East Bengal FC, ISL 2022-23: জঘন্য রক্ষণের জন্য ইনজুরি টাইমে গোল হজম, যুবভারতীতেও মশাল জ্বালাতে ব্যর্থ কনস্ট্যানটাইনের লাল-হলুদ
East Bengal FC, ISL 2022-23: কেরালার হলুদ ঝড়ের কাছে উড়ে যাওয়ার পরেও শিক্ষা নিল না ইস্টবেঙ্গল। চলতি আইএসএল-এর প্রথম ম্যাচ দুর্বল এবং জঘন্য রক্ষণের জন্য হেরেছিল লাল-হলুদ। পাঁচদিনের ব্যবধানে দ্বিতীয় ম্যাচেও রক্ষণের বেহাল দশা ফের দেখা গেল। কোচির পর এবার ঘরের মাঠ যুবভারতীতে ক্রীড়াঙ্গন, স্টিফেন কনস্ট্যানটাইনের স্বপ্নের লাল-হলুদ এখনও কিন্তু মশাল জ্বালাতে ব্যর্থ।
এফসি গোয়া: ২ ('৭ ব্র্যান্ডন ফার্নান্ডেজ, '৯৪ এডুয়ার্দো বেদিয়া )
ইস্টবেঙ্গল এফসি : ১ ('৬৩ ক্লেইটন সিলভা)
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: চলতি আইএসএল-এ (ISL 2022-23) কেরালা ব্লাস্টার্সের (Kerala Blasters FC) পর এবার এফসি গোয়া (FC Goa)। ফের একবার জঘন্য রক্ষণের জন্য শেষ ইনজুরি টাইমে গোল হজম। খেলা শেষের মাত্র ১০ সেকেন্ড আগে গোয়ার এডুয়ার্দো বেদিয়ার (Edu Bedia) গোলে ড্র করার স্বপ্ন ভেঙে গেল স্টিফেন কনস্ট্যানটাইনের (Stephen Constantine)। খেলার সাত মিনিটে পিছিয়ে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল এফসি (East Bengal FC)। এরপর পেনাল্টি বিতর্ক। যদিও দ্বিতীয়ার্ধে সেই পেনাল্টি থেকেই গোল করে সমতা ফেরান ক্লেইটন সিলভা (Cleiton Silva)। তবে মনঃসংযোগ ও বোঝাপড়ার অভাবে ৯৪ মিনিটে গোল হজম করার জন্য এক পয়েন্ট মাঠে ফেলে এল লাল-হলুদ।
কেরালার হলুদ ঝড়ের কাছে উড়ে যাওয়ার পরেও শিক্ষা নিল না ইস্টবেঙ্গল। চলতি আইএসএল-এর প্রথম ম্যাচ দুর্বল এবং জঘন্য রক্ষণের জন্য হেরেছিল লাল-হলুদ। পাঁচদিনের ব্যবধানে দ্বিতীয় ম্যাচেও রক্ষণের বেহাল দশা ফের দেখা গেল। কোচির পর এবার ঘরের মাঠ যুবভারতীতে ক্রীড়াঙ্গন, স্টিফেন কনস্ট্যানটাইনের স্বপ্নের লাল-হলুদ এখনও কিন্তু মশাল জ্বালাতে ব্যর্থ। 'সৌজন্যে' খারাপ রক্ষণ। এবং ফুটবলারদের মধ্যে বোঝাপড়া। তবুও ভাগ্যিস ক্লেইটন সিলভা ছিলেন। প্রথমার্ধে তাঁকে বক্সে ফাউল করা হলেও, পেনাল্টি পায়নি লাল-হলুদ। তবে ব্রাজিলের সেই স্ট্রাইকারের পা থেকেই এসেছিল গোল। কিন্তু শেষরক্ষা হল না।
দু'বারের ভারতীয় দলের কোচ ফুটবলারদের সঙ্গে মাঠে নেমেই বুঝে গিয়েছিলেন যে এই দল নিয়ে বেশিদূর এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। অ্যাওয়ে হোক কিংবা হোম ম্যাচ। সাদা জার্সি হোক কিংবা চিরাচরিত লাল-হলুদ জার্সি। জার্সির রঙের বদল হলেও ফুটবলারদের খেলার মান একইরকম আছে। আর তাই হয়তো আইএসএল-এর দ্বিতীয় ও ঘরের মাঠে প্রথম ম্যাচে খেলতে নামার আগেই ব্রিটিশ কোচ বলে দিয়েছিলেন যে, 'আমাদের সঙ্ঘবদ্ধ হতে হবে। শক্তিশালী হতে হবে এবং ছোটখাটো ভুল করা চলবে না। আমাদের দলের ছেলেদের অনেক কিছু প্রমাণ করার আছে। বিশেষ করে ভারতীয়দের। যাদের অন্য সব ক্লাব বাতিল করে দেওয়ার পরে তারা এই ক্লাবে যোগ দিয়েছে। তাই প্রত্যেকে প্রতি ম্যাচে নিজেদের প্রমাণ করার সুযোগ পাবে।'
