Heera Panchami: জগন্নাথদেব ও মহালক্ষ্মীর প্রেম-ভালোবাসা, মান-অভিমানের গল্প বলে হীরা পঞ্চমী
পরদিন ফিরবেন বলে কথা দিয়েও ৪ দিন মাসির বাড়ি থেকে ফেরেননি জগন্নাথদেব। স্বামীর অপেক্ষা করতে করতে রেগে যান মহালক্ষ্মী।
অয়ন ঘোষাল : সোজা রথের পাঁচ দিন পার। পুরীতে পালিত হচ্ছে হীরা পঞ্চমী। পুরাণে কথিত আছে, এক হাজার একটা উপচার ও নিয়মের নিগড়ে বাঁধা শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা। তবে কাহিনীর বিচারে এরমধ্যে সব থেকে আকর্ষণীয় হল হীরা পঞ্চমী।
পয়লা জুলাই স্বামী তাঁর ভাই-বোনকে নিয়ে চলে গিয়েছেন গুন্ডিচায় মাসির বাড়িতে আনন্দ করতে। এরমধ্যে একটিবারের জন্যও মনে পড়েনি স্ত্রী মহালক্ষ্মীর কথা। জাগতিক ও সাংসারিক ঈশ্বর জগন্নাথের জন্য তাই টানা পাঁচ দিন অপেক্ষা করার পর, হীরা পঞ্চমীতে ভারী রেগে যান মহালক্ষ্মী। বিরহে কাতর হয়ে পড়েন। হয়ে ওঠেন অভিমানী। সে যুগে তো আর টেলিফোন বা মোবাইল ছিল না। তাই হীরা পঞ্চমীতে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের দক্ষিণ দুয়ারে নিজের অধিষ্ঠান ছেড়ে, সটান সাক্ষীগোপাল গুন্ডিচা মন্দিরে পৌঁছে যান মহালক্ষ্মী দেবী।
কিন্তু জগন্নাথ কিছুতেই ফিরতে রাজি নন। কারণ মাসির বাড়ি তাঁর জন্মভূমি। সেখানে বেশি আদর। বেশি প্রশ্রয়। পুরীর মন্দির তো তাঁর কর্মভূমি। সেখানে ফিরলেই তো আবার জগতবাসীর দুঃখ-কষ্ট লাঘবের গুরুদায়িত্ব শুরু। স্বামী না ফিরতে চাওয়ায় রেগে যান মহালক্ষ্মী। প্রচণ্ড রেগে গিয়ে জগন্নাথ দেবের রথ নান্দীঘোষের একটা অংশ ভেঙে ফেলেন মহালক্ষ্মী। তাঁর মানভঞ্জনেই পালিত হয় হীরা পঞ্চমী উৎসব। যা পালিত হয় গুন্ডিচা মন্দিরে। এদিন পালকি করে মহালক্ষ্মীর একটি মূর্তিকে গুন্ডিচা মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বিশেষ ভোগ ও বৈদিক নাম-গান করে পালিত হয় হীরা পঞ্চমী নামে প্রচলিত এই প্রথা। জগন্নাথদেব ও মহালক্ষ্মীর মধ্যে সাধারণ স্বামী-স্ত্রীর মতো যে প্রেম ভালোবাসা ও মান-অভিমান, তারই প্রতিচ্ছবি ফুটে ওঠে এই প্রথার মধ্যে দিয়ে।
প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে, দাদা বলরাম ও বোন সুভদ্রার সঙ্গে রথে করে যাওয়ার আগের দিন অর্থাত শৃঙ্গার ও নবযৌবন প্রাপ্তির দিনেই জগন্নাথদেব মহালক্ষ্মীকে কথা দিয়ে যান যে, পরের দিনই তিনি ফিরে আসবেন। কিন্তু চার দিন পরেও তিনি না ফিরলে স্বামী কেমন আছেন, সেই চিন্তায় উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন মহালক্ষ্মী । পাঁচ দিনের দিন দেবী বিমলার পরামর্শে জগন্নাথের মাসির বাড়ি গুন্ডিচা মন্দিরে পালকি করে উপস্থিত হন তিনি। মহালক্ষ্মী আসছেন এই খবর পেয়েই গুন্ডিচা মন্দিরের দরজা বন্ধ করে দেন জগন্নাথ। এর ফলে মহালক্ষ্মী অত্যন্ত রেগে যান।
আরও পড়ুন, Devshayani Ekadashi Vrat: শ্রীবিষ্ণু ঘুমোতে যান এই একাদশীতে; জানেন ব্রতটির গুরুত্ব?