আর্থিক সমীক্ষা পেশ, আর্থিক বৃদ্ধির হার ৬.৯ শতাংশ
আর্থিক বৃদ্ধির হার পূর্ব ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারবে না বলে আগেই জানিয়েছিল কেন্দ্র। বাজেট পেশের আগের দিন বৃহস্পতিবার আর্থিক সমীক্ষাতেও দেখা গেল, ২০১২ আর্থিক বছরে দেশের মোট জাতীয় উত্পাদন বৃদ্ধির হার ৬.৯ শতাংশ।
আর্থিক বৃদ্ধির হার পূর্ব ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারবে না বলে আগেই জানিয়েছিল কেন্দ্র। বাজেট পেশের আগের দিন বৃহস্পতিবার আর্থিক সমীক্ষাতেও দেখা গেল, ২০১২ আর্থিক বছরে দেশের মোট জাতীয় উত্পাদন বৃদ্ধির হার ৬.৯ শতাংশ। কেন্দ্রের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮.৪ শতাংশ। এদিন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পেশ করা আর্থিক সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০১৩ আর্থিক বছরে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির হার হবে ৭.৬ শতাংশ ও ২০১৪-এ হবে ৮.৬ শতাংশ। এছাড়া ২০১৩ সালের মার্চের মধ্যে মুদ্রাস্ফীতির হার ৬.৫ থেকে ৭ শতাংশের মধ্যে থাকবে বলেও জানাচ্ছে সমীক্ষা।
চলতি আর্থিক বছরে আর্থিক বৃদ্ধির হার কমার কারণ হিসেবে আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম বৃদ্ধি ও কম রাজস্ব আদায় ছাড়াও মূলত শিল্পোত্পাদন বৃদ্ধির হার কমাকেই দায়ী করা হয়েছে আর্থিক সমীক্ষায়। সমীক্ষা অনুযায়ী, কৃষি ও পরিষেবা ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার খারাপ নয়। পরিষেবা ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার ৯.৪ শতাংশ। কিন্তু শিল্পোত্পাদন বৃদ্ধির হার শোচনীয়। ২০১১-র এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের সার্বিক বৃদ্ধির হার ছিল ৩.৬ শতাংশ। ২০১০-এ ওই একই সময়ে এই হার ছিল, ৮.৩ শতাংশ। যদিও জিডিপি বৃদ্ধির হার দুর্বল হওয়া সত্ত্বেওআর্থিক বৃদ্ধির হারে এগিয়ে ভারত। কারণ বিশ্বের অন্যান্য দেশের বৃদ্ধির হার তুলনায় বেশ কম। মুদ্রাস্ফীতি কমাতে চলতি আর্থিক বছরে বেশ কয়েকবার ঋণনীতিতে কঠোর হয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।
বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কঠোর ঋণনীতির ফলে ধাক্কা খেয়েছে বিনিয়োগ। তবে আর্থিক সমীক্ষার অনুমান, আগামী কয়েক মাসে মুদ্রাস্ফীতির হার কমলে, ঋণনীতিতে কিছুটা শিথিলতা আনবে আরবিআই, ফলে বিনিয়োগ বাড়বে। আর বিনিয়োগ বাড়লে আর্থিক বৃদ্ধিতেও তার সুপ্রভাব পড়বে। আর্থিক বৃদ্ধির হার কমার জন্য বিশ্ব আর্থিক মন্দাকেও দায়ী করা হয়েছে সমীক্ষায়।
এক নজরে দেশের আর্থিক সমীক্ষা
১. চলতি আর্থিক বছরে আর্থিক বৃদ্ধির হার হবে ৬.৯ শতাংশ। ২০১২-১৩ আর্থিক বছরে আর্থিক বৃদ্ধির হার হবে ৭.৬ শতাংশ। এবং ২০১৩-১৪ আর্থিক বছরে হবে ৮.৬ শতাংশ।
২. মুদ্রাস্ফীতির হার কমার ফলে ঋণনীতি শিথিল করতে পারে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। ফলে বিনিয়োগ বাড়বে।
৩. বিশ্ব মন্দার প্রভাব, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কঠোর ঋণনীতির ও শিল্পোত্পাদন বৃদ্ধির হার কমায় আর্থিক বৃদ্ধির হার কেমেছে।
৪. মুদ্রাস্ফীতির হার বেশি। তবে চলতি বছরের শেষে কমে যাবে। পাইকারি বাজারে খাদ্য মুদ্রাস্ফীতির হার চলতি বছরের জানুয়ারিতে কমে হয়েছে ১.৬ শতাংশ। ২০১০ সালে ওই একই সময়ে এই হার ছিল ২০.২ শতাংশ।
৫. ২০১১-১২ আর্থিক বছরে কৃষিক্ষেত্রে উত্পাদনের হার ২.৫ শতাংশ।
৬. পরিষেবা ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার হবে ৯.৪ শতাংশ।
৭. চলতি আর্থিক বছরের শেষে জিডিপি-র হারে পরিষেবা ক্ষেত্রের অবদান বেড়ে হবে ৫৯ শতাংশ।
৮. শিল্পোত্পাদন বৃদ্ধির হার থাকবে ৪ থেকে ৫ শতাংশের মধ্যে। তবে পরে এই হার বাড়বে।
৯. চলতি আর্থিক বছরের প্রথমার্ধে রফতানি বৃদ্ধির হার ৪০.৫ শতাংশ এবং আমদানি বৃদ্ধির হার ৩০.৪ শতাংশ।
১০. সামাজিক উন্নয়ন খাতে কেন্দ্রের বরাদ্দ বেড়েছে ১৮.৫ শতাংশ।