ছোটদের বড়দিন
ক্রিসমাস এসে গেল। কানে না বাজুক, সবার মনেই এখন জিংগল বেলের সুর। সামনে এক সপ্তাহের লম্বা ছুটি। স্কুলে স্কুলে পরীক্ষা শেষ। বেরিয়ে গেছে রেজাল্টও। আসল কথা আপনার বাড়ির খুদে সদস্যদের ভারী স্কুল ব্যাগগুলো এখন কিছুদিন অন্তত তাকে তোলা থাকবে।
রায়া দেবনাথ
ক্রিসমাস এসে গেল। কানে না বাজুক, সবার মনেই এখন জিংগল বেলের সুর। সামনে এক সপ্তাহের লম্বা ছুটি। স্কুলে স্কুলে পরীক্ষা শেষ। বেরিয়ে গেছে রেজাল্টও। আসল কথা আপনার বাড়ির খুদে সদস্যদের ভারী স্কুল ব্যাগগুলো এখন কিছুদিন অন্তত তাকে তোলা থাকবে। তাই এবারের ক্রিসমাসের ছুটিটা তাদের জন্য একটু স্পেশাল বানিয়ে ফেলুন। জানি, আপনারা ভালই জানেন কী ভাবে আপনার বাড়ির পুঁচকিদের বড়দিনকে সুন্দর করে তোলা যায়, তাও আমাদের তরফ থেকেও রইল কিছু ছোট্ট টিপস। ধরে নিন এটাই আমাদের তরফ থেকে আপনাদের ছোটসোনাদের উপহার।
১. ২৪ ডিসেম্বরের রাতে আপনিই হয়ে যান আপনার ছোট্ট সোনার সান্তাক্লজ। তাকে ভাবতে দিন সত্যিই সান্তা বুড়ো বলে একজন আজও আসে। রাতের অগচরে নিঃস্বার্থে বাচ্চাদেরকে উপহারে ভরিয়ে তোলে। আর কিছুদিন পরেই তো সেই গিয়ে পড়বে কঠিন বাস্তবের মুখে। তার চেয়ে থাকুক না শান্তিতে কল্পনার জগতে। তাকে বলুন দরজা, দেওয়ালে ঝুলিয়ে রাখতে একপাটি মোজা। তারপর ঘুমের মাঝে সেই মোজা ভরিয়ে দিন না হয় সামান্য লজেন্স, চকলেট, রংপেনসিল বা স্টিকারে। দেখবেন ২৫ ডিসেম্বরের সকালে যখন আপনার খুদেটি সেই উপহার দেখে `রিটার্ন গিফট` হিসাবে আপনাকে অনাবিল হাসি দেবে, তাতেই আপনার ক্রিসমাস রঙিন হয়ে যাবে।
২. বাড়িতেই বানিয়ে ফেলুন ক্রিসমাস কেক। বিশ্বাস করুন নামী-দামী দোকানের থেকে সেই কেকের স্বাদ আপনার সন্তানদের কাছে অনেক বেশি আকর্ষণীয় হবে।
৩. আজকাল সারাবছর পড়াশোনার বিপুল চাপে শৈশব হারিয়ে যাচ্ছে শিশুদের কাছ থেকে। পারলে অন্তত এই কটা দিন ফিরিয়ে দিন না তাদের শৈশব। একটা ছোট্ট সান্তার পুতুল আর একটা ছোট্ট প্লাস্টিকের ক্রিসমাস ট্রি। সঙ্গে কিছু কাগজের চাঁদ, তারা। এইটুকু ক্রিসমাস সজ্জা যথেষ্ট ছোটদের বড় মন খুশি করার জন্য।
৪. সারাবছর পড়াশোনার জন্য তো সবসময় চাপ দেন। এই কটা দিন না হয় প্রাণ খুলে খেলতে দিন। ইন্ডোর নয়, সঙ্গে বাইরের খোলা আকাশটাও চিনতে শেখান।
৫. এই ছোট্ট ছুটিতে তাদের হাত ধরে দিন দুয়েকের উইকএন্ড ট্রিপটা ফাঁকতালে সেরে নিন। বাচ্চাদের সঙ্গেই নিজেও এক বুক ফ্রেশ বাতাসের স্বাদ নিয়ে আসুন।
৬. কলকাতা থেকে এখনও চিড়িয়াখানা, তারামণ্ডল, সায়েন্সসিটি, নিক্কো পার্করা গায়েব হয়নি। কচিকাঁচাদের বগল দাবা করে শীতের সোনা রোদ গায়ে মেখে কমলালেবু সহকারে একে একে সেরে ফেলুন আপনার কলকাতা ট্রিপ। দেখবেন নিজের ছোটবেলাটাও কখন অগচোরে আপনার সঙ্গী হয়েছে।
৭. আপনার বাড়ির বইয়ের আলমারিটা উন্মুক্ত করে দিন ওদের জন্য। আপনার ছোটবেলার স্বপ্নগুলো ভাগ করে নিন ওদের সঙ্গে। ঠাকুরমার ঝুলি থেকে লীলা মজুমদার, টেনিদা থেকে অবন ঠাকুর, টিনটিন থেকে বাঁটুল, সুকুমার থেকে শীর্ষেন্দু...আলাপ করিয়ে দিন ওদের সারা জীবনের পরম বন্ধুদের সঙ্গে।
আমরা জানি আপনার মাথায় এর থেকে ঢের ভাল ভাল প্ল্যান গিজগিজ করছে। মাথায় রাখবেন না, তাদের নামিয়ে আনুন বাস্তবের মাটিতে। সঙ্গে আমাদেরও না হয় আপনাদের ভাবনার ভাগীদার করুন। সব শেষে মেরি ক্রিসমাস। ছোট্টদের নিয়ে মজায় কাটান আপনার বড়দিন।