আনন্দ-গেলফাঁ প্রথম টাইব্রেকার ড্র হল ৩২ চালে
র্যাপিড চেস-এ তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব ইতিমধ্যেই প্রতিষ্ঠিত বিশ্ব দাবা দুনিয়ায়। সেই নজির কী অক্ষুণ্ণ রাখতে পারবেন বিশ্বনাথন আনন্দ? আপাতত বিশ্বের তামাম দাবাপ্রেমীর সামনে প্রশ্ন সেটাই! ইজরায়েলি সুপার গ্র্যান্ডমাস্টার বরিস গেলফাঁর বিরুদ্ধে দাবা বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের টাইব্রেকার-যুদ্ধে নামার আগে আনন্দের সামনে সবথেকে বড় সুবিধা প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে র্যাপিড চেস-এ তাঁর দুরন্ত ট্র্যাক রেকর্ড। সম্ভবত সবথেকে বড় দুশ্চিন্তারও!
র্যাপিড চেস-এ তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব ইতিমধ্যেই প্রতিষ্ঠিত বিশ্ব দাবা দুনিয়ায়। সেই নজির কি অক্ষুণ্ণ রাখতে পারবেন বিশ্বনাথন আনন্দ? ৩২ চালের মাথায় ইজরায়েলি সুপার গ্র্যান্ডমাস্টার বরিস গেলফাঁর সঙ্গে তাঁর বিশ্ব দাবা খেতাবি লড়াইয়ের প্রথম টাইব্রেকার ম্যাচ ড্র হওয়ার পর ভারতীয় দাবাপ্রেমী মহলে প্রশ্নটা কিন্তু উঠেই গেল!
টাইব্রেকার-যুদ্ধে আনন্দের সামনে সবথেকে বড় সুবিধা ছিল প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে র্যাপিড চেস-এ তাঁর দুরন্ত ট্র্যাক রেকর্ড। কিন্তু বিশ্ব দাবার ইতিহাস বলছে, সংখ্যাতত্ত্বের নিরিখে পিছিয়ে থাকা প্রতিপক্ষরা প্রায়শই এরকম ক্ষেত্রে মরিয়া মরণকামড় দিয়ে থাকেন। যেমন ১৯৯৪ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন মিটে দিয়েছিলেন গাতা কামাস্কি। রুশ বংশোদ্ভূত মার্কিন বিস্ময়বালকের কাছে হেরে বিদায় নিতে হয়েছিল তামিল 'জিনিয়াস'কে। এমনকী ধীরগতির খেলোয়াড় হিসেবে পরিচিত আনাতোলি কারপভও তাঁর কেরিয়ারের শেষ সময়ে, ১৯৯৮ সালের ফিডে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের (তখন গ্যারি কাসপারভের নেতৃত্বে চলছিল প্রফেশন্যাল চেস অ্যাসোসিয়েশন-এর সমান্তরাল দাব বিশ্বখেতাব) লড়াইয়ে হারিয়েছিলেন তরুণ-তুর্কী আনন্দকে। আজ গেলফাঁর খেলার মধ্যেই দেখা গেল সেই হার না মানা মনোভাব।
২০০৩ সালের বিশ্ব দাবায় ফর্মের তুঙ্গে থাকা ভ্লাদিমির ক্র্যামনিকের বিরুদ্ধে র্যাপিড চেস-এ ভিশি'র চমকপ্রদ জয়কে এখনও ভোলেনি দাবা-দুনিয়া। ভোলেনি প্রবল চাপের মুখে দাঁড়িয়ে তাঁর চমকপ্রদ প্রত্যাঘাতের ক্ষমতাকে। কিন্তু বুধবারের বারবেলায় মস্কোর ২৫-বি পার্ক স্ট্রিটে গেলফাঁর সঙ্গে ২৫ মিনিটের দাবা-দ্বৈরথে অনেকটাই অতীতের ছায়া বলে মনে হল আনন্দকে। গেলফাঁর বিরুদ্ধে তাঁর ৩৫-১১ রেকর্ড বোধহয় ভুলে গিয়েছিলেন তিনি। তাই ১২ গেমের লড়াইয়ে তূল্যমূল্য লড়াইয়ের শেষে ৬-৬-এর অমীমাংসিত ফলের পুনরাবৃত্তি দেখা গেল এখানেও।
তবে দাবা বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারণা, টাইব্রেকারের প্রথম ম্যাচে কালো ঘুঁটি নিয়ে খেলতে নামায় অতিরিক্ত ঝুঁকি নেননি আনন্দ। প্রাথমিকভাবে আক্রমণাত্মক খেলে কিছুটা সুবিধাজনক জায়গায় গিয়েও শেষ পর্যন্ত স্বভাববিরুদ্ধ সংযম দেখিয়েছেন। ৪ ম্যাচের র্যাপিড টাইব্রেকারের বাকি ৩টি ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বীকে পিছনে ফেলে বিশ্বনাথন আনন্দ চতুর্থবার বিশ্বখেতাব করতে পারবেন বলেই মনে করছেন তাঁরা।
আর তা না হলে? শুরু হবে ১৫ মিনিটের ব্লিত্জ চেস! প্রথমে ২, আর তাতে মীমাংসা না হলে আরও ৫টি গেম। রেকর্ড বলছে, ব্লিত্স চেস-এ বরিস গেলফাঁর বিরুদ্ধে চৌষট্টি ঘরের ৭টি যুদ্ধের ৩টিতেই জিতেছেন ভারতীয় দাবা তারকা। হারেননি একটিতেও।