'হিন্দু শরণার্থী-মুসলিম অনুপ্রবেশকারী',নেহরুর চিঠি পড়ে শোনালেন মোদী
নেহরুর নাম না করে আরও একবার দেশভাগের জন্য কাঠগড়ায় তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
নিজস্ব প্রতিবেদন: নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে উঠেছে বিভেদের অভিযোগ। লোকসভায় কংগ্রেসকে টেনে এনে তাঁর জবাব দিলেন প্রধানমন্ত্রী। আরও একবার তাঁর ভাষণে এল অতীত প্রসঙ্গ- জওহরলাল নেহরু, দেশভাগ, ১৯৭৫ সালের জরুরি অবস্থা ও ১৯৮৪-র শিখ দাঙ্গা। দেশভাগের পর তত্কালীন পশ্চিম ও পূর্ব পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের অবস্থা নিয়ে নেহরুর অবস্থান বোঝাতে তাঁর একটি চিঠির কথাও তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী।
নেহরুর নাম না করে আরও একবার দেশভাগের জন্য কাঠগড়ায় তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন,''প্রধানমন্ত্রীর পদের অভীপ্সায় কেউ দেশ ভাগ করেছিলেন। ভারতের মানচিত্রের উপর দিয়ে লাইন টানা হয়েছিল। দুভাগে ভাগ হয়েছিল ভারত। দেশভাগের জন্য হিন্দু, শিখ ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের উপরে কল্পনাতীত নির্যাতন হয়েছে।''
পাকিস্তান, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিয়ে নেহরুর অবস্থানও তুলে ধরেন মোদী। তাঁর কথায়, ১৯৫০ সালে নেহরু ও লিয়াকতের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল, পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের সঙ্গে বিভেদ করা হবে না। প্রধানমন্ত্রীর কটাক্ষ, নেহরুর মতো বিরাট ধর্মনিরপেক্ষ, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মানুষ, আপনাদের কাছে সব কিছু, কেন সাধারণ নাগরিক না ব্যবহার করে সংখ্যালঘু শব্দের ব্যবহার করেছিলেন?
কেন নেহরু সংখ্যালঘু বলেছিলেন, তা স্পষ্ট করতে তত্কালীন প্রধানমন্ত্রীর একটি চিঠিও পড়ে শুনিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। অসমের তত্কালীন মুখ্যমন্ত্রীকে ওই চিঠি দিয়েছিলেন নেহরু। সেটি উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,''হিন্দু শরণার্থী ও মুসলিম অনুপ্রবেশকারীর ফারাক করতে হবে আপনাকে। নির্যাতিতরা ভারতে আসছেন, তাঁদের নাগরিকত্ব পাওয়া নিয়ে কোনও সংশয় নেই। আইন অনুকূলে না হলে তা বদলাতে হবে।''
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ১৯৫৩ সালে লোকসভায় নেহরু বলেন, পূর্ব পাকিস্তানে হিন্দুদের উপরে দেশছাড়ার চাপ দেওয়া হচ্ছে। এনিয়ে নথিও রয়েছে। তাহলে কি নেহরুও সাম্প্রদায়িক? আমি জানতে চাই? হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে কি ফারাক করেছিলেন উনি? তিনি কি হিন্দু রাষ্ট্র চেয়েছিলেন?
বিরোধিতার মুখে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে সরকার যে উল্টো পথে চলবে না তা আরও একবার লোকসভায় স্পষ্ট করে দিয়েছেন মোদী। বলেন,''আমি পরিষ্কার বলছি, সিএএ আসছে। ভারতের কোনও নাগরিকের উপরে প্রভাব পড়বে না। সংখ্যালঘুদের স্বার্থেও আঘাত করবে না সিএএ।''
মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথের প্রসঙ্গ টেনে শিখ দাঙ্গা নিয়ে কংগ্রেসের ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ''সারাক্ষণ ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বেড়ায় একটা দল। তাদের কি ১৯৮৪ সালে শিখ হিংসার কথা মনে নেই? অত্যন্ত লজ্জাজনক। দোষীদের শাস্তি দিতে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ১৯৮৪ সালে শিখ দাঙ্গায় জড়িত এক ব্যক্তিকে মুখ্যমন্ত্রীও করে দেওয়া হয়েছে।''
আরও পড়ুন- অনেক টিউবলাইট এমনই হয়, রাহুলকে কটাক্ষ প্রধানমন্ত্রী, হাসির রোল সংসদে