বাঘ সংরক্ষণে মধু! সুন্দরবনের মধু এখন মিলবে Amazon-এ! স্থানীয় জীবিকা বাঁচাতে উদ্যোগ বনদফতরের
Amazon-এ বিক্রি হওয়া মধুর প্রতিটি বোতলের থেকে সংগৃহীত অর্থ সুন্দরবনের বাঘ সংরক্ষণ, স্থানীয় দরিদ্র মৎসজীবী, মধু সংগ্রহকারী মানুষের জীবিকা সুরক্ষিত করার কাজে ব্যয় করা হবে।
মৌপিয়া নন্দী: রাজ্য বনদফতরের উদ্যোগে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অরণ্যের খাঁটি মধু এখন মিলবে Amazon-এ। ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের সাহায্যে সুন্দরবনের অসংখ্য মানুষের দীর্ঘদিনের জীবিকা ও এই মধু সংগ্রহ আর বিক্রির সঙ্গে যুক্ত পরিবারগুলিকে বাঁচাতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য বনদফতর।
সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অরণ্য থেকে সংগৃহীত খাঁটি মধু এখন রাজ্য বনদফতর সাহায্যে সরাসরি বিক্রি হবে Amazon-এর মতো প্রথম সারির ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে। জানা গিয়েছে, Amazon-এ বিক্রি হওয়া মধুর প্রতিটি বোতলের থেকে সংগৃহীত অর্থ সুন্দরবনের বাঘ সংরক্ষণ, স্থানীয় দরিদ্র মৎসজীবী, মধু সংগ্রহকারী মানুষের জীবিকা সুরক্ষিত করা ও সর্বোপরি সুন্দরবনের গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ঘটানোর কাজে ব্যয় করা হবে।
রাজ্য বনদফতরের উদ্যোগে আর একটা বড় পরিবর্তন এসেছে। এখন আর প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে সুন্দরবনের জঙ্গলে মধু সংগ্রহ করতে যাবেন না এই পেশার সঙ্গে যুক্ত মানুষরা। সমবায় থেকে সুলভে ঋণ নিয়ে এখন তাঁরা গ্রামেই চাষ করছেন উৎকৃষ্ট মানের মধুর। এখনও পর্যন্ত এই প্রকল্পে ৭২ জন যুক্ত হয়েছেন। এই লকডাউনের মধ্যেই প্রায় ৩৭ টন মধু উৎপাদন করেছেন এঁরা।
করোনা মহামারির জেরে বিপর্যস্ত দেশের পরিবহন, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। বিপর্যস্ত ছোট-বড় সব রকমের শিল্প। লকডাউনের জেরে বিগত ৫-৬ মাসে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। সবচেয়ে সমস্যায় পড়েছেন কৃষিজীবী ও ঘরোয়া বা কুটির শিল্পের উপর নির্ভরশীল অসংখ্য দরিদ্র ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষ।
আরও পড়ুন: গরীবের সন্তানকে দিলেন শ্রীকৃষ্ণের রূপ, শিল্পীর শিল্পকর্ম দেখে তাজ্জব গোটা বিশ্ব
করোনা মহামারির জেরে একই ভাবে সমস্যায় পড়েছেন সুন্দরবনের মধু সংগ্রহ ও বিক্রি করে দিন গুজরান করা কয়েক শো পরিবার। লকডাউনের জেরে বাজারে যথেষ্ট চাহিদা থাকা সত্ত্বেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সংগৃহীত সুন্দরবনের মধু বাজারে বিক্রি করতে পারছেন না তাঁরা। সম্প্রতি জঙ্গলে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে বাঘের কবলে পড়ে প্রাণও হারিয়েছেন বেশ কয়েকজন। অর্থের অভাবে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন সুন্দরবনের অসংখ্য মানুষ। এই সমস্যার সমাধানে এ বার উদ্যোগী হল রাজ্য বনদফতর। এক কথায় করোনা মহামারি আর লকডাউনের জেরে বিপর্যস্ত সুন্দরবনের দরিদ্র পরিবারগুলির বর্তমান ও ভবিষ্যতের উপার্জন সুরক্ষিত করতে, পাশাপাশি বাঘ সংরক্ষণের জন্য বাড়তি দায়িত্ব নিল রাজ্য বনদফতর।