Dhananjay Bhattacharya: অসাধারণ প্রতিভাবান এই শিল্পীকে ভুলেই গিয়েছে বাঙালি!

| Dec 27, 2021, 15:39 PM IST
1/6

অপরাজেয় কথাশিল্পী

ছোট্ট ধনঞ্জয়ের স্কুলবেলার ঘটনা। পড়তেন বালির এক স্কুলে। স্কুলে টিফিনের সময় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় গান হত। একদিন গাইছেন কৃষ্ণচন্দ্র দে'র 'স্বপন যদি মধুর এমন'। গান পৌঁছল মাস্টারমশাইদের কানে। রাগ করলেন না তাঁরা। বরং পরে তাঁরাই উদ্যোগ নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ধনঞ্জয়কে গাইবার ব্যবস্থা করে দিলেন। এসে গেল স্কুলের বার্ষিক অনুষ্ঠান। সেখানে ছোট্ট ধনঞ্জয় গাইলেন— 'পাগলা মনটারে তুই বাঁধ', 'ভাইয়ের দোরে ভাই কেঁদে যায়'। দর্শকের আসনে তখন অপরাজেয় কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র। গান শেষে আসন ছেড়ে উঠে তিনি এসে আশীর্বাদ করলেন বালককে। হাতে দিলেন পাঁচ টাকার একখানি নোট!

2/6

দরবারী কানাড়া

নিজের গান নিয়ে এক অদ্ভুত ঘটনা একবার শুনিয়েছিলেন ধনঞ্জয়। সুন্দরবনে শিকারি বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিলেন ধনঞ্জয়। জ্যোৎস্না রাতে হঠাৎই দরবারী কানাড়ায় গান ধরলেন। গান চলার কিছু পরে দেখেন তাঁদের নৌকোর সামনে হরিণের পাল স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে। ধনঞ্জয় সেদিন বন্ধুদের অনুরোধ করলেন অন্তত সে রাতে যেন কোনও পশু বধ না করা হয়।  

3/6

সুরের সুরধুনী

রাগরাগিণীর মধ্যে কোনটি প্রিয়, জানতে চাইলে ধনঞ্জয় বলতেন-- ভৈরবী। কিন্তু তাঁর শ্রোতা মাত্রেই জানেন, তাঁর কণ্ঠে সুরের সুরধুনী। সব রাগেই সব সুরেই তাঁর অপরিসীম দখল। বিভিন্ন অঙ্গের সঙ্গীতে তাঁর প্রতিভার বিপুল বিকাশ। তিনি বাঙালির সঙ্গীতবোধকে অনেক দূর প্রসারিত করে দিলেন। কিন্তু কোনও ভাবেই বম্বে যেতে চাইলেন না। তাঁর অনন্য প্রতিভা থেকে বঞ্চিত থাকল মুম্বইয়ের সঙ্গীতজগৎ, বৃহত্তর ভারতের শ্রোতা।   

4/6

'ঝনন ঝনন বাজে'

সলিল চৌধুরী নিজে বহুবার বলেছেন। রফি, লতা, শচীনকর্তাও একাধিকবার বিভিন্ন সময়ে বলেছেন। কিন্তু তাতেও বম্বে যাননি ধনঞ্জয়। একবার সলিল চৌধুরী দুটি গান তৈরি করলেন ধনঞ্জয়ের জন্য। একটি রাগাশ্রয়ী, অন্যটি কাব্যগীতি। ধনঞ্জয়ের অসাধারণ কণ্ঠগুণে ও রসবোধে গান দুটি বাঙালির মনের মণিকোঠায় জায়গা পেল—'ঝনন ঝনন বাজে', 'অন্তবিহীন এই অন্ধরাতের শেষ'। সলিল চৌধুরী এমনও বলতেন-- ধনঞ্জয় মহম্মদ রফি, তালাত মামুদের সমান, কিছু ক্ষেত্রে তাঁদের চেয়েও বড়।

5/6

রি-টেক

কাননদেবীর নিজস্ব কোম্পানি 'শ্রীমতী পিকচার্স'। 'শ্রীমতী পিকচার্সে'র প্রায় সব ছবিতেই ধনঞ্জয় ভট্টাচার্যের গান। সেবার 'মেজদিদি' ছবির গানের রেকর্ডিং চলছে। গান সেই বিখ্যাত-- 'জনম মরণ পা ফেলা আর'। ফ্লোরে ঢুকলেন কাননদেবী। কালীপদ সেন সঙ্গীত পরিচালক। রেকর্ডিং হল। কালীপদবাবু বললেন, সব ঠিক আছে তো দিদি? কাননদেবী চুপ করে বসে। ধনঞ্জয়ও উঠে এসে জিজ্ঞেস করলেন, কোনও অসুবিধে হল? ধনঞ্জয় ভট্টাচার্যকে সে দিন কাননদেবী বললেন-- আরেক বার যদি গাওয়া যেত…। ধনঞ্জয়কে কখনও রি-টেক দিতে হয়নি। সেই ধনঞ্জয় ফের গাইলেন। স্তম্ভিত কাননদেবী। কোনটা বেশি ভালো হল বুঝতে পারলেন না! বললেন, একই রকম তো!

6/6

বিস্মৃত

এমন এক শিল্পীকে প্রায় ভুলতেই বসেছে বাঙালি। আজ, এই ২৭ ডিসেম্বর তাঁর মৃত্যুদিন। কোয়ালিটি মিউজিক শুনতে গেলে অবশ্য শুনতেই হবে ধনঞ্জয়কে। ফিল্ম সঙ, বেসিক ডিস্ক, শ্যামাসঙ্গীত, সেমি ক্ল্যাসিকাল, নজরুলগীতিতে তাঁর বিরল প্রতিভার স্বাক্ষর ছড়িয়ে।