ফাটলের গাড্ডায় আম আদমি: ভোল পাল্টে কেজরির উপরই ভরসা রাখার পরামর্শ শান্তি ভূষণের
আম আদমি পার্টির অন্দরমহলের কোন্দল এখন প্রকাশ্যে। দলে কেজরিওয়ালের বিরোধীতা করে প্রায় একঘরে দুই নেতা যোগেন্দ্র যাদব ও প্রশান্ত ভূষণ। আগামিকাল দলের জাতীয় এক্সিকিউটিভ কমিটির বৈঠকে এই দু'জনকে দলের রাজনীতি বিষয়ক কমিটি থেকে ছেঁটে ফেলার প্রক্রিয়াও প্রায় সারা। এই সব ডামাডোলের মধ্যেই হঠাৎ করেই নিজের অবস্থান থেকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী প্রশংসা করলেন আপ-এর বর্ষীয়ান এবং কাল পর্যন্ত 'বিদ্রোহী' সদস্য শান্তি ভূষণ।
নয়া দিল্লি: আম আদমি পার্টির অন্দরমহলের কোন্দল এখন প্রকাশ্যে। দলে কেজরিওয়ালের বিরোধীতা করে প্রায় একঘরে দুই নেতা যোগেন্দ্র যাদব ও প্রশান্ত ভূষণ। আগামিকাল দলের জাতীয় এক্সিকিউটিভ কমিটির বৈঠকে এই দু'জনকে দলের রাজনীতি বিষয়ক কমিটি থেকে ছেঁটে ফেলার প্রক্রিয়াও প্রায় সারা। এই সব ডামাডোলের মধ্যেই হঠাৎ করেই নিজের অবস্থান থেকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী প্রশংসা করলেন আপ-এর বর্ষীয়ান এবং কাল পর্যন্ত 'বিদ্রোহী' সদস্য শান্তি ভূষণ।
দলের আহবায়কের পদে কেজরিওয়ালই যোগ্যতম বলে জানিয়েছেন তিনি। যোগেন্দ্র যাদব ও প্রশান্ত ভূষণকে কেজরিওয়ালকে সহায়তা করার পরামর্শ দিলেন তিনি। দলের স্বার্থে এই তিনজনের একত্রে বসে মত বিনিময় প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই আপ-এর বর্ষীয়ান সদস্য প্রকাশ্যে অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে সরিয়ে যোগেন্দ্র যাদবকে দলীয় আহবায়ক করার দাবি করে ছিলেন।
আগে কেজরিওয়ালের বিপক্ষে একনায়কতন্ত্রের যে অভিযোগ উঠেছিল আজ এ কথায় তা উড়িয়ে দিয়েছেন দলের কেজরিপন্থী নেতা কর্মীরা। অলকা লাম্বার মত নেত্রীদের দাবি হাই কমান্ড সংস্কৃতি নেই। আর এক নেতা সরাসরি প্রশান্ত ভূষণের সমালোচনা করে বলেছেন ''প্রশান্তজি আপের অত্যন্ত সম্মানীয় সদস্য। কিন্তু প্রকাশ্যে এই ধরণের মন্তব্য করার আগে ওনার উচিৎ ছিল দলের এক্সিকিউটিভ কমিটির বৈঠকে এই নিয়ে মতামত জানানো।''
কেজরিপন্থীরা উল্টে যোগেন্দ্র যাদব ও প্রশান্ত ভূষণের বিরুদ্ধে কেজরিওয়ালের মানহানি করার চেষ্টার অভিযোগ এনেছেন।
অন্যদিকে, টুইট করে কেজরিওয়াল জানিয়েছেন ''আমি এই জঘন্য বিতর্কে নিজেকে জড়াতে চাই না। যা হচ্ছে তাতে আমার মন ভেঙে গেছে। দিল্লির মানুষ আমাদের উপর যে ভরসা রেখেছিলেন, এই ঘটনায় বিশ্বাসভঙ্গ হয়েছে তাঁদেরও। ''
যোগেন্দ্র যাদব, শান্তি ভূষণ ও প্রশান্ত ভূষণ। আম আদমি পার্টির 'বিক্ষুব্ধ' এই ত্রয়ীর বিরুদ্ধে অস্ত্রে শান দিয়ে প্রস্তুত দলের কেজরিওয়াল পন্থীরা। ইতিমধ্যেই, ঘুরিয়ে আপ-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এই ৩ জনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছেন আপ-এর মুখপাত্র।
অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ আর কিছু ফাঁস হয়ে চিঠি। আর তাতেই ব্যতিব্যস্ত আম আদমি পার্টি। পরিস্থিতি এতটাই জটিল যে তড়িঘড়ি আগামী বুধবার আপ-এর জাতীয় এক্সিকিউট কমিটির বৈঠক বসতে চলেছে। এই বৈঠকে দলের অন্যতম দুই প্রতিষ্ঠাতা সদস্য-নেতা যোগেন্দ্র যাদব ও প্রশান্ত ভূষণের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হবে।
সূত্রে খবর, এই বৈঠকে দলের রাজনীতি বিষয়ক কমিটি থেকে যোগেন্দ্র যাদব ও প্রশান্ত ভূষণকে ছেঁটে ফেলতে প্রস্তুত কেজরিওয়াল অনুগামীরা। সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় এই কমিটি থেকে দলের এই দুই প্রতিষ্ঠাতা সদস্যকে সরিয়ে দিতে বিশেষ বেগ পেতে হবে না তাঁদের।
তবে, দলের মধ্যেই তাঁদের বিরুদ্ধ মতের সংখ্যাগরিষ্ঠতার উপস্থিতি টের পেয়ে ইতিমধ্যেই উল্টো সুরে গাইতে শুরু করে দিয়েছেন যোগেন্দ্র যাদব। গতকাল সন্ধেতে একটি টেলিভিশন চ্যানেলে সাক্ষাৎকারের সময় তিনি বলেছেন কেজরিওয়ালই আপ-এর শীর্ষ নেতা। তাঁকে জাতীয় আহবায়কের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না।
প্রশান্ত ভূষণ এই মুহূর্তে হিমাচল প্রদেশে। তিনি বুধবারের বৈঠকটি পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু এই মুহূর্তে তাঁর বিরুদ্ধে দলে যে পরিমাণ বিক্ষোভ দানা বেঁধেছে, স্বাভাবিকভাবেই প্রশান্ত ভূষণের অনুরোধে কেউই কান দেননি।
সোমবার একটি সাংবাদিক সম্মেলনে আপ-এর দলীয় মুখপাত্র সঞ্জয় সিং জানিয়েছেনঅরবিন্দ কেজরিওয়ালকে জাতীয় আহবায়কের পদ থেকে সড়িয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র গত ছয় থেকে আট মাস থেকেই চলছে।
তিনি সাংবাদিকদের বলেছে ''দলের বরিষ্ঠ নেতারা যখন লাগাতার অরবিন্দ জিকে আক্রমণ করছেন, তাঁর সম্মানহানির চেষ্টা করেন তখন কোনওভাবেই সুষ্ঠ ভাবে দলীয় কাজকর্ম এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।'