হেমন্তের মোকাবিলার টিট বিটস

পুজো চলে যেতেই শিরশিরে ভাব। মন ফুরফুরে থাকলেও শুষ্ক ত্বকের সমস্যায় নাজেহাল সকলে। সবসময়ই যেন একটা টান টান ভাব। কী করলে কাটিয়ে ওঠা যাবে এই সমস্যা? আসন্ন শীতের সঙ্গে লড়তেই বা কীভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে? আমাদের প্রতিনিধি প্রমা মিত্রকে জানালেন বিউটিশিয়ান মৌসুমি মিত্র।

Updated By: Nov 6, 2012, 12:01 PM IST

পুজো চলে যেতেই শিরশিরে ভাব। মন ফুরফুরে থাকলেও শুষ্ক ত্বকের সমস্যায় নাজেহাল সকলে। সবসময়ই যেন একটা টান টান ভাব। কী করলে কাটিয়ে ওঠা যাবে এই সমস্যা? আসন্ন শীতের সঙ্গে লড়তেই বা কীভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে? আমাদের প্রতিনিধি প্রমা মিত্রকে জানালেন বিউটিশিয়ান মৌসুমি মিত্র।
এখন সবারই ত্বক একটু শুষ্ক হয়ে যাচ্ছে। হঠাত করে শুষ্ক ত্বকের সমস্যার কীভাবে মোকাবিলা করা যায়?
শুষ্ক ত্বকের মোকাবিলা করার একটাই উপায়। সেটা হল ত্বক খুব ভাল ভাবে ময়শ্চারাইজ করা। সকালে ঘুম থেকে উঠে ক্রিম বেসড কোনও ফেস ওয়াশ দিয়ে মুখটা পরিষ্কার করে ময়শ্চারাইজার লাগানো উচিত। তবে বাড়ি ফিরে রাতে কিন্তু কখনই আর ফেস ওয়াশ ব্যবহার করা উচিত নয়। তখন ক্লিনজিং মিল্ক দিয়ে মুখটা পরিষ্কার করে ময়শ্চারাইজ করতে হবে। এছাড়া বাইরে বেরনোর ২০ মিনিট আগে সান স্ক্রিন আর রাতে শোওয়ার আগে নাইট ক্রিম লাগিয়ে অবশ্যই শোবেন। এই সময় স্ক্রাব না করাই ভাল। সেটা ত্বককে আরও বেশি শুষ্ক করে দেবে। যদি প্রয়োজন হয় তাহলে ১৫ দিন অন্তর ঘরোয়া পদ্ধতিতে স্ক্রাব করাই ভাল। যারা অফিসে এসিতে থাকেন তাদের কিন্তু অবশ্যই বার বার করে মুখে ময়শ্চারাইজার লাগানো উচিত কারণ এসিতে থাকলে ত্বক অনেক বেশি শুষ্ক হয়ে যায়। আর একটা জিনিস খুব গুরুত্বপূর্ণ। বাড়ি ফিরে সবসময় মেক আপ তুলে খুব ভাল করে স্কিন নারিশ করে তবেই ঘুমোতে যাওয়া উচিত। মেক আপ কিন্তু ত্বকের খুব ক্ষতি করে।
এতো গেল মুখের কথা। কিন্তু এই সময় সারা শরীরেই একটা রুক্ষ ভাব আসে। গোটা শরীরের যত্ন নিতে কী করা উচিত?

মুখের মতোই শরীরকেও ভাল ভাবে ময়শ্চারাইজ করা খুব জরুরি। এই সময় সাবান ব্যবহার না করে মাইল্ড কোন শাওয়ার জেল দিয়ে, লুফা দিয়ে স্নান করলে শরীর কম রুক্ষ হবে। স্নানের ৩ মিনিটের মধ্যেই যদি ভেজা শরীরে ময়শ্চারাইজার লাগানো হয় তাহলে সারাদিন ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকবে। স্নানের জলে কয়েক ফোঁটা এসেন্সিয়াল অয়েল মিশিয়ে স্নান করলে শরীরে একটা তাজা ভাবও থাকবে, আর্দ্রতাও বজায় থাকবে। আর গ্লিসারিন তো সারা বছরই ত্বকের জন্য খুব ভাল। তবে শরীর পরিষ্কার রাখাটাও খুব প্রয়োজনীয়। সপ্তাহে একদিন দই, মসুর ডাল বাটা, মধু মিশিয়ে ভাল করে সারা শরীর পরিষ্কার করা গেলে শরীর অনেক কম রুক্ষ হবে। আর যেটা দরকার সেটা হল খুব ভাল করে স্নান করা। আমাদের শরীরে কিছু নেগেটিভ আয়ন থাকে যেগুলো আদপে শরীরের জন্য ভাল। শাওয়ারের তলায় দাঁড়িয়ে একটু সময় নিয়ে ভাল করে স্নান করলে কিন্তু শরীর ফ্রেশ থাকে।
এই সময় হঠাত পা ফাটার একটা সমস্যা দেখা যায়। ফাটা পায়ের যত্ন কী করে নিতে হবে বা কী করলে পা ফাটবে না?
এখানেও প্রয়োজন পরিষ্কার রাখা। সারা শরীরের মধ্যে পা সবথেকে বেশি নোংরা হয়। তাই রোজ রাতে বাড়ি ফিরে হালকা গরম জলে কয়েক ফোঁটা মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে পিউমিক স্টোন দিয়ে পা পরিষ্কার করে ভাল ফুট ক্রিম লাগিয়ে শোয়া উচিত। তাহলেই পা ফাটবে না। আর যাদের ইতিমধ্যেই পা ফেটে গেছে তারা একটু সর্ষের তেলের মধ্যে নুন দিয়ে ফাটা জায়গাটা রোজ ঘষতে থাকলে আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে। আর যদি খুব পা ফাটার সমস্যা থাকে তাহলে অবশ্যই ১৫ দিন অন্তর পার্লারে গিয়ে ফুট স্পা বা ক্রিস্টাল পেডিকিওর করিয়ে নেওয়া উচিত।
রুক্ষ এবং কালো গোড়ালি ও কনুইয়ের সমস্যায় ভোগেন অনেকে। সেটা অনেক সময় খুবই যন্ত্রণাদায়ক হয়ে যায়। এক্ষেত্রে কী করা উচিত?

এটা একদিনে হয় না। দীর্ঘকালের অযত্নে হয়। একটা পাতিলেবু অর্ধেক করে কেটে একটু বেশি করে নুন, চিনি দিয়ে ততক্ষণ ঘষতে হবে যতক্ষণ না নুন, চিনি পুরোপুরি গলে যায়। তারপর কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। এটা কিন্তু নিয়মিত করতে হবে। রোজ করতে থাকলে আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যায়।

ঠিক কী ধরণের খাওয়া দাওয়া করা এই সময় দরকার?

ঠিকঠাক খাওয়া দাওয়া করাটাই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। প্রচুর শাক, সব্জি, ফলমূল আর জল খাওয়া উচিত। প্রতিদিন একটু হালকা ব্যায়াম করা ভীষণ দরকার। মর্নিং ওয়াক করতে পারলে ভাল হয়। আর প্রয়োজন নিজেকে ভাল রাখা। টেনশন কম করে পজিটিভ থাকাটা সবথেকে বেশি জরুরি। কারণ স্বাস্থ্য এবং মন ভাল না থাকলে হাজার চর্চা করলেও কোনওদিন চেহারা সুন্দর লাগবে না।

.