অসুস্থ শরীরেও অঙ্ক পরীক্ষা দিতে বাধ্য করে স্কুল, বমি করতে করতে মৃত্যু ছাত্রীর!
আরাধ্যার শরীর খারাপ লাগছিল, রীতিমতো ঘামছিল সে। এমনকি একটা সময়, আরাধ্যা আর নিজে হাঁটতেও পারছিল না। মাথা টলছিল তার। চোখ খুলে রাখতে পারছিল না সে।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: শরীর ভালো ছিল না। অসুস্থ ছিল সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীটি। বাড়ি ফিরে আসতে চেয়েছিল সে। কিন্তু বাধা দেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ। জোর করে ওই ছাত্রীকে স্কুলে বসে থাকতে বাধ্য করে। এমনকি অসুস্থ ওই ছাত্রীকে অঙ্ক পরীক্ষা দিতেও বাধ্য করা হয়। বাড়ি ফিরে যাওয়ার অনুরোধ খারিজ করে দিয়ে অসুস্থ শরীরেই স্কুলে বসে থেকে অঙ্ক পরীক্ষা শেষ করতে বাধ্য করা হয়েছিল ওই ছাত্রীকে। যার পরিণতি হল মর্মান্তিক। পরদিনই মৃত্যু হয় ওই ছাত্রীর।
মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদাবাদে। ফরিদাবাদের একটি সিবিএসঅ স্কুলে পাঠরত ছিল আরাধ্যা খান্ডেওয়াল নামে ওই ছাত্রী। বৃহস্পতিবার সকালে মৃত্যু হয় ওই ছাত্রীর। জানা গিয়েছে,আগের দিনে ক্লাসে তার বমি হয়। এমনকি বাসে করে বাড়ি ফেরার সময়ও বমি করে সে। এই ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা-মায়ের স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ এনেছে। তাঁদের অভিযোগ, মেয়ে তাঁর শারীরিক অসুবিধার কথা ক্লাস টিচারকে জানানোর পরেও, তাঁদেরকে কোনও কথা জানানো হয়নি। তাঁদেরকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রাখা হয় এই বিষয়ে। এমনকি তাঁর অঙ্ক পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে ক্লাসে বসে থাকতে বাধ্য করা হয়।
ওই ক্লাসেরই আরেক ছাত্রীর মা জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ে আরাধ্যার বেস্ট ফ্রেন্ড ছিল। মেয়ে জানিয়েছে, আরাধ্যা যখন ক্লাস টিচারকে বলে যে, তার বমি পাচ্ছে, মাথা ঘুরছে। তখন আরাধ্যাকে ওয়াশরুমে যেতে বলেন ক্লাস টিচার। তারপর বাকি সময়টা আরাধ্যা ক্লাসেই বসেছিল, পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত। এদিকে আরাধ্যার শরীর খারাপ লাগছিল, রীতিমতো ঘামছিল সে। এমনকি একটা সময়, আরাধ্যা আর নিজে হাঁটতেও পারছিল না। মাথা টলছিল তার। চোখ খুলে রাখতে পারছিল না সে।স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা, গাফিলতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। উল্লেখ্য, বিনা চিকিৎসায় ক্লাসে বসে থাকার পাশাপাশি, বাড়ি ফেরার সময় বাসের মধ্যে আবার বমি করে ছোট্ট আরাধ্যা। তখন স্কুলের বাসকাকু বাসের সিট নোংরা করার জন্য তাকে বকাবকিও করে।
এরপর বাড়ি ফিরে সে আবার বমি করে। তখনই বাড়ির লোক প্রথম তার অসুস্থতার কথা জানতে পারে। এরপর তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকে দেওয়া ওষুধ খেয়ে সে খানিকটা সুস্থবোধ করে। তারপর সে ঘুমাতে চলে যায়। কিন্তু পরদিন ভোর ৬টা থেকে আবার বমি করতে শুরু করে আরাধ্য়া। সঙ্গে সঙ্গেই তাকে নিকটবর্তী হাসপাতালে যাওয়া হয়। সেখানে প্রথমে ইসিজি হয়। তারপরই চিকিৎসকরা দেখে, ওই ছাত্রীর কোনও পালস পাওয়া যাচ্ছে না। এরপরই চিকিৎসকরা সপ্তম শ্রেণিতে পাঠরত আরাধ্যাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ডিহাইড্রেশনের কারণেই ওই ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ সঠিক সময়ে চিকিৎসা করালে তাদের মেয়ে প্রাণে বেঁচে যেত বলে আক্ষেপ করছেন হতভাগ্য বাবা-মা। গাফিলতির জেরে কাঠগড়ায় স্কুল কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন, Vande Bharat Fire: 'বিপত্তি'র বন্দে-ভারতে আগুন, কী ঘটেছে ঘটনাটি?