'আপ'নিই থাকছেন কেজরীবাল, জনাদেশ দেশের রাজধানীর
আপের ভোটপ্রচারের মধ্যমণিই ছিলেন অরবিন্দ কেজরীবাল। সেই কেজরীর ক্যারিশমায় উড়ে গেল বিজেপি।
!['আপ'নিই থাকছেন কেজরীবাল, জনাদেশ দেশের রাজধানীর 'আপ'নিই থাকছেন কেজরীবাল, জনাদেশ দেশের রাজধানীর](https://bengali.cdn.zeenews.com/bengali/sites/default/files/2020/02/11/233997-arvnd.jpg)
নিজস্ব প্রতিবেদন: লগো রহো কেজরীবাল। দিল্লির জনাদেশ আরও ৫ বছর মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে থাকবেন আম আদমিই। ২০১২ অন্না হাজারের দুর্নীতিবিরোধী মঞ্চ থেকে আবির্ভাব হয় আপের। ২০১৩ সালের বিধানসভা ভোটে ২৮টি আসন নিয়ে বোধনেই চমক দেন কেজরীবাল। ৪৯ দিনের মাথায় কংগ্রেসের সঙ্গে জোট সরকারের পতন। ২০১৫ সালের ভোটে একেবারে 'বাপি বাড়ি যা'। একাই ৬৭টি আসনপ্রাপ্তি আপের। ২০২০ সালেও তার অন্যথা হল না। আসন সংখ্যা ৫টি কমে হল ৬২। সেটাই কুড়িয়ে-বাঁচিয়ে বিজেপি পৌঁছল ৮-এ।
আপের ভোটপ্রচারের মধ্যমণিই ছিলেন অরবিন্দ কেজরীবাল। সেই কেজরীর ক্যারিশমায় উড়ে গেল বিজেপি। মেরুকরণের আবহে উন্নয়নেই আস্থা রাখল রাজধানী। নিউ দিল্লি বিধানসভা আসনে ১১ হাজার ভোটে জয়ী হয়েছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন, নাগরিক পঞ্জি নিয়ে দেশজুড়ে প্রতিবাদ-আন্দোলনের মধ্যেই দিল্লির হারে ব্যাকফুটে গেরুয়া শিবির। অরবিন্দ কেজরীবাল ঘোষণা করলেন, কাজই কথা বলেছে।
জাতীয়তাবাদে শত প্রচারেও এই কেজরিওয়ালের সামনে দাঁড়াতে পারল না বিজেপি। আপ সরকারের উন্নয়নেই, আস্থা রাখল দিল্লি। একাধিক বুথ ফেরত সমীক্ষাকেও, পিছনে ফেলে রাজধানীতে পহলে আপ। দিল্লি বিধানসভা আসনের মানচিত্রই বুঝিয়ে দিচ্ছে ৫ বছরে ভোটারদের পছন্দে খুব একটা বদল আসেনি। বেলা বাড়তেই ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে যায় ভোটের ফলাফল। ৭০ আসনের দিল্লি বিধানসভায়, প্রায় ৮৮% আসনে জয়ী হয়েছে আপ। গত বিধানসভা ভোটে তুলনায় তাদের আসন কমেছে সামান্যই। লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যাচ্ছে, শূন্য থেকে শিখরে পৌছেছে আম-আদমি পার্টি। আর পরপর দুটি বিধানসভা ভোটেই কংগ্রেস জিরো। গত বিধানসভা ভোটের তুলনায় আপ তাদের ভোটব্যাঙ্ক অটুট রাখতে পেরেছে। বিজেপির ভোট কিছুটা বেড়েছে। সেই ভোট এসেছে কংগ্রেসের ঘর ভেঙে। আর লোকসভার সঙ্গে তুলনায় আপের প্রাপ্ত ভোটের হার অনেক বেড়েছে। ভোট কমেছে কংগ্রেস-বিজেপি, দু'দলেরই।
দিল্লিতে প্রায় ৩০% বিহার-ঝাড়খণ্ড-উত্তরপ্রদেশের ভোটার। এই পূর্বাঞ্চলীয় ভোটাররা ভাল সংখ্যায় রয়েছেন, এমন ১৬টি আসনের মধ্যে ১৪টিতেই জিতেছে আপ। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন, এই আসনগুলিতে বিজেপির বিপদ ডেকে এনেছে বলে অনেকেই মনে করছেন। তবে, সবার আগে আপের উন্নয়নের মডেল। বিনামূল্যে মাসে পরিবার-পিছু ২০ হাজার লিটার জল। বিনামূল্যে ২০০ ইউনিট বিদ্যুত্। সরকারি স্কুলের উন্নয়ন, সারা দেশে প্রথম দশে দিল্লির ৩ স্কুল। বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবায় মহল্লা ক্লিনিক। মহিলাদের জন্য সরকারি বাসে ফ্রি পিঙ্ক টিকিট। মহিলাদের সুরক্ষায় দিল্লির সর্বত্র সিসিটিভি।
এই জনমুখী রাজনীতিই আপের সাফল্যের কারণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। খোদ রাজধানীতে আপের হ্যাটট্রিকের পর, অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে টুইটারে অভিনন্দন জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। কেন্দ্রের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলার বার্তা দিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীও।
ক্যাডারভিত্তিক দল নয়। ক্রাউড সোর্সড দল। ধরাবাঁধা কোনও ইজমে বিশ্বাসী নয়। সাধারণ মানুষ সরকারের কাছে যা চান, শুধুমাত্র সেই চাহিদাটুকু পূরণ করে যাওয়া। আপের উত্থান দেশের রাজনীতিতে, এক 'নিউ এজ' পার্টির জন্ম দিয়েছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যে ভাবনাকে অস্বীকার করা অন্তত এই মুহূর্তে অসম্ভব।
আরও পড়ুন- যস্মিন দেশে যদাচার! যাদবপুরে ছাত্রীদের জন্য ন্যাপকিন-ভেন্ডিং মেশিন দাবি ABVP-র