ফ্যাশন আর প্যাশনের মিশেল শতরূপার কথায়

ডাগর চোখ। টিকালো নাক। পাতলা ঠোঁট। ভাঙা চোয়াল...সনাতনী বাঙালি সৌন্দর্যের সঙ্গে ঠিক যেন মিলল না।

Updated By: Oct 7, 2012, 11:29 PM IST

ডাগর চোখ। টিকালো নাক। পাতলা ঠোঁট। ভাঙা চোয়াল...সনাতনী বাঙালি সৌন্দর্যের সঙ্গে ঠিক যেন মিলল না। শতরূপা পাইন। নয়নিকা চ্যাটার্জির পর বাঙালি মডেলদের মধ্যে এরকম 'হটকে' সুন্দরী দেখা গেছে কি না সন্দেহ। এই মুহূর্তে কলকাতার র‍্যাম্প দাপিয়ে বেড়ালেও আর পাঁচটা বাঙালি মেয়ের মত প্রথমবার সুইমস্যুটে ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে বুক কেঁপেছিল শতরূপারও। সেই গল্পোই শুনলেন প্রমা মিত্র।

মডেলিংয়ে আসার কাহিনি
ছোটবেলা থেকেই খেলতে ভালবাসি। স্কুলে পড়তে বাস্কেটবল, ভলিবল, বেসবল খেলতাম। তবে কখনও মডেলিংয়ের কথা ভাবিনি। ভাবতাম মডেলিংয়ের জন্য বিশেষ কিছু লাগে। ২০০৮-এ হঠাত্ই কলেজের বন্ধুদের ইচ্ছায় একটা বিউটি কনটেস্টে যোগ দিয়েছিলাম। টপ ফাইভে সিলেক্টেডও হয়ে যাই। সেখানেই মডেলিংয়ে আমার প্রথম পাঠ। একমাসের গ্রুমিংয়ে আমার মধ্যে একটা আলাদা টেম্পো অনুভব করি, 'হাউ টু বি আ মডেল'। তারপর ২০১০। মিস ইন্ডিয়া ইস্ট কনটেস্টের ফাইনালিস্ট হওয়ার পর মার্ক রবিনসনের সঙ্গে সেই ১৫ দিনের গ্রুমিং সেশন আমাকে সত্যিকারের মডেল করে তোলে। সত্যি বলতে কী, তারপরই আমার ভাগ্য খুলে যায়। তারপর থেকেই প্রচুর অফার আসতে থাকে। ফ্যাশন শো, প্রিন্ট শুট, কর্মাশিয়াল সবরকম অফার পেতে থাকি।
মডেলিং এবং বাড়ি
মডেলিংয়ে আসা নিয়ে আমার বাড়ি থেকে কোন সমস্যা হয়নি। কিন্তু শুরুতে আমার নিজের ফটোশুট করতে একটু লজ্জা করত। চারদিক থেকে ক্যামেরা আমার ছবি তুলছে এটা একেবারেই অভ্যাস ছিল না। তার ওপর ট্রেনিং-এর ২দিন পরই হঠাত্‍ করে বলা হয় আগামিকাল তোমাদের সুইম স্যুট শুট আছে। যদিও আমি জানতাম ক্যারি করতে পারব কিন্তু সুইম স্যুট পরে হঠাত্ করে জাজদের সামনে দাঁড়ানো, ক্যামেরার সামনে পোজ দেওয়া খুব অস্বস্তিকর ছিল। সেইদিনকে হল আমার মধ্যে থেকে সেই ব্যাপারটা চলে গেছে যেটা আমাকে এতদিন ভিতরে টেনে রেখেছিল। এখন যদি কেউ আমাকে বলে কাল একটা বিকিনি শুট আছে যেকোনও সময় আমি রেডি। কিন্তু একজন বাঙালি মেয়ে হয়ে প্রথমবার সুইম স্যুটে ক্যামেরার সামনে আসতে সত্যি ভয় পেয়েছিলাম।

