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সবাইকে বলব ভালো করে কাজ করুন। কোনও ভাগাভাগি নয়। ভঙ্গ টঙ্গ নয়। আমরা চাই সঙ্গ। বঙ্গ চায় সঙ্গ।
শিলিগুড়ি কাউয়াখালির মাঠে বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে ছিলেন পৃথক কোচবিহারের প্রবক্তা অনন্ত মহারাজ। অনুষ্ঠান শেষে মুখ্যমন্ত্রীর কথার একেবারে বিপরীত মেরুতে অনন্ত মহারাজ। এদিন সকালে উত্তর কন্যায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করেন অনন্ত মহারাজ। তারপর বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চে অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেখানে তিনি শান্তির কথা বলেন। একসঙ্গে থাকার কথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসাও করেন। কিন্তু তার পরেই সুর বদল।
অনন্ত মহারাজ বলেন, উনি বলছেন বঙ্গভঙ্গ হতে দেবেন না। আমরা তো বঙ্গকে ভঙ্গ করতে চাই না। আমাদের কোচবিহারটাকে রিফরমেশন করতে চাই। আপনারা এখন চিন্তা করুন কোচবিহার কোথায় আর ওয়েস্ট বেঙ্গল কোথায়। জিওগ্রাফিক্যালি দেখুন। তারপর বলবেন। কোচবিহার পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে নয়। কোচবিহার আলাদা। পশ্চিমবঙ্গের বাইরে। আমার কাছে প্রমাণ আছে। এটাই রাজ্য সরকারকে বুঝতে হবে। ভারত সরকার এটাই করতে চলেছে।