এনসিপি ছাড়লেন সাংমা, আজ বৈঠকে এনডিএ
শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য এনসিপি থেকে পদত্যাগ করলেন পূর্ণ অ্যাজিটট সাংমা। আজ সুব্রহ্মণম স্বামীর সঙ্গে দেখা করে পদত্যাগের কথা জানিয়েছেন লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার। এর ফলে তাঁর রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হওয়া নিয়ে সংশয় অনেকটাই কেটে গেল বলে মনে করা হচ্ছে।
শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য এনসিপি থেকে পদত্যাগ করলেন পূর্ণ অ্যাজিটট সাংমা। আজ সুব্রহ্মণম স্বামীর সঙ্গে দেখা করে পদত্যাগের কথা জানিয়েছেন লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার। এর ফলে তাঁর রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হওয়া নিয়ে সংশয় অনেকটাই কেটে গেল বলে মনে করা হচ্ছে।
এর আগে এনসিপি-র তরফে তার ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল। প্রেসিডেন্টের পদের দৌড় থেকে সরে আসার জন্য এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ারের বার্তা নিয়ে পি এ সাংমার সঙ্গে সাক্ষাত্ করেছিলেন দলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক শরদ পাওয়ার । নাহলে তাকে দল থেকে বহিষ্কারের হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত নবীন পট্টনায়ক, জয়ললিতার প্রত্যক্ষ মদত এবং তেলুগু দেশম, তৃণমূল কংগ্রেস এবং এনডিএ শিবিরের সম্ভাব্য সমর্থনের অঙ্ক কষে দল দ্বিতীয়বারের জন্য দল ছাড়র কথা ঘোষণা করলেন মেঘালয়ের আদিবাসী নেতা।
অবশ্য রাষ্ট্রপতি পদে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নিয়ে এনডিএর ফাটল ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে চলে এসেছে। প্রণব মুখার্জিকে সমর্থনের কথা জানিয়েছে শিবসেনা। শিরোমণি অকালি দল ও জনতা দল (ইউনাইটেড)-এর সমর্থনও কংগ্রেস প্রার্থীরই দিকে। এই ইস্যুতে দ্বিধাবিভক্ত বিজেপিও। এই পরিস্থিতিতে, আজ সন্ধে ৬টায় ফের বৈঠকে বসছে এনডিএ শিবির। এনডিএর পরবর্তী পদক্ষেপ কী হয় সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ঘিরে এনডিএ শিবিরে ফাটল ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে। জোটের অন্যতম পুরনো শরিক শিবসেনা মঙ্গলবার ঘোষণা করে দিয়েছে, রাষ্ট্রপতি পদে তাদের সমস্ত ভোট পড়বে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বাক্সেই। কংগ্রেস নয়, ব্যক্তি প্রণব মুখোপাধ্যায়কেই সমর্থন জানানোর কথা জানিয়েছে শিবসেনা। আর এই ব্যক্তি প্রণব মুখোপাধ্যায়ই ফাটল ধরিয়েছে জাতীয় গণতান্ত্রিক জোটে। জোটের আরেক পুরনো শরিক, শিরোমণি অকালি দলও প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেওয়ার বিপক্ষে। যদিও, রাষ্ট্রপতি পদে কংগ্রেস প্রার্থী প্রণব মুখোপাধ্যায়কে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে ফেলার সিদ্ধান্তে এখনও অনড় বিজেপির একাংশ। কালাম সরে দাঁড়ানোর পরেও, আরএসএস- চাইছে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হোক।
কিন্তু, সেক্ষেত্রে সমর্থন করা হবে কাকে? রাষ্ট্রপতি পদে পি এ সাংমাকেই সমর্থন করা উচিত বলে মনে করছেন আডবাণী-সুষমা স্বরাজরা। যদিও পূর্ণ সাংমাকে নিয়ে আরএসএস-কিছুটা দ্বিধান্বিত। আর বিজেপির অন্য অংশের যুক্তি, পূর্ণ সাংমার থেকে প্রণব মুখোপাধ্যায়কে সমর্থন করাই শ্রেয়। এই তালিকায় সম্প্রতি উঠে এসেছে দক্ষিণের শক্তিশালী লিঙ্গায়েত নেতা বিএস ইয়েদুরাপ্পার নাম। ঘনিষ্ঠমহলে ইয়েদুরাপ্পা বলেছেন, ইউপিএ শরিক এনসিপি-র সদস্য পি এ সাংমাকে সমর্থন করার থেকে প্রধান শরিক কংগ্রেসের প্রার্থী প্রণব মুখোপাধ্যায় অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য।
দ্বিতীয়ত, সাংমার দল এনসিপি-ই তাকে রাষ্ট্রপতি পদে সমর্থন জানায়নি। সেক্ষেত্রে সাংমাকে সমর্থনের প্রস্তাব বিবেচনা হলে, এনডিএ-তে তো বটেই বিজেপির অন্দরেই উঠবে জোরালো আপত্তি। অবশ্য সাংমাকে সমর্থন করলে ইতিবাচক কিছু প্রাপ্তির সুযোগও রয়েছে বিজেপির সামনে। সেক্ষেত্রে পুরোনো শরিক বিজু জনতা দলের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতের পথে অনেকটাই এগোনো যাবে। সুযোগ থাকছে এআইএডিএমকে-সুপ্রিমো জয়ললিতার সঙ্গেও সম্পর্ক ভালো করারও। তবে, তা করতে গিয়ে পুরোনো শরিকদের খোয়ানোর আশঙ্কাও রয়েছে। রাজনৈতিক মহল বলছে, প্রণবের প্রতিদ্বন্দ্বী খুঁজতে গিয়েছে ছত্রভঙ্গ এনডিএ। দিশেহারা বিজেপি। শিবসেনা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউতের মতে, এনডিএ নেতৃত্ব সিদ্ধান্তহীনতার শিকার। ২০১৪-য় দিল্লির তখত দখল করতে হলে, এনডিএ-কে ঐক্যবদ্ধ ভাবে স্থির দিশায় চলতে হবে মতপ্রকাশ করেছেন তিনি।