‘আমাকে আশীর্বাদ করুন, আমি দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাব’
ফিনল্যান্ডে সোনা জয়ের পর হিমা ঈশ্বরের কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, "এই জয় সব সাফল্যের উর্দ্ধে। ঈশ্বর চেয়েছেন বলেই আমি বিশ্বজয়ী হয়েছি"।
নিজস্ব প্রতিবেদন: “আপনারা যখন ঘুমিয়ে ছিলেন, আমি তখন বিশ্বজয় করেছি”। হিমার এই সংলাপ ভারতীয় ক্রীড়া ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ সংলাপ হয়ে থাকার মতোই।
রাশিয়ায় তখন ফুটবল যুদ্ধ চলছে! অবিরাম, অবিশ্রান্ত ফুটবলে শিল্পসৃষ্টি করছিলেন পেরিসিচ, মদ্রিচ, রাকিতিচরা। শেষ প্রদীপের মত টিমটিম জ্বলছিল হ্যারি কেন। ব্রিটেনে আবার তখন চলছে ভারতের ‘স্পিন বিপ্লব’। বিরাট, রোহিত, কুলদীপরা তখন হোয়াটসঅ্যাপ স্টেটাস আর ফেসবুকের দেওয়ালে দেওয়ালে দখল নিয়েছেন। এদিকে এলিট উইম্বলডনে ‘মাস্টারস্ট্রোক’ দিয়ে আইসিসি তালিকায় নাম তুলে ফেলেছেন রজার ফেডারার। ফুটবল-ক্রিকেট-টেনিস-এ ক্লান্ত ভারত তখন ঢুলুঢুলু চোখে সবে শয়ন নিয়েছে। হিমা তখনই শুরু করেছেন তাঁর দৌড়।
আরও পড়ুন- হিমার হাত ধরে ৪০০ মিটার দৌড়ে প্রথম সোনা জয় ভারতের
৪০০ মিটারের লম্বা দৌড়। অসমের হিমা ছুটছেন। হিমা যত গতি বাড়াচ্ছেন ততই যেন বাড়ছে তাঁর দ্যুতি। শেষ ৮০ মিটার হিমা যেন স্ফুলিঙ্গ। দৌড় শেষ করলেন ৫১.৪৬ সেকেন্ডে। বাকিটা ইতিহাস।
এই প্রথম ৪০০ মিটারের কোনও আন্তর্জাতিক ইভেন্টে সোনা জিতল ভারত। আর এই বর্তমান থেকেই আরও আরও ইতিহাস তৈরির জন্য স্বপ্ন দেখছেন হিমা। অসমের ‘ঢিং এক্সপ্রেস’ জাতির উদ্দেশে জানিয়েছেন, “আমাকে আশীর্বাদ করুন, আমি দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাব”।
আরও পড়ুন- কে এই হিমা দাস? জেনে নিন ইতিহাসে নাম তোলা মেয়ের কথা
ফিনল্যান্ডে সোনা জয়ের পর হিমা ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, "এই জয় সব সাফল্যের ঊর্দ্ধে। ঈশ্বর চেয়েছেন বলেই আমি বিশ্বজয়ী হয়েছি"।
মেয়ের এই বিশ্বজয়ী দৌড় দেখার জন্য রাত জেগেছিল তাঁর পরিবার। পদক জয়ের পর ভিক্ট্রি স্ট্যান্ড-এ দাড়িয়ে হিমা যখন অঝোরে কাঁদছেন, চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি তাঁর বাবা রণজিত্ দাসও। হিমাকে বলেছিলেন, তাঁর দৌড় দেখার জন্য পরিবারের সবাই জেগে থাকবে। রাত জাগা যে বিফলে যায়নি, তাতে খুশি অসমের নগাঁওয়ের দাস পরিবার।
আরও পড়ুন- বাংলার 'দ্রোণাচার্য'র হাতেই তৈরি ইতিহাস গড়া হিমা দাসের 'গুরু'