পড়ুন, বাঙালির প্রাণের উৎসবে আমার 'e' উৎসব। Zee ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল শারদসংখ্যা
কিন্তু সেটা হচ্ছে কোথায়! খেলার বয়স তখন সবেমাত্র ৭ মিনিট। শহর জুড়ে বৃষ্টির জন্য গ্যালারির অনেকটা জায়গা তখনও বেশ ফাঁকা। লাল-হলুদ সমর্থকরা চেয়ারে বসার আগেই প্রথম ধাক্কা খেল লাল-হলুদ। দলের অধিনায়ক ইভান গঞ্জালেজের জঘন্য রক্ষণের জন্য গোল করে গেলেন গোয়ার অধিনায়ক ব্র্যান্ডন ফার্নান্ডেজ।
এরপর প্রথমার্ধের বাকি সময় লাল-হলুদ বেশ কয়েকবার সমতা ফেরানোর চেষ্টা করেছিল। তেমনই ব্যবধান বাড়ানোর জন্য বারবার আক্রমণ চালিয়েছে গোয়া। তবে লাভ হয়নি। এরইমধ্যে ২৯ মিনিটে মহা বিতর্ক তৈরি হল। বল নিয়ে ঢোকার সময় বক্সের ভিতরে ইস্টবেঙ্গলের ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার ক্লেটন সিলভাকে ফাউল করেন এইবান ডিহলিং। যদিও ফ্রি-কিকের সিদ্ধান্তেই অনড় থাকলেন রেফারি। কাজে এল না ইস্টবেঙ্গল খেলোয়াড়দের প্রতিবাদ। ২৯ মিনিট থেকে ৩৬ মিনিটের একটা সময় ইস্টবেঙ্গল চাপ বাড়ালেও বাকি সময়টা কাঁপল লাল-হলুদ রক্ষণ!
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই লাল-হলুদ আগ্রাসী মেজাজে খেলতে শুরু করে। ৫৩ মিনিটে বাঁ দিক থেকে ক্রস ইস্টবেঙ্গলের জেরির। বল ক্লিয়ার গোয়ার। বলের নাগাল পেলেন না ক্লেইটন। কর্নার ইস্টবেঙ্গলের। গোল হল না। তবে ইতিবাচক মুভ ইস্টবেঙ্গলের। এর চার মিনিট পর গোল করার সেরা সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন ভিপি সুহের। মাঝমাঠে সুহের যখন বল পান, তখন তাঁর সামনে অনেকটা ফাঁকা জমি ছিল। একাই উঠে এসে বক্সের মাথায় অ্যালেক্সকে পাস দিলে, বল রিসিভ করে ভলি মারলেন ইস্টবেঙ্গলের নয়া খেলোয়াড়। কিন্তু সেই শট গোলপোস্টের উপর দিয়ে বল বেরিয়ে গেল।
লাল-হলদের পরপর আক্রমণে তখন গোয়া চাপে। ঠিক এমন সময় ৬২ মিনিটে দুর্দান্ত আক্রমণ ইস্টবেঙ্গলের। ফলস্বরূপ পেনাল্টি পেল লাল-হলুদ। জেরি ফুল ফোটাচ্ছেন ইস্টবেঙ্গলে। বাঁ উইং থেকে দুর্দান্ত থ্রু পাস জেরির। পায়ে বল নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন সুহের। তাঁকে বক্সের মধ্যে ফেলে দেন ধীরজ সিং। সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন রেফারি হরিস কুণ্ডু। ৬৩ মিনিটে আবেগের বিস্ফোরণ সল্টলেক স্টেডিয়ামে। ঠান্ডা মাথায় নিখুঁতভাবে পেনাল্টি থেকে গোল করে সমতা ফেরালেন ক্লেইটন সিলভা। বাকি সময় দুই দল গোলের চেষ্টা করে গিয়েছিল। মনে হচ্ছিল ম্যাচ ড্র হওয়া স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। ঠিক তখনই ম্যাচের অতিরিক্ত সময় এডুয়ার্দো বেদিয়ার গোলে বদলে গেল সব হিসেব। এক পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ার বদলে ঘরের মাঠে হার হজম করলেন কনস্ট্যানটাইন। ফলে লিগ টেবলের শেষেই রইল লাল-হলুদ।