'অরেঞ্জ দ্য ওয়ার্ল্ড', নারী অত্যাচার রুখতে আর কী বার্তা রাষ্ট্রসংঘের

ভারতে কী অবস্থা মহিলাদের?  ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর ২০১৯ সালের রিপোর্ট কী বলছে?

Updated By: Nov 25, 2020, 03:44 PM IST
'অরেঞ্জ দ্য ওয়ার্ল্ড', নারী অত্যাচার রুখতে আর কী বার্তা রাষ্ট্রসংঘের

 নিজস্ব প্রতিবেদন: যত বেশি মারা হয়, ওরা যেন তত বেশি মাথা তুলে দাঁড়ায়। মহিলা হয়ে এত কথা কীসের। রাস্তাঘাটে, কর্মক্ষেত্রে এ কথা শোনে আধুনিক সমাজের মেয়েরাও। করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্বজুড়ে মহিলাদের উপর হিংসার ঘটনা আরও বেড়েছে। বিশেষ করে গার্হস্থ্য হিংসা। সারা বিশ্বে নারী এবং শিশুকন্যাদের উপর অত্যাচারের বেশিরভাগটাই চোখের আড়ালে। সামাজিক লজ্জা, হেনস্থা সবমিলে আধুনিক সমাজ এখনও নারী অত্যাচার ইস্যুতে নীরব। আজ ২৫ নভেম্বর। 'ইন্টারন্যাশনাল ডে ফর এলিমিনেশন অফ ভায়োলেন্স অ্যাগেইনস্ট উওম্যান'। মহিলাদের উপর অত্যাচার প্রতিরোধে সচেতনতা তৈরি করতে বিশেষ এই দিনটি বেছে নিয়েছে রাষ্ট্রসংঘ।

একটা নির্দিষ্ট দিন কেন, এই প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রসংঘের বক্তব্য, অত্যাচারের ঘটনা প্রকাশ্যে আনতে প্রয়োজন আরও জনসংযোগের। চাই মানবিক বোধ। এ বছরের বিশেষ দিনে রাষ্ট্রসংঘ বলছে,'অরেঞ্জ দ্য ওয়ার্ল্ড-ফান্ড, রেসপন্ড, প্রিভেন্ট, কালেক্ট'। এ বছরে বিশেষ দিনের থিম রং কমলা। আজ থেকে আগামী ১৬ দিন অর্থাত্ ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত নারী অত্যাচার প্রতিরোধে সচেতনতার প্রচার চলবে বিশ্বের নানা প্রান্তে।

বিশ্বজোড়া পাচারচক্রের একাত্তর শতাংশই মহিলা। এঁদের প্রতি ৪ জনে ৩ জন শারীরিক হেনস্থার শিকার। ভারতে কী অবস্থা মহিলাদের?  ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর ২০১৯ সালের রিপোর্ট কী বলছে?

মহিলাদের বিরুদ্ধে নথিভুক্ত অপরাধ ৪,০৫,৮৬১। মহিলাদের উপর অত্যাচারের ঘটনায় শীর্ষে উত্তরপ্রদেশ। সে রাজ্যে মহিলাদের বিরুদ্ধে নথিভুক্ত অপরাধ ৫৯,৮৫৩। শিশুকন্যাদের উপর অত্যাচারের ঘটনায় অর্থাত্ পকসো আইনের নিরিখে সর্বোচ্চ স্থান যোগী রাজ্যের। এরপরই মহারাষ্ট্র ও মধ্যপ্রদেশ। 

২০১৮ সাল থেকে মহিলাদের উপর অত্যাচারের ঘটনা বেড়েছে সাত দশমিক তিন শতাংশ। ২০১৯ সালে দৈনিক ৮৭টি ধর্ষণের ঘটনা নথিভুক্ত এই দেশেই। মহিলাদের উপর অপরাধের সর্বোচ্চ হারে প্রথম অসম। উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্যে প্রতি লাখ জনসংখ্যায় অপরাধ ১১৭.৮%। দেশে স্বামী ও আত্মীয়দের দ্বারা হিংসার শিকার ৩০.৯%। অপহৃত ১৭.৯%।  ক্রাইম ব্যুরোর ৩৬টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত এলাকা থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছে। রয়েছে ৫৩টি শহরের তথ্যও। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ সাম্প্রতিক তথ্য না দেওয়ায় ২০১৮ সালের তথ্য ব্যবহার করেছে তারা। 

তৃতীয় বিশ্বের দেশে প্রতিনিয়ত ঘটে চলা নানা অত্যাচার আজও পরিসংখ্যানের বাইরে। তাই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। বদল ঘটাতে হবে মানসিকতার। নারী নয়, মানুষ হিসেবে বড় হোক বাড়ির শিশুকন্যা। তবেই তো সমানাধিকার। গড়ে উঠবে প্রতিরোধ। মুক্তির আলো দেখবে এ পৃথিবীও।

.