ত্রিবেদীর ইস্তফা, কং-তৃণমূলের মুখরক্ষা

দীনেশ ত্রিবেদীকে রেলমন্ত্রীর পদ থেকে অপসারণ ইস্যুতে ইউপিএ টু-এর প্রধান দুই শরিকের টানাপোড়েন তুঙ্গে পৌঁছয়। শরিক তৃণমূল সমর্থন প্রত্যাহার করলে পরবর্তী শরিকের সন্ধান যদিও শুরু করে দিয়েছিল কংগ্রেস।

Updated By: Mar 19, 2012, 08:32 AM IST

দীনেশ ত্রিবেদীকে রেলমন্ত্রীর পদ থেকে অপসারণ ইস্যুতে ইউপিএ টু-এর প্রধান দুই শরিকের টানাপোড়েন তুঙ্গে পৌঁছয়। শরিক তৃণমূল সমর্থন প্রত্যাহার করলে পরবর্তী শরিকের সন্ধান যদিও শুরু করে দিয়েছিল কংগ্রেস। কিন্তু স্বস্তি মেলেনি। স্বস্তিতে ছিল না শরিক তৃণমূলও। সমর্থন প্রত্যাহার করতে হলে, রাজ্যের অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবিলায় তাঁদের সমস্যায় পড়তে হত।  তাই,  দীনেশ ত্রিবেদীর ইস্তফা কংগ্রেস ও তৃণমূল দুপক্ষেরই মুখ রক্ষার পথ প্রশস্ত করে দিল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
রেলমন্ত্রীর পদ থেকে দীনেশ ত্রিবেদীকে অপসারণ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে চরমপত্র পাওয়ার পরই নড়ে চড়ে বসেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।  তৃণমূল সমর্থন প্রত্যাহার করলে সরকার রাখার প্রশ্নে সমস্যায় পড়তে হতে পারে কংগ্রেসকে। এই পরিস্থিতিতে দ্বিতীয় বিকল্প হিসেবে উঠে আসে সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টি এবং বেশ কয়েকটি দলের নামও। উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের পর সপাকে মন্ত্রিসভায় নিয়ে আসার পরিকল্পনাও করে ফেলেন কংগ্রেসের একাংশ। তবে তা নিয়ে দ্বিধাভক্ত ছিল কংগ্রেস। বিশেষ করে রাহুল গান্ধী শিবির। কারণ, সমাজবাদী পার্টি সরকারে যোগ দিলে আগামী লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশে বিরোধী প্রচার অনেকটাই ভোঁতা হয়ে যাবে।

এরই মধ্যে সমাজবাদী পার্টির তরফেও জানিয়ে দেওয়া হয়, মন্ত্রিসভায় অংশ না নিলেও, সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করবেন না তাঁরা। সপা`র এই আশ্বাসে ঝুঁকি নিতে নারাজ কংগ্রেস নেতৃত্ব। তবে দরজা খোলা রাখতে চান তাঁরা। আবার বর্তমান পরিস্থিতিতে তৃণমূলের সমর্থন হাতছাড়া করতে চাননি কংগ্রেস নেতৃত্ব।  ফলে, দর কষাকষির রাজনীতিতে আরও একবার নিজের মতামত প্রতিষ্ঠা করতে সমর্থ হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এলটিটিই নেতা প্রভাকরণের ছেলেকে হত্যা প্রসঙ্গে ডিএমকের সঙ্গে বিবাদ। আবার রেলের ভাড়া নিয়ে শরিক তৃণমূলে সঙ্গে দর কষাকষি।
কংগ্রেস নেতারাও চাননি অধিবেশন চলাকালীন দীনেশ ত্রিবেদীকে সরানোর বিষয়টি ঘোষণা করুন প্রধানমন্ত্রী। ফলে রেলমন্ত্রীর পদে দীনেশ ত্রিবেদী ইস্তফার কথা ঘোষণা করার পর, কিছুটা হাঁফ ছেড়েছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। বিষয়টিকে শরিক দলের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলেই দেখাতে চান তাঁরা। কংগ্রেসের থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করলে, তৃণমূলও স্বস্তিতে থাকতো না। এফডিআই, তিস্তা জলবণ্টন চুক্তি, লোকপাল বিল, এনসিটিসি এবং সম্প্রতি বর্ধিত রেলভাড়া প্রত্যাহার প্রসঙ্গ, কংগ্রেসের সঙ্গে তিক্ততা ক্রমেই বেড়েছে তৃণমূলের। এখন সেই পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক করে আপাতত রেলমন্ত্রীর পদে মুকুল রায়ের অভিষেক সুনিশ্চিত করতেই চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের বেহাল আর্থিক পরিস্থিতির জন্য এখনও কেন্দ্রের মুখাপেক্ষী হয়েই থাকতে হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসকে। সমর্থন প্রত্যাহার করার মতো, তাই কোনও চরম নীতি নেওয়া তৃণমূলের কাছেও এ মুহূর্তে সম্ভব নয়। এই পরিস্থিতিতে তাই চাপের রাজনীতির কৌশল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বজায় রাখবেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

.