টাকা না মেটায় প্রসূতির পেটের সেলাই কাটেনি হাসপাতাল! ভিক্ষা করে টাকা জোগাড়ের চেষ্টা ৭ বছরের ছেলের

হাসপাতালের অর্ধেক বিল মেটানো হয়েছে, তাই মহিলার চিকিত্সাও অর্ধেক করেছে হাসপাতাল। অভিযোগ, মহিলার পেটের সেলাই কাটা হয়নি। ওই অবস্থাতেই তাঁকে ফেলে রাখা হয়েছে হাসপাতালে।

Updated By: Nov 28, 2017, 12:26 PM IST
টাকা না মেটায় প্রসূতির পেটের সেলাই কাটেনি হাসপাতাল! ভিক্ষা করে টাকা জোগাড়ের চেষ্টা ৭ বছরের ছেলের
প্রতীকী ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদন:  মাথার চুল উসকো খুসকো, জামার একটা অংশ ছিঁড়ে ঝুলছে। কালিঝুলি মাখা চোখেমুখে ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট। খিদের চোটে গলার স্বরও ক্ষীণ। বয়স মাত্র বছর সাতেক হবে। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে গাড়ি দাঁড় করিয়ে টাকা চাইছে একটা ছোট্ট ছেলে। ছেলেটিকে দেখে মায়া হওয়ায় তাকে দাঁড় করিয়ে কয়েকটা প্রশ্ন করেছিলেন এক ব্যক্তি। তাতেই উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য।

আরও পড়ুন: বিমান টিকিট বাতিলের আকাশছোঁয়া চার্জে লাগাম টানতে চলেছে কেন্দ্র

কেন ভিক্ষা করছে সে? উত্তরে সেই ছোট্ট শিশুটি যা বলল, তাতে বর্তমান চিকিত্সাব্যবস্থায় সাধারণ মানুষের বিপন্নতা আরও একবার বেআব্রু হয়ে গেল।

পাটনার ওই শিশুটির জানায়, তার মা পাটনারই ‘মা শীতলা এমার্জেন্সি হাসপাতালে’ ভর্তি। মহিলার পরিচিত হাসপাতালের এক এজেন্টই তাঁকে সেখানে নিয়ে যায়। কয়েকদিন আগে আরও এক সন্তানের জন্ম দিয়েছেন মহিলা। হাসপাতালের তরফে তাঁকে এজন্য বিল ধরানো হয়েছে দেড় লক্ষ টাকার। পেশায় দিনমুজর স্বামীর পক্ষে হাসপাতালের বিল মেটানো অসম্ভব হয়ে পড়ে। অনেক অনুরোধের পর বিল কাটছাঁট করে ৭০ হাজার টাকা করা হয়। কিন্তু যে পরিবারের নুন আনতে পানতা ফুরোয়, তাঁদারে পক্ষে ওই টাকা দেওয়াও যথেষ্ট কষ্টের! মহিলার স্বামী ২৫ হাজার টাকা বিল মেটাতে পারেন।

এরপরের কাহিনী আরও মর্মান্তিক..

যেহেতু হাসপাতালের অর্ধেক বিল মেটানো হয়েছে, তাই মহিলার চিকিত্সাও অর্ধেক করেছে হাসপাতাল। অভিযোগ, মহিলার পেটের সেলাই কাটা হয়নি। ওই অবস্থাতেই তাঁকে ফেলে রাখা হয়েছে হাসপাতালে। যতদিন না পুরো বিল মেটানো হবে, ততদিন তাঁর সেলাইও কাটা হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে ওই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেই টাকা জোগাড় করতেই এখন রাস্তায় নেমে ভিক্ষা করছে মহিলার সাত বছরের ছেলে।

আরও পড়ুন: হায়দরাবাদে ট্রাম্প কন্যা, আন্তর্জাতিক শিল্পোদ্যোগী সম্মেলনের উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রী মোদী

এক সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধির মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারেন মধুপুরার সাংসদ পাপ্পু যাদব। তিনি ওই শিশুটির মাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়িয়ে আনেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় একটি এফআইআরও দায়ের করেছেন সাংসদ। হাসপাতালের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ ও ওই মহিলাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। 

.