দল ছাড়লেন ইয়েদুরাপ্পা
দল ছাড়ার দিন ঘোষণা করেছিলেন গত মাসেই। অবশেষে বিজেপি থেকে পাকাপাকি ভাবে ইস্তফা দিলেন বিএস ইয়েদুরাপ্পা। বিজেপি সভাপতি নিতিন গড়করিকে শুক্রবার সকালেই ফ্যাক্স করে নিজের পদত্যাগ পত্র পাঠিয়ে দেন। একই সঙ্গে বর্ষীয়ান এই নেতা চোখের জলে বিজেপির সঙ্গে দীর্ঘ ৪০ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করলেন। আজ সকালে কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নাটকীয় ভাবে বেঙ্গালুরুর ফ্রিডম পার্ক থেকে এক কিলোমিটার পায়ে হেঁটে বিধান সভায় স্পিকারকে এমএলএ হিসাবেও তাঁর পদত্যাগ পত্র জমা দিয়ে আসেন।
দল ছাড়ার দিন ঘোষণা করেছিলেন গত মাসেই। অবশেষে বিজেপি থেকে পাকাপাকি ভাবে ইস্তফা দিলেন বিএস ইয়েদুরাপ্পা। বিজেপি সভাপতি নিতিন গড়করিকে শুক্রবার সকালেই ফ্যাক্স করে নিজের পদত্যাগ পত্র পাঠিয়ে দেন। একই সঙ্গে বর্ষীয়ান এই নেতা চোখের জলে বিজেপির সঙ্গে দীর্ঘ ৪০ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করলেন। আজ সকালে কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নাটকীয় ভাবে বেঙ্গালুরুর ফ্রিডম পার্ক থেকে এক কিলোমিটার পায়ে হেঁটে বিধান সভায় স্পিকারকে এমএলএ হিসাবেও তাঁর পদত্যাগ পত্র জমা দিয়ে আসেন।
দলীয় সহকর্মীদের বিশ্বাসঘাতকতাকেই দল ছাড়ার কারণ হিসাবে দায়ী করেছেন প্রবীণ এই লিঙ্গায়ত নেতা। সরাসরি কারও নাম না করেই তিনি বলেছেন ভগ্ন হৃদয়ে বাধ্য হয়েই তিনি দল ত্যাগ করলেন। এমনকী তিনি এও জানিয়েছেন দল তাঁকে পিছন থেকে ছুরি মেরেছে। অবশ্য বিজেপি থেকে সরে এলেও এখনই মোটেও তিনি রাজনীতি থেকে সরে আসছেন না। আগামী ৯ ডিসেম্বর তাঁর নতুন দল কর্নাটক জনতা দলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে বলেও খবর পাওয়া গিয়েছে। আসছে বছর কর্নাটকের বিধানসভা নির্বাচনে যে তাঁর দল সর্বশক্তি নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে প্রস্তুত তারও স্পষ্ট বার্তা মিলেছে ইয়েদুরাপ্পার বক্তব্যে।
বিএস ইয়েদুরাপ্পার হাত ধরেই দক্ষিণ ভারতে বিজেপির রাজ্য ক্ষমতায় পদার্পণ। কিন্তু গত এক বছর ধরেই দলের সঙ্গে ইয়েদুরাপ্পার সম্পর্ক তলানিতে এসে থেকেছিল। বেআইনি খনি কাণ্ডে তাঁর নাম জড়িয়ে যাওয়ায় দলের অভ্যন্তরেই ইয়েদুরাপ্পার মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে দ্রুত অপসারণের দাবি ওঠে। ঘরে বাইরে যৌথ চাপে কিছুটা ব্যাকফুটে গিয়েই মুখ্যমন্ত্রিত্ব ত্যাগ করেন তিনি। প্রশাসনিক পদ খোয়ালেও এই বর্ষীয়ান নেতা দলের রাজ্য সভাপতি হিসাবে থেকে যেতে চান। বিভিন্ন ভাবে দলের উপর চাপও তৈরি করছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। কিন্তু এর মধ্যেই বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে জড়িয়ে পরেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তও শুরু হয়। এই ডামাডোলের বাজারে নিজেদের ভাবমূর্তি বজায় রাখার জন্য বিজেপির তরফ থেকে তাঁর রাজ্য সভাপতি থাকার দাবিও খারিজ করা হয়।
এর আগেও দলে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার অভিযোগ উঠেছিল ইয়েদুরাপ্পার বিরুদ্ধে। সব মিলিয়ে সর্ব ভারতীয় স্তরে দলে কিছুটা এক ঘরেই হয়ে যান এই নেতা। তবে বিজেপি থেকে তাঁর বেশ কিছু দাবি মেনেও নেওয়া হয়। যেমন তাঁর পছন্দের প্রার্থীকেই কর্নাটকের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে বেছে নেওয়া হয়। তবে তাতেও কার্যত চিঁড়ে ভেজেনি। একাধিক বার দল ছাড়ার হুমকি দিলেও দলীয় অবস্থানের মূলগত কোনও পরিবর্তন হয়নি। এরপরই আরও `বিদ্রোহী` হয়ে ওঠেন তিনি। তাঁর দল ছাড়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ছিল শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা। আজ সেই অপেক্ষারই আবসান ঘটল।
তবে ইয়েদুরাপ্পা জানিয়েছেন কর্নাটকের ১২১ জন বিজেপি বিধায়কের মধ্যে ৫০ জনই আদর্শগত ভাবে তাঁর সঙ্গেই রয়েছেন। তিনি এও জানিয়েছেন কাউকেই নিজে থেকে দলত্যাগ করতে বলেননি তিনি। বরং তিনি তাঁর সমর্থনকারী মন্ত্রী ও বিধায়কদের এখনই দল ত্যাগ না করার পরামর্শই দিয়েছেন।
অন্যদিকে, কর্নাটকের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী জগদীশ শেট্টার দিল্লিতে বিজেপির হাইকম্যান্ডের সঙ্গে ইতিমধ্যেই দেখা করেছেন। ইয়েদুরাপ্পার পদত্যাগ কর্নাটকে বিজেপির ক্ষমতার উপর খুব একটা প্রভাব ফেলবে না বলে তিনি দলীয় নেতাদের আশ্বস্ত করতে চেয়েছেন। কয়েক মাস পরেই কর্নাটকে বিধানসভা নির্বাচন। এই রাজ্যে ইয়েদুরাপ্পার ক্ষমতা সম্পর্কে বিজেপির উপরমহল যথেষ্ট সচেতন। তাই শেট্টারের আশ্বাসবাণী তাঁদের কতখানি আশ্বস্ত করতে পেরেছে আসছে বছর মে মাসেই তার সঠিক উত্তর পাওয়া যাবে।