সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টের ভিত্তিতে কি কাউকে জেলে পোরা যায়? আজ বিতর্কিত ৬৬এ ধারা সংক্রান্ত রায় সুপ্রিম কোর্টে
অম্বিকেশ মহাপাত্রকে নিশ্চয় মনে আছে? ফেসবুকে পোস্ট করা নিছক একটি নিরীহ কার্টুন শেয়ার করার 'অপরাধে' যাঁকে সহ্য করতে হয়েছিল পুলিসি নির্যাতন? মনে আছে মহারাষ্ট্রের সেই দই কিশোরীকে? সোশ্যাল মিডিয়াতে বাল থাকরের সমালোচনা করার জন্য যাদের বিরুদ্ধে রে রে করে তেড়ে এসেছিল রাষ্ট্রযন্ত্র? আর সলমন জলমন? ফেসবুকে নিজের রাজনৈতিক আদর্শের কথা স্পষ্ট ভাবে প্রকাশ করার জন্য যাঁকে খাটতে হয়েছিল জেল? এই রকম উধাহরণ ভুরিভুরি। বহুবার অভিযোগ উঠেছে তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত ভারতীয় দণ্ডবিধির ৬৬এ ধারর অপপ্রয়োগ করছে পুলিস প্রশাসন। অভিযোগ উঠেছে, এই ধারার প্রয়োগ করে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে মত প্রকাশের স্বাধীনতা। আজ এই বিতর্কিত ৬৬এ ধারার সাংবিধানিক যৌক্তিকতা নিয়েই রায় দেবে সুপ্রিম কোর্ট।
ওয়েব ডেস্ক: অম্বিকেশ মহাপাত্রকে নিশ্চয় মনে আছে? ফেসবুকে পোস্ট করা নিছক একটি নিরীহ কার্টুন শেয়ার করার 'অপরাধে' যাঁকে সহ্য করতে হয়েছিল পুলিসি নির্যাতন? মনে আছে মহারাষ্ট্রের সেই দই কিশোরীকে? সোশ্যাল মিডিয়াতে বাল থাকরের সমালোচনা করার জন্য যাদের বিরুদ্ধে রে রে করে তেড়ে এসেছিল রাষ্ট্রযন্ত্র? আর সলমন জলমন? ফেসবুকে নিজের রাজনৈতিক আদর্শের কথা স্পষ্ট ভাবে প্রকাশ করার জন্য যাঁকে খাটতে হয়েছিল জেল? এই রকম উধাহরণ ভুরিভুরি। বহুবার অভিযোগ উঠেছে তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত ভারতীয় দণ্ডবিধির ৬৬এ ধারর অপপ্রয়োগ করছে পুলিস প্রশাসন। অভিযোগ উঠেছে, এই ধারার প্রয়োগ করে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে মত প্রকাশের স্বাধীনতা। আজ এই বিতর্কিত ৬৬এ ধারার সাংবিধানিক যৌক্তিকতা নিয়েই রায় দেবে সুপ্রিম কোর্ট।
৬৬এ ধারা অনুযায়ী, ''অত্যন্ত অশোভন বা আপত্তিজনক'' কোনও বক্তব্য বিভিন্ন যোগাযোগের মাধ্যম, যেমন সোশ্যাল মিডিয়া, টেক্সট মেসেজ বা ভিডিওর মাধ্যমে পাঠালে তা প্রচার করলে তা শাস্তি যোগ্য অপরাধ হিসাবে গণ্য করা হয়।
সরকারের দাবি শুধুমাত্র কিছু 'অপব্যবহার'-এর অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের ৬৬এ ধারাটি অবলুপ্ত করা অনুচিত। এই বিষইয়ে সিদ্ধন্ত গ্রহণের গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি যে চেলামেশ্বর ও বিচারপতি আর এফ নরিমানের একটি ডিভিশন বেঞ্চ গঠিত হয়।
এই মামলার শুনানির সময় আদালত জানায় 'অত্যন্ত আপত্তিকর', 'সমস্যাজনক' এই শব্দগুলি ভীষণভাবেই আপেক্ষিক। এই আইনে স্পষ্ট করে কোনটাকে সমস্যাজনক ক্যাটাগরিতে ফেলা হবে, কোনটাকে নয়, এবং কেন, সেই বিষয়ে স্পষ্ট বা নির্দিষ্ট করে কিছুই বলা নেই।
যদিও, সরকারের দাবি এই আইন বাক স্বাধীনতা বা মুক্ত চিন্তা প্রকাশকে দমন করে না। কেন্দ্র সরকারের মতে সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে এই আইনের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।
এই আইনের বিরোধীতা করে একাধিক পিটিশন শীর্ষ আদালতে জমা পড়েছে। প্রত্যেকটি পিটিশনেই অভিযোগ, এই আইনের অপব্যবহার করে বাক স্বাধীনতা ও মর প্রকাশের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে রাষ্ট্রযন্ত্র।
মুম্বইতে বাল থাকরের বিরুদ্ধে ফেসবুকে 'আপত্তিকর মন্তব্য' করার 'অপরাধে' পুলিস দুই কিশোরীকে গ্রেফতার করার পর এই আইনের বিরুদ্ধে প্রথম পিটিশনটি দায়ের করা হয়। পিটিশনটি দেন শ্রেয়া সিঙ্ঘল নামের এক আইনের পড়ুয়া।
এই আইনেই গ্রেফতার হতে হয়েছে কার্টুনিস্ট অসীম ত্রিবেদীকে, গ্রেফতার হয়েছেন এয়ার ইন্ডিয়ার দুই কেবিন ক্রু। সোশ্যাল মিডিয়াতে যথাক্রমে সাংসদ ও প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য করার 'অপরাধে' গ্রেফতার হন তাঁরা।
২০১৩ সালে ২৬ মে অ্যাপেক্স কোর্ট নির্দেশ দেয় আইজি বা ডিসিপি-এর অনুমতি ব্যতীত পুলিস সোশ্যাল মিডিয়াতে কোনও পোস্ট করার জন্য ইচ্ছামত কাউকে গ্রেফতার করতে পারবে না।
দেশ জুড়ে পুলিস প্রশাসন এই আইনের অপব্যবহার করছে। এই অভিযোগ উঠেছে বহুবার। রাষ্ট্রযন্ত্র ৬৬এ মাধ্যমে টুঁটে চিপে ধরতে চাইছে মত প্রকাশের স্বাধীনতায়, এই অভিযোগও নতুন নয়। দেশ জুড়ে বারবার এই বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভ হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করলেই যত্রতত্র ইচ্ছামত গ্রেফতারির বিরুদ্ধে।
ফেসবুকে পোস্টের ভিত্তিতেই কি ইচ্ছামত গ্রেফতার করা যায় কাউকে? আজ হয়ত এই প্রশ্নের উত্তর মিলবে।