চেনা পথের বাঁকে ভ্যালি অব ফ্লাওয়ার্স

যোশিমঠ হয়ে বদ্রীনাথ। বাঙালির চেনা রাস্তা। দীঘা, পুরী, দার্জিলিঙের পরই প্রথম পছন্দ হরিদ্বার।

Updated By: Sep 27, 2012, 11:56 PM IST

-চিত্ররূপ চক্রবর্তী
যোশিমঠ হয়ে বদ্রীনাথ। বাঙালির চেনা রাস্তা। দীঘা, পুরী, দার্জিলিঙের পরই প্রথম পছন্দ হরিদ্বার। সেখান থেকে সকালের বাসে চেপে বসলে দিন শেষে যোশিমঠ। নাইট স্টে করে পরদিন দুপুরের আগেই বদ্রীনাথ। কিন্তু এবার যোশিমঠ থেকেই যদি পথ অন্য দিকে বাঁক নেয় তাতে ক্ষতি কী? জিপে আধ ঘণ্টার দূরত্বে গোবিন্দঘাট। এখান থেকে বদ্রীনাথ ও ভ্যালি অব ফ্লাওয়ার্সের পথ হয়ে যাচ্ছে আলদা। একদিকে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে থাকা বদ্রীনাথ জাতীয় সড়ক। আর নদী পেরিয়ে পায়ে চলা পথে ঘাংরিয়া। শিখ-তীর্থ হেমকুণ্ড সাহিবের পথও ঘাংরিয়া থেকে পৃথক হয়েছে। তীর্থ পথের শুরু বলে জমজমাট গোবিন্দঘাট। নানা ধরনের হোটেল, রেস্টুরেন্ট। গোটা পথে সব কিছুরই ব্যবস্থা মিলবে। পিঠের ছোট্ট ন্যাপ স্যাকে গরম জামা আর প্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়া কিছুই নেওয়ার নেই। বাকি মালপত্র গোবিন্দঘাটের গুরুদ্বারার ক্লোক রুমে পরম নিশ্চিন্তে রাখা যায়। তবে হাঁটা শুরুর আগে প্লাস্টিকের বর্ষাতি আর বাঁশের লাঠি সঙ্গে নিতে ভুললে চলবে না। লোহার ব্রিজ পেরিয়ে আস্তে আস্তে চড়াই ভাঙা শুরু। তবে পথ বেশ চওড়া। প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে দেখতে চললে কষ্ট মালুম হয় না।
পথের ধারে কিছু দূরে দূরে চা ও খাবারের দোকান। সাময়িক বিশ্রাম। একটু গলা ভিজিয়ে এনার্জি সঞ্চয়। ফের চলার শুরু। কখন যে ১৮ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে যাবে বোঝাই যায় না। দূর থেকে দেখা যায় ছোট্ট জনপদ। যত কাছে যাওয়া যায় ততই স্পষ্ট হতে থাকে ঘাংরিয়া। টুরিস্ট লজ, হোটেল, ধর্মশালায় জমজমাট ঘাংরিয়া। পরদিন সকাল সকাল বেরিয়ে পড়া। গায়ে গরম জামা, উইন্ডচিটার। হাতে লাঠি। সঙ্গে জলের বোতল। চেকপোস্ট পেরিয়ে ক্রমশ ওপরের দিকে উঠে যাওয়া। পাহাড়ের গা বেয়ে উপত্যকার দিকে এগিয়ে যাওয়া। ছোট ছোট ঝরনা পেরিয়ে ফুলের উপত্যকায় হারিয়ে যাওয়া। জুলাই-অগাস্ট মাসে রঙ বেরঙের ফুলে ভরে থাকে ভ্যালি অব ফ্লাওয়ার্স। রুক্ষ পাহাড়ের মাঝে ফুলের ডালি সাজিয়ে বসে আছে প্রকৃতি। পথভোলা পথিকের অপেক্ষায়।
ফুলের নন্দনকানে কিছুটা সময় কাটিয়ে ঘাংরিয়ায় ফিরে চলে আসা যায় গোবিন্দঘাটে। ইচ্ছে থাকলে সেদিনটা ঘাংরিয়ায় থেকে পরদিন ঘুরে আসা যায় হেমকুণ্ড সাহিব। সেখানে পাথরের খাঁজে খাঁজে ফুটে আছে অজস্র ব্রক্ষ্মকমল।
যাওয়ার পথ: হাওড়া থেকে দুন, উপাসনা বা কুম্ভ এক্সপ্রেসে হরিদ্বার। পরদিন বাস বা ভাড়া গাড়িতে যোশিমঠ। রাত কাটিয়ে সকালে আধ ঘণ্টার দূরত্বে গোবিন্দঘাট। এখান থেকে হাঁটা শুরু।
প্রথম দিন: গোবিন্দঘাট থেকে ঘাংরিয়া ১-৩ কিলোমিটার। রাস্তায় চড়াই- উতরাই সামান্য। দ্বিতীয় দিন: ঘাংরিয়া থেকে ভ্যালি অব ফ্লাওয়ার্স ৩ কিলোমিটার।
থাকার হদিশ: যোশিমঠ, গোবিন্দঘাট, ঘাংরিয়ায় গাড়োয়াল মণ্ডল বিকাশ নিগমের টুরিস্ট লজ। দ্বিশয্যার ভাড়া ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা। ডর্মিটরিতেও থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। আছে নানা ধরনের হোটেল ও ধর্মশালা।

.