ব্যাঙ্ক হিসাবে পাঁচ বছর পূর্ণ করার পথে বন্ধন; লেনদেনের ডিজিটাল সরলীকরণে উদ্যোগী প্রতিষ্ঠান
বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী পাঁচ বছরে তাদের মূল লক্ষ্য হবে সম্পদের বিন্যাস, সংগ্রহ ক্ষমতা ও গ্রাহক ক্ষমতা বাড়ানো।
নিজস্ব প্রতিবেদন: একটি বিশ্বজনীন ব্যাঙ্ক হিসাবে পাঁচ বছর পূর্ণ করার পথে বন্ধন ব্যাঙ্ক তার ভবিষ্যৎ লক্ষ্য নির্ধারণে প্রয়াসী হয়েছে এবং ব্যাঙ্কের অগ্রগতির লক্ষ্যপূরণের রোডম্যাপ হিসেবে নেওয়া হয়েছে ভিশন ২০২৫ কার্যক্রম। ব্যাঙ্কের উদ্দেশ্য এমন একটি সাশ্রয়ী আর্থিক প্রতিষ্ঠান হয়ে ওঠা, যাদের কাছে সার্বিক ও দায়িত্বশীল পদ্ধতিতে আর্থিক লেনদেনের সরল, কার্যকর এবং অভিনব সমাধান থাকবে।
২০১৯-২০২০ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে ব্যাঙ্ক বলেছে যে তাদের লক্ষ্য, কর্মদক্ষতার উন্নতি ঘটিয়ে নিজেদের তৈরি করা দৃষ্টান্তকে ছাপিয়ে যাওয়া। উন্নত প্রযুক্তির ডিজিটাল পদ্ধতি এবং গ্রাহকের সঙ্গে হাই-টাচ সম্পর্ক গড়ে উন্নতির এই শিখর ছুঁতে চায় তারা।
বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী পাঁচ বছরে তাদের মূল লক্ষ্য হবে সম্পদের বিন্যাস, সংগ্রহ ক্ষমতা ও গ্রাহক ক্ষমতা বাড়ানো। পাশাপাশি নতুন প্রতিভা নিয়োগ করা হবে। মনোনিবেশ করা হবে ব্যাঙ্কের ইন-হাউস প্রযুক্তির বিকাশ, বিশ্লেষণ এবং ডিজিটাল সক্ষমতাবৃদ্ধি এবং CASA (current account savings account)-এর একীকরণে।
শেয়ারহোল্ডারদের কাছে তাঁর চিঠিতে বন্ধন ব্যাঙ্কের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার চন্দ্রশেখর ঘোষ জানিয়েছেন, পরবর্তী কয়েক বছরে ব্যাঙ্কের লক্ষ্য হওয়া উচিত, পরিষেবা নেটওয়ার্কের প্রসারণ, ঋণদানের ক্ষেত্রে বৈচিত্র্য ও নির্ভরযোগ্য ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়োগ করা।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক গড়ে তুলতেও ব্যাঙ্ক তার ফোকাস বাড়িয়ে তুলবে, যা, দেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির বৃহত্তম চালিকাশক্তি। ব্যাঙ্ক বার্ষিক প্রতিবেদনে বলেছে, SME বিভাগটি দেশের ব্যবসায়িক ক্ষেত্রের ক্রমবর্ধমান চাহিদাপূরণ সহ ব্যাঙ্কের উন্নতিতে সর্বাধিক অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বন্ধন ব্যাঙ্কে এখন সুরক্ষিত এবং অনিরাপদ ঋণের মিশ্রণ রয়েছে। এটির মোট ব্যবসা ভারতীয় মুদ্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। ২০১৯-২০১০ অর্থবর্ষে গ্রাহকসংখ্যা ২ কোটির উপরে। এবং ২০২০ সালের ৩১ শে মার্চ পর্যন্ত ব্যবসার পরিমাণ ছিল ১.২৮ লক্ষ কোটি টাকা।
করোনা পরবর্তী সময়ে আরবান-রুরাল সমীকরণ পাল্টেছে। অনেক শ্রমিক জীবিকা নির্বাহের কেন্দ্র হিসেবে শহরে চলে এসেছিলেন, তারা ফিরে গিয়েছেন এবং বর্তমানে স্থানীয়ভাবে উপার্জনের চেষ্টা চালাচ্ছেন। এই আরবান ও রুরাল এলাকায় বন্ধন ব্যাঙ্কের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি রয়েছে, যা সহজে স্থানীয় মানুষের চাহিদা পূরণে সক্ষম হবে।
বন্ধন ব্যাঙ্ক ব্যাঙ্কিংয়ের লক্ষ্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, ব্যাঙ্কিং একটি অভ্যাস এবং সেই অভ্যাসটিকে ভারতের প্রত্যন্ত কোণের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়াই লক্ষ্য। আমরা যে মহামারীটি প্রত্যক্ষ করছি তার প্রভাবের প্রেক্ষিতে এটি এখন ব্যাঙ্কের একটি বড় দায়িত্বও।
আরও পড়ুন: করোনা বিপর্যয়ের মধ্যেও পরিষেবা অটুট রেখে ২ কোটি পেরল বন্ধন ব্যাঙ্কের গ্রাহক সংখ্যা
বন্ধন ব্যাঙ্ক তার ব্যাঙ্কিং পরিষেবাগুলির মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক পার্থক্য আনছে। বিভিন্ন অঞ্চলে দারিদ্র্য বিমোচন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং আর্থিক সাক্ষরতা কর্মসূচি নিয়ে চলেছে। বন্ধন ব্যাঙ্ক, এই সমস্ত উন্নয়নমূলক কর্মসূচীগুলি বন্ধন কোন্নগরের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করে থাকে। ২০২০ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ব্যাঙ্ক ভারতের ১২,৯০০ গ্রাম এবং ১২টি রাজ্যে ২৫ লক্ষেরও বেশি মানুষকে সুবিধা পৌঁছে দিয়েছে। ব্যাঙ্কের সদর দফতর কলকাতায় হওয়ায় ব্যাঙ্কটি পশ্চিমবঙ্গে আরও নিবিড়ভাবে পরিষেবা প্রদান করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।