পুরুলিয়ায় উদ্ধার AK সিরিজের রাইফেল ও রকেট লঞ্চার নিয়ে জোরাল হচ্ছে রহস্য

দুজন অস্ত্র ব্যবসায়ীকে জেরা করে উদ্ধার হওয়া এ কে সিরিজের রাইফেল ও রকেট লঞ্চার নিয়ে রীতিমতো জোরাল হয়ে উঠেছে রহস্য। কোথা থেকে এই অস্ত্র এল পুরুলিয়ায়?  এগুলি কি অস্ত্র বর্ষণের সময় থেকেই রয়ে গেছে? না কি এরসঙ্গে রয়েছে মাওবাদী যোগ? সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই তদন্ত শুরু করেছে CID।

Updated By: Aug 6, 2016, 05:49 PM IST
পুরুলিয়ায় উদ্ধার AK সিরিজের রাইফেল ও রকেট লঞ্চার নিয়ে জোরাল হচ্ছে রহস্য

ওয়েব ডেস্ক: দুজন অস্ত্র ব্যবসায়ীকে জেরা করে উদ্ধার হওয়া এ কে সিরিজের রাইফেল ও রকেট লঞ্চার নিয়ে রীতিমতো জোরাল হয়ে উঠেছে রহস্য। কোথা থেকে এই অস্ত্র এল পুরুলিয়ায়?  এগুলি কি অস্ত্র বর্ষণের সময় থেকেই রয়ে গেছে? না কি এরসঙ্গে রয়েছে মাওবাদী যোগ? সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই তদন্ত শুরু করেছে CID।

মাটি খুঁড়ে মিলল একে সিরিজের রাইফেল, রকেট লঞ্চার, রকেট এবং বেশ কিছু ম্যাগাজিন। কিন্তু কী ভাবে এই অস্ত্রের হদিশ পেল পুলিস?

গত ২৪ জুলাই কোটশিলার খটঙ্গা এলাকা থেকে ২অস্ত্র ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে পুলিস। ধৃত রাধু প্রামাণিক এবং জালালুদ্দিন আনসারির কাছ থেকে উদ্ধার হয় কার্বাইন ও বুলেট। এই দুই অস্ত্র ব্যবসায়ীকে জেরা করেই খটঙ্গার শ্মশানের পাশ থেকে মিলল অস্ত্র গুলি। মাটির নিচে, প্লাস্টিকে মুড়িয়ে রাখা ছিল একে সিরিজ রাইফেল, রকেট লঞ্চার, রকেট এবং ম্যাগাজিন। কিন্তু এই অত্যাধুনিক অস্ত্রগুলি পুরুলিয়ার এই গণ্ডগ্রামে এল কী ভাবে? একাধিক সম্ভাবনার কথা উঠে আসছে তদন্তে।

যে AK সিরিজ রাইফেল মিলেছে তা বেশ কিছু দিন আগেকার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই রাইফেলটি ইম্প্রোভাইজও হতে পারে। আর এখান থেকেই প্রশ্ন উঠছে তাহলে কি পুরুলিয়ায় অস্ত্র বর্ষণের সময় ফেলা হয়েছিল এগুলি? উদ্ধার হওয়া বন্দুকের সঙ্গে ৯৫-র অস্ত্র বর্ষণের সময়কার রাইফেলের মিল থাকলেও কিছু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

অস্ত্র বর্ষণের রাইফেলগুলির বাট ছিল কাঠের বাট। উদ্ধার হওয়া রাইফেলগুলিতে এক্সটেন্ডেড লোহার বাট লাগানো হয়েছে। সম্ভবত এগুলি পরে লাগানো হয়েছে। অনেকে বলছেন সেসময় কিছু অস্ত্র গ্রামবাসীরা লুকিয়ে ফেলেছিলেন। ব্যবহার করার পর তার বাট বদল করা হয়েছে। অস্ত্র বর্ষণ মামলার শীর্ষ তদন্তকারী আধিকারিকরা বলছেন, রিভলফার, অ্যাসল্ট রাইফেল ফেলা হলেও রকেট লঞ্চার ও রকেট সেসময় ফেলা হয়নি।

তাহলে এই অস্ত্র এল কীভাবে?  উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলিতে যে ভাবে নাম্বারিং করা আছে, তা দেখে মনে হচ্ছে এগুলি কোনও দেশের অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি থেকে পাওয়া। রকেট লঞ্চার গুলির সঙ্গে নাগাল্যান্ড ও মনিপুরের জঙ্গিদের ব্যবহার করা রকেট লঞ্চারের মিল রয়েছে। তদন্তে পুলিসের প্রাথমিক দাবি, ধৃত দুজনের কোনও মাওবাদী যোগ নেই। তবে লালগড় আন্দোলনের সময় কোটশিলার এই এলাকা মাওবাদীদের ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত ছিল।

কাছেই ঝাড়খণ্ড সীমান্ত। সেখানে থেকে এই এলাকায় এখনও মাওবাদীদের যাতায়াত রয়েছে। এ রাজ্যে মাওবাদীদের এরকম রকেট লঞ্চার ব্যবহারের উদাহরণ আগে মেলেনি। মাওবাদী আন্দোলন পরবর্তী সময়ে যে অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে সেখানেও রকেট লঞ্চার মেলেনি। তাহলে কী সম্প্রতি মাওবাদীরা এই রকেট লঞ্চার রেখে গেছে? সে সম্ভাবনাও ওড়ানো যাচ্ছে না। বেলপাহাড়িতেও দুটি তাজা ল্যান্ড মাইন উদ্ধার করেছে ২০৭ কোবরা বাহিনী। ফলে এই ঘটনার সঙ্গে মাওবাদীদের লিঙ্কের সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

.