‘শুধু কথা শোনা নয়, আমাদের ভাবাও উচিত’, নাসিরুদ্দিনের পাশে আশুতোষ রাণা
নাসিরুদ্দিনের এই মন্তব্যের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়। ৬৮ বছর বয়সী প্রবীণ অভিনেতার বিরুদ্ধে তোপ দাগতে শুরু করে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি
নিজস্ব প্রতিবেদন: পরিচালক মধুর ভান্ডারকরের পর নাসিরুদ্দিন শাহের পাশে দাঁড়ালেন অভিনেতা ও কবি আশুতোষ রাণা। সোমবার আশুতোষ রাণা বলেন, “প্রত্যেক মানুষেরই তার বন্ধু এবং পরিজনের কাছে নির্ভয়ে মতামত রাখার অধিকার আছে। যদি আমাদের ভাই বা বন্ধুরা কিছু বলে থাকে, তাদের কথা শুধু শোনা নয়, চিন্তাভাবনাও করা উচিত।” এর আগে অসহিষ্ণুতার প্রশ্নে আমির খান বিতর্কের মুখে পড়লে তাঁর পাশে থাকতে দেখা গিয়েছে আশুতোষ রাণাকে। বুলন্দশহরে গোরক্ষক তাণ্ডবের ঘটনায় মন্তব্য করে তুমুল বিতর্কের মুখে পড়েন অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ।
কারওয়ান-ই-মহব্বত নামে একটি অলাভজনক সংস্থাকে সাক্ষাত্কার দিতে গিয়ে নাসিরুদ্দিন শাহ বলেন, দেশের বেশ কয়েকটি জায়গায় পুলিসের মৃত্যুর চেয়ে গরুর মৃত্যুকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তাঁর আরও অভিযোগ, আইনকে হাতে নিয়ে অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে অভিযুক্তরা। তাঁর সন্তানদের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, যদি উন্মত্ত জনতা হিন্দু-মুসলিম নিয়ে প্রশ্ন করলে কী উত্তর দেবে তারা।
আরও পড়ুন- নবীনের পর মমতা, ফেডেরাল ফ্রন্ট গড়তে ‘দুয়ারে-দুয়ারে’ কেসিআর
নাসিরুদ্দিনের এই মন্তব্যের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়। ৬৮ বছর বয়সী প্রবীণ অভিনেতার বিরুদ্ধে তোপ দাগতে শুরু করে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি। চরমে ওঠে রাজনৈতিক তর্জাও। পাকিস্তানে পাঠানোর জন্য বিমানের টিকিট কেটে দেয় নবনির্মাণ সেনা। উত্তর প্রদেশে বিজেপি নেতা মহেন্দ্র নাথ পাণ্ডে ‘সারফরোশ’ সিনেমা উদাহরণ টেনে বলেন, “নাসিরুদ্দিন শাহ অনবদ্য অভিনেতা। সারফরস সিনেমায় যেমন পাকিস্তানের চর হিসাবে তাঁকে দেখা গিয়েছিল, এখন ধীরে ধীরে সেই চরিত্রই হয়ে উঠছেন।”
আরও পড়ুন- ভারতে থাকতে অসুবিধা হলে, পাকিস্তানে চলে যাওয়া উচিত নাসিরুদ্দিনের, তোপ শিবসেনার
বলিউড এখনও সে ভাবে মুখ না খুললেও নাসিরুদ্দিনের সমর্থনে পরিচালক মধুর ভান্ডারকর বলেন, “প্রত্যেক মানুষের মতামত জাননোর অধিকার রয়েছে। গণতান্ত্রিক দেশ। আমার মনে হয় না এখানে কোনও ভয়ের কারণ থাকতে পারে। এ দেশে প্রত্যেক মানুষের সমান অধিকার রয়েছে।” তবে, অভিনেতা তথা ‘সেন্ট্রাল বোর্ড অব ফিল্ম সার্টিফিকেশন’ (সিবিএফসি) চেয়ারম্যান অনুপম খেরের গলায় ভিন্ন সুর শোনা গিয়েছে। নাসিরুদ্দিনকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে অনুপম বলেন, ''সেনা ও বায়ুসেনা প্রধানকে গাল দেওয়া, জওয়ানদের লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ার স্বাধীনতা রয়েছে এদেশে। আর কত স্বাধীনতা চাই? উনি যা অনুভব করেছেন, সেটাই বলতেই পারেন। তবে তা সত্য নয়''।