এনডিএ জমানার টেলিকম কেলেঙ্কারির তদন্তে সিবিআই
পাতিয়ালা হাউসের বিশেষ সিবিআই আদালত ২০০৮ সালের টুজি কেলেঙ্কারির দায় থেকে তত্কালীন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমকে নিষ্কৃতি দেওয়ার অনেকটাই স্বস্তিতে কংগ্রেস নেতৃত্ব। এই অনুকূল পরিস্থিতি কাজে লাগিয়ে এবার পূর্বতন এনডিএ জমানার স্পেকট্রাম বণ্টন দুর্নীতির তদন্তে জোর দিতে চাইছে প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন সিবিআই।
পাতিয়ালা হাউসের বিশেষ সিবিআই আদালত ২০০৮ সালের টুজি কেলেঙ্কারির দায় থেকে তত্কালীন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমকে নিষ্কৃতি দেওয়ার অনেকটাই স্বস্তিতে কংগ্রেস নেতৃত্ব। এই অনুকূল পরিস্থিতি কাজে লাগিয়ে এবার পূর্বতন এনডিএ জমানার স্পেকট্রাম বণ্টন দুর্নীতির তদন্তে জোর দিতে চাইছে প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন সিবিআই। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় টেলিযোগাযোগ দফতর (ডট)-এর কাছে প্রয়াত প্রাক্তন টেলিকমমন্ত্রী প্রমোদ মহাজনের আমলের `স্পেকট্রাম ডিল` সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য তলব করেছে সিবিআই-এর বিশেষ তদন্তকারী টিম।
গত বছরই বিচারপতি জি এস সিংভি এবং বিচারপতি অশোককুমার গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে গঠিত সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ ২০০১ সালে বাজপেয়ী সরকারের আমল থেকে ইউনিফায়েড অ্যাকসেস লাইসেন্স বণ্টন সংক্রান্ত সমস্ত প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছিল সিবিআইকে। ফলে এক্ষেত্রে বিজেপি নেতৃত্বের পক্ষে মনমোহন সিং সরকারের বিরুদ্ধে `প্রতিহিংসার রাজনীতি`র অভিযোগ তোলা সম্ভব নয়। স্পেকট্রাম তদন্তের দায়িত্বে থাকা সিবিআই-এর ডেপুটি সুপার আর এ যাদব `ডট`কে চিঠি পাঠিয়ে প্রমোদ মহগাজনের জমানায় কী কী শর্তের ভিত্তিতে ভারতী টেলিনেট এবং এয়ারসেল স্পেকট্রাম লাইসেন্স পেয়েছিল, সে বিষয়ে যাবতীয় নথিপত্র চেয়ে পাঠিয়েছেন। সিবিআই-এর নিশানায় রয়েছে এয়ারটেল, স্টারলিং সেলুলার (বর্তমানে ভোডাফোন-এসার মোবাইল সার্ভিস), বিপিএল এবং আইডিয়া`র মতো টেলিকম কোম্পানিগুলির নামও।
এই স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারির সূত্র ধরে ইতিমধ্যেই প্রাক্তন টেলিকম সচিব শ্যামল ঘোষ এবং ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (ভ্যালু অ্যাডেড ট্যাক্স) জে আর গুপ্তার বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে সিবিআই। নিয়ম বহির্ভূত ভাবে অতিরিক্ত স্পেকট্রাম পাওয়ার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে দু`টি টেলিকম কোম্পানির নামেও। সিবিআই-এর অভিযোগ, ২০০১-থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে টেলি যোগাযোগ নিয়ামক সংস্থা `ট্রাই`-নির্দেশিত বিধি ভেঙে স্পেকট্রাম বণ্টনের ফলে ৫০৮ কোটি টাকা রাজস্ব হারিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
অন্য দিকে এদিন টুজি স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারির জেরে টেলিকম কোম্পানি ইউনিনর-এর লাইসেন্স বাতিল নিয়ে কেন্দ্রীয় টেলিকমমন্ত্রী কপিল সিব্বলের সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন নরওয়ের মন্ত্রী রিগমোর অ্যাসরাড। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বাতিল হওয়া ১২২টি স্পেকট্রাম লাইসেন্সের মধ্যে ভারতীয় সংস্থা `ইউনিটেক ওয়্যারলেস` এবং নরওয়ের টেলি পরিষেবা সংস্থা `টেলিনর`-এর যৌথ উদ্যোগে গঠিত কোম্পানি ইউনিনর-এর ২২টি লাইসেন্স রয়েছে। ২০০৮ সালে ইউনিটেক ওয়্যারলেস` টুজি লাইসেন্স পাওয়ার পর প্রায় ১৪,০০০ কোটি টাকা ব্যয় করে এই সংস্থার শেয়ার কিনেছিল টেলিনর। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে লাইসেন্স বাতিলের প্রেক্ষিতে নরওয়ের এই সংস্থাটি ভারত থেকে ব্যবসা গোটাতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে। ফলে ছাঁটাইয়ের আশঙ্কায় ভুগছেন ইউনিনর-এর কয়েক হাজার কর্মী।