এখনও পর্যন্ত সেরা কাজ
কলকাতায় আমি তানিষ্ক, সেনকো গোল্ড, গাজার সঙ্গে কাজ করেছি। কিন্তু আমার সেরা কাজ একটি ফ্যাশন ম্যাগাজিনের ফটোশুট। সেখানে আমি এবং রাইমা সেন একসঙ্গে শুট করেছিলাম। রাইমা কলকাতার একজন আভিনেত্রী হিসেবে আর আমি কলকাতার একজন মডেল হিসেবে একসঙ্গে কাজ করেছিলাম। এবং অবশ্যই দশভুজার প্রোমো শুট। আমি যেটা সবসময় করতে চাইতাম দশভুজা আমার জন্য সেই স্টেজটা তৈরি করে দিয়েছিল। আমি মিউজিক খুব ভালোবাসি। ওখানে আমাকে পিয়ানো বাজাতে হয়েছে যেটা আমি জানতাম না বাজাতে। আমাকে ঠাকুরের মত সাজিয়ে দেওয়া, একটা অসাধারণ সেটে হেঁটে আসা, ধোঁয়া দিয়ে একটা অন্যরকম মুড সেট করা, সবটা মিলিয়ে একটা দারুণ এফেক্ট ছিল। আমার প্রথম কর্মাশিয়াল এবং এখনও পর্যন্ত আমার বেস্ট এক্সপেরিয়েন্স।

পরিবার ও পড়োশোনা

আমার বাবা ডাক্তার ও মা হাউজমেকার। অক্সিলিয়াম কনভেন্ট থেকে ক্লাস টুয়েলভ পাশ করার পর যাদবপুর ইউনিভার্সিটি থেকে ইংলিশ অনার্স নিয়ে গ্র্যাজুয়েশন। যাদবপুর থেকেই ইংলিশে মাস্টার্স শেষ করেছি এবছর। 
অভিনয়ে আসার ইচ্ছা
অভিনয়ে আমার কোনও অসুবিধা নেই। আমার প্রচুর প্রফেশনাল বন্ধু রয়েছেন যারা আমাকে এব্যাপারে অনেক সাহায্য করেন। অনেক আমাকে ক্যারেক্টর প্লে করান। পুরনো দিনের মানুষদের ওপর যখন কাজ করতে হয় তখন সেখানে কিছুটা অভিনয়ের সুযোগ তো থেকেই যায়। সেখান থেকেই মনে হয়েছে অভিনয়টা হয়তো আমি করতে পারবো।

পাঁচ বছর পর
পাঁচ বছর পর অবশ্যই আই সি মাইসেল্ফ অন দ্য টপ। একজন সফল মডেল হিসেবে অথবা সফল অভিনেত্রী হিসেবে নিজেকে দেখতে চাইবো। যদি কাল আমি কোনও ভাল পরিচালকের থেকে অফার পাই এখানে তাহলে আমি অবশ্যই নেব। মুম্বইতেও কাজ করার ইচ্ছা আছে। শুধু এটুকু জানি আমি জীবনে কোনও সুযোগ হারাতে চাই না।

স্টাইল স্টেটমেন্ট

স্টাইল ইজ ইয়োর ওন। আমি মনে করি ফ্যাশন কখনই ফলো করতে হয় না। উই কাম অ্যাকরোজ ফ্যাশন কিন্তু স্টাইলটা আমাদের নিজস্ব।

পাঠকদের জন্য টিপস

আমি মনে করি সব ইয়াংস্টারসদের আলামারিতেই যেটা থাকা উচিত সেটা হল ব্লু জিনস আর হোয়াইট শার্ট। এবং অবশ্যই একটা ব্ল্যাক শর্ট ড্রেস। তবে আমি এটাই বলব যেটাই পরো না কেন, তোমাকে কেউ গিফট করুক বা নিজেই কেন, সেটাকে ভালমত ক্যারি করতে পারাটাই শেষ কথা।
তোমার পুজো প্ল্যান
আমার খুব ক্লোজ বন্ধুদের একটা গ্রুপ আছে। পুজোর দিনগুলো আমার সবার সঙ্গে ঘুরতে ভাল লাগে না। আমার যে ৪-৫ জন খুব কাছের বন্ধু আছে তাদের সঙ্গেই পুজো কাটাতে চাই।

.