রাজধানীতে নিষিদ্ধ প্লাস্টিক ব্যাগ, ব্যবহার করলেই জেল
প্লাস্টিক ব্যাগের ব্যবহার সার্বিকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল দিল্লি সরকার। যদিও বাস্তবে এর প্রভাব কতটা পড়বে তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছে প্রশাসনও। শুধু রাজধানী দিল্লি নয়, ভারত তথা সমগ্র বিশ্বে প্লাস্টিকের ব্যবহার নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে।
প্লাস্টিক ব্যাগের ব্যবহার সার্বিকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল দিল্লি সরকার। যদিও বাস্তবে এর প্রভাব কতটা পড়বে তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছে প্রশাসনও। শুধু রাজধানী দিল্লি নয়, ভারত তথা সমগ্র বিশ্বে প্লাস্টিকের ব্যবহার নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। প্লাস্টিকের কারণে ছড়াতে থাকা পরিবেশ দূষণ নিয়ে সরব নানা সংগঠন। কিন্তু কিছুতেই ঠেকানো যাচ্ছে না এর ব্যবহার। উপায় খুঁজতে গিয়ে নাকাল প্রায় সব দেশ। বিশেষজ্ঞদের আশা, সাধারণ মানুষের সচেতনতাই একমাত্র পারে প্লাস্টিক-দূষণ থেকে মুক্তি দিতে।
অতি সাধারণ দেখতে এই প্লাস্টিকের ব্যাগই দিনদিন ধ্বংসের পথে এগিয়ে নিয়ে চলেছে এই পৃথিবীকে। যেদিকে তাকানো যায় সেদিকেই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে এই প্লাস্টিক। জীবনের প্রতিক্ষেত্রে কার্যত অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে এটি।
অথচ প্লাস্টিকের ব্যবহার যে এখনই বন্ধ হওয়া উচিত তা নিয়ে বহুবার সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। পরিবেশকে প্লাস্টিকের ভয়ঙ্কর দূষণের হাত থেকে রক্ষা করতে উদ্যোগী বহু সংগঠন। ভারত সহ বিশ্বের একাধিক দেশ প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। কিন্তু তাতে কোনও ফল হয়নি।
১১ই সেপ্টেম্বর থেকে রাজধানী দিল্লিতে সার্বিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে প্লাস্টিক ব্যাগের ব্যবহারের ওপর। এর আগেও দিল্লি সরকার তিন বছরের জন্য প্লাস্টিক ব্যাগের ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। কিন্তু তাতে একচুলও রোখা যায়নি এর ব্যবহার। অগত্যা এবার আরও কড়াভাবে জারি করা হল নিষেধাজ্ঞা। এনভায়ারম্যান্ট প্রোটেকশন অ্যাক্ট, ১৯৮৬ এর নিয়ম মেনে লাগু হওয়া এই নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গকারীর জন্য কড়া শাস্তির বিধান রয়েছে আইনে। অভিযুক্তের পাঁচ বছর পর্যন্ত হাজতবাস হতে পারে। জরিমানা দিতে হতে পারে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত। অথবা এই দুটি শাস্তিই মিলতে পারে নিষেধাজ্ঞা ভাঙলে।
এতকিছুর পরও কি সত্যিই আটকানো যাবে প্লাস্টিককে? কয়েক যুগ ধরে ধীরে ধীরে মানুষের প্রতিদিনের জীবনে ওতোপ্রোতোভাবে জড়িয়ে গেছে এই প্লাস্টিক। কিন্তু এখন যখন এর অপকারী দিকগুলি একে একে সামনে উঠে আসছে, তখন প্রশাসনের হাজার চেষ্টা সত্ত্বেও এটিকে জীবন থেকে ঝেড়ে ফেলা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্লাস্টিকের ব্যাগের ব্যবহার মাত্র কিছুক্ষণের। কিন্তু ব্যবহার ফুরোলেই প্লাস্টিক ফুরিয়ে যায় না। এটি এমন এক জিনিস যা জলে ডোবানো হোক, বা আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হোক-তার কুফল ভুগবে পরিবেশ।
দিল্লির পাশাপাশি মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাব, রাজস্থান, হিমাচল প্রদেশ, গোয়া এবং পশ্চিমবঙ্গ প্লাস্টিক ব্যাগের ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। গোটা বিশ্বের দিকে চোখ ফেরালে, উন্নত থেকে উন্নয়নশীল, যেমন ব্রিটেন, দক্ষিণ আফ্রিকা, মালয়েশিয়া, চিন, কেনিয়া সহ বহু দেশ প্লাস্টিক ব্যাগের ব্যবহার থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিচ্ছে নাগরিকদের। কিন্তু শুধু সরকারি উদ্যোগ এক্ষেত্রে যথেষ্ট নয় বলে মত বিশেষজ্ঞদের। বিভিন্ন জায়গায় সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে, সাধারণ মানুষের একটি বড় অংশ এখনও প্লাস্টিক ব্যবহারের কুফল সম্পর্কে সম্পূর্ণ অন্ধকারে। একে বন্ধ করতে হলে সবার আগে মানুষকে সচেতন করা প্রয়োজন বলে মত বিজ্ঞানীদের। তাই তাঁদের বিধান, যাবতীয় নিষেধাজ্ঞা--শাস্তির খাঁড়া এসবের আগে মানুষের সচেতন হয়ে এগিয়ে আসাই প্লাস্টিক-রোধের সফল দাওয়াই হয়ে উঠতে পারে।