মুফতি সঈদের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগেই আলমকে মুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, বলছে চিঠি
কাশ্মীর উপত্যকার বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা মাসারত আলমের বিরুদ্ধে নতুন করে কোনও মামলা না করার সিদ্ধান্ত জম্মু-কাশ্মীরে ৪৯ দিনের রাজ্যপালের শাসনকালেই নেওয়া হয়েছিল। পিডিপি-বিজেপি জোটের সরকার ক্ষমতায় আসার এক সপ্তাহ আগেই মাসরত আলমকে আটকের মেয়াদ ফুরিয়েছিল।
শ্রীনগর: কাশ্মীর উপত্যকার বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা মাসারত আলমের বিরুদ্ধে নতুন করে কোনও মামলা না করার সিদ্ধান্ত জম্মু-কাশ্মীরে ৪৯ দিনের রাজ্যপালের শাসনকালেই নেওয়া হয়েছিল। পিডিপি-বিজেপি জোটের সরকার ক্ষমতায় আসার এক সপ্তাহ আগেই মাসরত আলমকে আটকের মেয়াদ ফুরিয়েছিল।
জম্মু-কাশ্মীরের স্বরাষ্ট্র সচিব সুরেশ কুমার গত ৪ ফেব্রুয়ারি জম্মুর ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেটকে একটি চিঠি লেখেন। এই চিঠিটি বর্তমানে সংবাদ চ্যানেল এনডিটিভির হাতে এসেছে। এই চিঠিতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে সুরেশ কুমার লিখেছেন ২০১৪ সালেএ সেপ্টেম্বরে পাবলিক সেফটি অ্যাক্ট (পিএসএ) অনুযায়ী আলমকে আটক করে রাখার যে নোটিশ জারি করা হয়েছিল বর্তমানে তার মেয়াদ ফুরিয়েছে। এই অ্যাক্ট অনুযায়ী আটক করার ১২ দিনের মধ্যে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর এই সংক্রান্ত কোনও নির্দেশই না দেওয়ায় বর্তমানে আলমকে আটকে রাখা বেআইনি।
এই চিঠিটিতে লেখা ''তাৎক্ষণিক মামলার ক্ষেত্রে নির্দেশজারির ১২ দিনের সময়সীমা ইতিমধ্যেই অতিক্রান্ত। এই অবস্থায় এই আটক করে রাখা বেআইনি।''
তাছাড়া চুক্তি অনুযায়ী ১ মাসের মধ্যে অ্যাডভাইসারি বোর্ডও এই মামলা অনুমোদন করেনি।
এনডিটিভি দাবি করেছে তাদের সূত্র অনুযায়ী জম্মু-কাশ্মীরের ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট জানিয়েছে নতুন করে আলমকে আটক করে রাখার কোনও কারণই আর নেই। যার ফলে মাসারত আলমের বিরুদ্ধে বর্তমানে সব মামলাই বন্ধ রয়েছে।
শনিবার মুফতি মহম্মদ সঈদের সরকার মাসারত আলমের মুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর, সারা দেশ জুড়েই রাজনৈতিক মহলে বিতর্কের ঝড় ওঠে। ২০১০ সালে ভারতীয় সেনার বিরুদ্ধে কাশ্মীরের রাস্তায় প্রতিবাদ উস্কে দেওয়ার অভিযোগ ছিল আলমের বিরুদ্ধে। এই ঘটনার জেরে ১০০ জনের মৃত্যু হয়। পাবলিক সিকিউরিটি অ্যাক্টে আলমকে ৪ বছরের জন্য আটক করা হয়।
গতকাল লোকসভায় বিরোধীদের সঙ্গে এক সুরেই আলমের মুক্তির তীব্র বিরোধীতা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি সাফ জানান, কেন্দ্রের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই এই বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতার মুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে জম্মু-কাশ্মীরের পিডিপি-বিজেপি জোট সরকার।
অন্যদিকে কাশ্মীর উপত্যকার বিজেপির পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আলমের বিরুদ্ধে নতুন করে তদন্ত শুরু করার দাবি করা হয়েছে।
অন্যদিকে, পিডিপি নিজেদের অবস্থানে অনড়। তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে নূন্যতম মতানৈক্যের ভিত্তিতে বিজেপির সঙ্গে জম্মু-কাশ্মীরে সরকার গঠনে রাজি হয়েছিল পিডিপি, তার মধ্যে আলমের মুক্তির বিষয়টিও ছিল।
তাদের দাবি জেলে বন্দি রেখে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মধ্যে শান্তি প্রক্রিয়া চালু করা সম্ভব নয়।