‘হার-জিত জীবনেরই অংশ’, নির্বাচনী বিপর্যয়ের পর টুইট নরেন্দ্র মোদীর
পাঁচ রাজ্যের মোট ৬৭৮টি আসনে বিজেপি পেয়েছে ১৯৯টি। শতাংশের বিচারে ৩০ শতাংশ আসনও পায়নি বিজেপি। লোকসভা ভোটের আগে শাসক দলের এই হার স্বাভাবিক ভাবেই নেতৃত্বদের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশ্ন উঠছে এই হারের দায় কার?
নিজস্ব প্রতিবেদন: গুজরাটে পেরেছিলেন। বিহারে পেরেছেন (নীতীশ কুমারের সঙ্গে জোট করে ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি, উপ-মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন সুশীল মোদী)। গোয়াতেও হয়েছে (সংখ্যালঘু হয়েও শরিকদের সমর্থনে সরকার গড়েছে বিজেপি, মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন মনোহর পরিক্কর)। কর্ণাটকেও চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারেননি। এবারও পারলেন না। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিসগড় তিন রাজ্যেই ক্ষমতা হাতছাড়া হয়েছে বিজেপির। বাকি দুই রাজ্যের মধ্যে তেলেঙ্গানা ও মিজোরামে মাত্র একটি করে আসন জিতেছে বিজেপি। পাঁচ রাজ্যে সামগ্রিক ফলের নিরিখে তেলেঙ্গানা বাদ দিয়ে চার রাজ্যেই পরিবর্তন এসেছে। তিন রাজ্যে বিজেপির সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত জিতেছে কংগ্রেস। আর মিজোরামে ক্ষমতায় এসেছে মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট। অন্যদিকে তেলেঙ্গানায় ফের একবার কায়েম হতে চলেছে চন্দ্রশেখর রাওয়ের রাজত্ব।
সব মিলিয়ে পাঁচ রাজ্যের মোট ৬৭৮টি আসনে বিজেপি পেয়েছে ১৯৯টি। শতাংশের বিচারে ৩০ শতাংশ আসনও পায়নি বিজেপি। লোকসভা ভোটের আগে শাসক দলের এই হার স্বাভাবিক ভাবেই নেতৃত্বদের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশ্ন উঠছে এই হারের দায় কার?
আরও জানুন- মরুরাজ্যে লাল গোলাপ ফোটালেন বঙ্গসন্তান
ছত্তিসগড়ের বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী রমন সিং জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্যে দলের বিপর্যয়ের সমস্ত দায়িত্ব নিজের কাঁধেই নিচ্ছেন তিনি। তাঁর নেতৃত্বেই দল লড়েছে এবং হেরেছে। এই দায় তাঁর-ই। মধ্যপ্রদেশের বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীও বলছেন একই কথা। হারের জন্য কোনও ভাবেই বিজেপির ডবল ইঞ্জিন-কে (মোদী-শাহ) দায়ী করা যাবে না। এই হারের দায় তাঁদের নিজের। তিনি সাফ জানিয়েছেন, নরেন্দ্র মোদী বা অমিত শাহ, কোনও নেতাকেই এই বিপর্যয়ের জন্য কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যাবে না।
আরও পড়ুন- রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নয়া গভর্নর হলেন শক্তিকান্ত দাস
যদিও নরেন্দ্র মোদী কিন্তু সে কথা বলছেন না। নেতৃত্বের শীর্ষস্থানে থাকার সুবাদে পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনে দল ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার দায় যে তাঁকেও নিতে হবে সেটা আড়াল করলেন না নরেন্দ্র মোদী। দল জিতলে তাঁর কৃতিত্ব আর হারলে দলের নেতাদের, এই লাইনে হাঁটলেন না তিনি। কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পর এটাই তাঁর কাছে বড় হার। ধাক্কাও বটে। বাগপটু রাজনীতিক সত্যিটা মেনে নিয়েই টুইট করলেন, “হার-জিত জীবনের অংশ।” তবে তিনি জানেন, এই ফলে ভেঙে পড়লে চলবে না। লোকসভা ভোটের আগে দলের কর্মীদের চাঙ্গা করতেই হবে। সে কারেণেই সঞ্জীবনীও দিয়ে রাখলেন তিনি।
The family of BJP Karyakartas worked day and night for the state elections. I salute them for their hardwork.
Victory and defeat are an integral part of life.
Today’s results will further our resolve to serve people and work even harder for the development of India.
— Narendra Modi (@narendramodi) December 11, 2018
ম্যাচ হারলেও তাঁর দল মরণপণ লড়াই করেছে। আর সেই লড়াইকে কুর্ণিশ জানিয়েছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। টুইটে তিনি লিখেছেন, “প্রতিটি বিজেপি কর্মী ও তাদের পরিবার দিন-রাত পরিশ্রম করেছে। তাদের এই কঠোর পরিশ্রমকে আমি স্যালুট করছি। ” নির্বাচনী ফল নিয়ে ময়নাতদন্তে বসার আগেই তিনি জনসমক্ষে জানিয়ে দিয়েছেন, এই ফল আগামীতে তাঁদের আরও ভাল কাজ করার পথ দেখাবে। মানুষের স্বার্থে এবং ভারতের উন্নতিতে আরও কঠোর পরিশ্রম করবে তাঁর দল, একথাও বলেছেন তিনি।