রেলমন্ত্রী বদল নিয়ে সিদ্ধান্ত ৩০ মার্চের পর, তৃণমূল নেত্রীকে জানাল কংগ্রেস
রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদীকে তাঁর পদ থেকে সরানো হবে কি না, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ৩০ মার্চের পর। বৃহস্পতিবার তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়ে দিল কংগ্রেস হাইকম্যান্ড। অর্থাত্ সাধারণ বাজেট পাস না হওয়া পর্যন্ত 'রেলমন্ত্রী-বিতর্ক' স্থগিত রাখতে চায় কেন্দ্র।
রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদীকে তাঁর পদ থেকে সরানো হবে কি না, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ৩০ মার্চের পর। বৃহস্পতিবার তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়ে দিল কংগ্রেস হাইকম্যান্ড। অর্থাত্ সাধারণ বাজেট পাস না হওয়া পর্যন্ত 'রেলমন্ত্রী-বিতর্ক' স্থগিত রাখতে চায় কেন্দ্র। অপরদিকে দীনেশ ত্রিবেদীর বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ এনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের বলেন, ''যাত্রীভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে আমার সঙ্গে কোনও আলোচনাই করেননি ত্রিবেদী। এমনকী মুকুল রায়ের সঙ্গেও কোনও আলোচনা করেননি তিনি।'' এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর তৃণমূল নেত্রী অভিযোগ করেন, যাত্রীভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি কংগ্রেসের 'প্রি-প্ল্যান্ড'। তৃণমূল কংগ্রেস এই ভাড়া বৃদ্ধির বিরোধিতা করবে।
বুধবার রেল বাজেটে ভাড়াবৃদ্ধির প্রস্তাব পেশের পর সাংসদদের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করার নির্দেশ দেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের বিরোধিতায় দীনেশ নরম তো হনইনি, উল্টে বিকেলে এক সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, তিনি ভগবানকেও ভয় পান না। দলনেত্রীর নাম না-করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, "গত ২ বছর রেল আইসিইউ-তে রয়েছে। রেলের স্বাস্থ্য উদ্ধারে যা করা উচিত, আমি তাই করেছি।" তাঁর প্রশ্ন, "আমি মহাকরণ থেকে রেলমন্ত্রক চালাব, না রেল ভবন থেকে?"
এর আগে খবর ছিল, দলের নির্দেশ মেনে বুধবার রাতেই প্রধানমন্ত্রীর কাছে ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন দীনেশ ত্রিবেদী। প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়ের তরফেও ইস্তফাপত্রের প্রাপ্তি স্বীকারের ইঙ্গিত মিলেছিল। তৃণমূলের তরফেও জানানো হয়, দীনেশ ত্রিবেদীর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন মনমোহন সিং। কিন্তু বেলা বাড়াতেই মিডিয়ার মুখোমুখি হয়ে দীনেশ ত্রিবেদী জানান, তিনি এখনও প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়ে পদত্যাগপত্র পাঠাননি। সেই সঙ্গে দীনেশ ত্রিবেদীর দাবি, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বা তৃণমূল নেতৃত্বের তরফে তাঁকে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়নি। তবে এঁদের কেউ ইস্তফা চাইলে তিনি তা দিতে প্রস্তুত বলে জানিয়ে দিয়েছেন রেলমন্ত্রী। বস্তুত, সংসদে এদিন একই তথ্য মিলেছে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কাছ থেকে। ফলে পুরো ঘটনা ঘিরে নাটকীয়তা চরমে উঠেছে।
অন্যদিকে, এদিন দীনেশ ত্রিবেদীর ইস্তফা ইস্যুতে উত্তাল হয়ে ওঠে সংসদের অধিবেশন। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর জবাবদিহি চেয়ে বিরোধীদের হইচইয়ের জেরে সাময়িকভাবে মুলতুবি হয়ে যায় রাজ্যসভার অধিবেশন। অন্যদিকে লোকসভার নেতা প্রণব মুখোপাধ্যায় জানান, রেলমন্ত্রী পদে এখনও বহাল রয়েছেন দীনেশ ত্রিবেদী। তবে তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আলোচনার পর এ ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হতে পারে বলে জানান তিনি। সূত্রে খবর, বাজেট অধিবেশনের মাঝপথে রেলমন্ত্রী বদল করলে সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হতে পারে বলে মনে করছে কংগ্রেস। তাই পরবর্তী রেলমন্ত্রী নির্বাচন নিয়ে অযথা তাড়াহুড়ো না করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
নয়া রেলমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার জন্য বৃহস্পতিবারই দিল্লি উড়ে যান তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী মুকুল রায়। এদিন পশ্চিমবঙ্গের জন্য বিশেষ আর্থিক প্যাকেজের দাবি এবং বিতর্কিত এনসিটিসি আইন বাতিলের দাবিতে সংসদ ভবন চত্বরে তৃণমূল সাংসদদের ধর্নায় নেতৃত্বও দিচ্ছেন তিনি। এই ধর্নায় যোগদানের জন্য দলের তরফে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলেও দাবি করেন দীনেশ। এদিন সময় মতোই সংসদে হাজির ছিলেন তিনি।