দিল্লির চাইল্ড সিরিয়াল কিলার রবীন্দর কুমারের জবানবন্দি উসকে দিল নিঠারি কাণ্ডের স্মৃতি
শিউরে ওঠার মতো স্বীকারোক্তি করল গত সপ্তাহে ৬ বছরের শিশুকন্যার হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া রবীন্দর কুমার। ২৩ বছরের রবীন্দর পুলিসকে জানিয়েছে কীভাবে শিশুদের যৌন নির্যাতন করতো, জানিয়েছে মৃতদেহের প্রতি তার অফুরন্ত যৌন কামনার কথাও।
ওয়েব ডেস্ক: শিউরে ওঠার মতো স্বীকারোক্তি করল গত সপ্তাহে ৬ বছরের শিশুকন্যার হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া রবীন্দর কুমার। ২৩ বছরের রবীন্দর পুলিসকে জানিয়েছে কীভাবে শিশুদের যৌন নির্যাতন করতো, জানিয়েছে মৃতদেহের প্রতি তার অফুরন্ত যৌন কামনার কথাও।
রবীন্দর জানিয়েছে লজেন্স দিয়ে সে শিশুদের ভোলাতো, যদি শিশুরা তার সঙ্গে যৌন সংসর্গে লিপ্ত হতে অস্বীকার করতো, তখন তাদের খুন করে শিশুদের মতদেহের সঙ্গে যৌন সংসর্গ করতো সে। ২০০৮ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে রবীন্দর তার বন্ধুর সঙ্গে মিলে ১৫টি শিশুকে অপহরণ করে, যৌন নির্যাতনের পর তাদের খুন করা হয়। রবীন্দর জানায় যখনই সে তার বন্ধু ধর্মেন্দর ও কিষানের সঙ্গে মদ্যপান করতো ও পর্নোগ্রাফি দেখতো তখনই যেন অন্য মানুষ হয়ে যেতো। তারপরই বন্ধুদের সঙ্গে বেরিয়ে শিশুদের অপহরণ করে তাদের লজেন্স দিয়ে ভোলানোর চেষ্টা করতো। এরপর চলতো ধর্ষণ ও অবশেষে খুন।
জবানবন্দিতে রবীন্দর জানিয়েছে ১৭ বছর বয়সে প্রথম এই ধরনের অপরাধ করে সে। মেট্রো কনস্ট্রাকশন সাইট থেকে এক শ্রমিকের শিশুকন্যাকে নিরিবিলি জায়গায় নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে খুন করে সে। যদিও, সেই ঘটনার রেকর্ড পুলিসের কাছে নেই। প্রথম অপরাধের কোনও অভিযোগ নথিভুকিত না হওয়ায় তার আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায় বলে জানিয়েছে রবীন্দর। চলতে থাকে একের পর এক অপরাধ। ২০০৯ সালে বিজয় বিহার থেকে শ্রমিকের শিশুপুত্রকে তুলে নিয়ে গিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে খুন করে রবীন্দর। সেবার অভিযোগ নথিভুক্ত হলেও প্রমাণের অভাবে আইনের চোখে ধুলো দিয়ে পার পেয়ে যায় রবীন্দর।
যৌন সংসর্গে তাকে বাধা দেওয়ায় বা তাকে চিনে ফেলায় মোট ১১ শিশুকে সে খুন করেছে বলে জানিয়েছে রবীন্দর। সাধারণত সকালের দিকে বা বিকেলের দিকে এইসব কাণ্ড করতো বলে সে জানিয়েছে পুলিসকে। একটি দৈনিকে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, শিশুদের খোঁজে বিভিন্ন কলোনিতে ঘুরে বেড়াতো রবীন্দর। যখনই শিশুদের বাড়ির বাইরে খেলা করতে দেখতো তাদের পয়সা ও মিষ্টি দিয়ে ভোলানোর চেষ্টা করতো। তারা বাধা দিলে জোর করে তুলে নিয়ে যেতো। কখনও সখনও যদি শিশুটি মুখ না খোলার আশ্বাস দিতো তবে তাকে ছেড়ে দিতো সে। ২০১১ সালে কাঞ্জাওয়ালা ও মুন্ডকাতেও সে এই ধরণের অপরাধ করেছে বলে পুলিসকে জানিয়েছে রবীন্দর। ২০১২ সালে আলিগড়ে এক বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়ে পারিবারিক বন্ধুর ১৪ বছরের দুই মেয়েকেও সে টার্গেট করেছিল বলেও স্বীকার করেছে রবীন্দর।
এছাড়াও নিজের এলাকার আরও ২ শিশুও তার বিকৃত যৌন লালসার শিকার হয়েছে, ২০১৩ সালে নয়ডায় সাফাইকর্মী হিসেবে কাজ করার সময়ও দুটি শিশুকে সে খুন করে বলে জানিয়েছে রবীন্দর। এইসব শিশুদের পরিবারদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিস। রবীন্দরের নারকোটিক ব্রেন ম্যাপিং করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিসিপি বিক্রমজিত্ সিং। খোঁজ চলছে রবীন্দরের দুই সঙ্গীর।
রবীন্দরের জবানবন্দি আবারও মনে করিয়ে দিয়েছে ২০০৫-০৬ সালে নয়ডার নিঠারি কাণ্ডের স্মৃতি।