Lionel Messi and Luka Modric, FIFA World Cup 2022: জয়ের হ্যাটট্রিক করে ফের একবার মেসির আর্জন্টিনার চোখে জল আনতে মরিয়া লুকা মদ্রিচ
২০০৬ সাল। সুইৎজারল্যান্ডের বাসেলে প্রীতি ম্যাচে আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে প্রথমবার মাঠে নেমেছিলেন ২০ বছরের লুকা মদ্রিচ। লিওনেল মেসিও তখন উঠতি প্রতিভা। ক্রোয়েশিয়ার কোচ জ্লাতকো ক্রাঞ্জকার ঝুঁকিটা নিয়েছিলেন।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আন্তর্জাতিক মঞ্চে দুই দল এখনও পর্যন্ত পাঁচবার মুখোমুখি হয়েছে। এরমধ্যে স্কোরলাইন ২-২। একটি ম্যাচ অমীমাংসিত ভাবে শেষ হয়েছে। তবে ক্রোয়েশিয়া (Croatia) জাতীয় দলে লুকা মদ্রিচ (Luka Modric) আসার পর থেকে আর্জেন্টিনার (Argentina) বিরুদ্ধে বদলে গিয়েছে হিসেবে। ২০০৬ সালের ১ মার্চ। প্রথমবার ক্রোয়েশিয়ার জার্সি গায়ে চাপিয়ে আলবেসেলেস্তেদের বিরুদ্ধে অভিষেক ঘটিয়েছিলেন মদ্রিচ। সেই ম্যাচে লিওনেল মেসি (Lionel Messi) গোল করলেও, ক্রোয়েশিয়া জিতেছিল ৩-২ ব্যবধানে। এর ছয় বছর পর ২০১২ সালে মেসি গোল করেছিলেন। আর্জেন্টিনা জিতেছিল ২-১ গোলে। তবে ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপে (FIFA World Cup 2018) লজ্জার হার হজম করেছিল নীল-সাদা বাহিনী। সেই ম্যাচে ৩-০ ব্যবধানে মেসিদের উড়িয়ে দিয়েছিল ক্রোয়েশিয়া। গোল করেছিলেন লুকা মদ্রিচ। এহেন ক্রোয়েশিয়ার সর্বকালের সেরা ফুটবলার ফের একবার দুটি জয়ী ম্যাচের স্মৃতি ফেরাতে মরিয়া হয়ে আছেন। তাই এবার তাঁর নজর হ্যাটট্রিক জয়ের দিকে।
এহেন লুকা মদ্রিচ মেগা সেমিফাইনালের আগে সেই দুটি ম্যাচের প্রসঙ্গ এলে বলছিলেন, 'আন্তর্জাতিক মঞ্চে অভিষেক ম্যাচের সব স্মৃতি আমার মনে আছে। আর্জন্টিনার বিরুদ্ধে সেই ম্যাচে মেসির সঙ্গে দারুণ লড়াই হয়েছিল। জাতীয় দলের হয়ে দু'জনেরই সেটা প্রথম মরসুম ছিল। সেই ম্যাচে গোল না করলেও, আমরা জিতেছিলাম।' একইসঙ্গে উঠে এসেছিল চার বছর আগে বিশ্বকাপের মঞ্চে আর্জেন্টাইনদের বিরুদ্ধে জয়ের প্রসঙ্গ। সেই ম্যাচ নিয়ে মদ্রিচ যোগ করেন, 'সেই ম্যাচটা আর্জেন্টিনা আমাদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি। মেসি পুরো ম্যাচে মাঠে থাকলেও, আমরা গোল করার সুযোগ দিইনি। আমাদের ডিফেন্স দারুণ পারফর্ম করেছিল। আমরা এবারও সেই ম্যাচের স্মৃতি ফেরাতে মরিয়া হয়ে আছি। কারণ এটা সেমি ফাইনাল।'
২০০৬ সাল। সুইৎজারল্যান্ডের বাসেলে প্রীতি ম্যাচে আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে প্রথমবার মাঠে নেমেছিলেন ২০ বছরের মদ্রিচ। মেসিও তখন উঠতি প্রতিভা। ক্রোয়েশিয়ার কোচ জ্লাতকো ক্রাঞ্জকার ঝুঁকিটা নিয়েছিলেন। জার্মানিতে ২০০৬ বিশ্বকাপ শুরু হতে তখনও মাস তিনেকের মতো বাকি। মদ্রিচ সেই ম্যাচে গোল করতে না পারলেও, নিজেকে মাঠে নেমেই প্রমাণ করেছিলেন। তিনি যে ক্রোয়েশিয়ান ফুটবলের ভবিষ্যতের তারকা হতে চলেছেন, সেই ম্যাচেই প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল। ক্রোয়েশিয়া ম্যাচটা জিতেছিল ৩-২ গোলে।
বাসেলের সেই ম্যাচের পর কেটে গিয়েছিল আরও ১২ বছর। সেই তরুণ মদ্রিচ ২০১৮ সালে ক্রোয়েশিয়ার ফুটবলের সবচেয়ে বড় তারকা হয়ে উঠেছেন। সেই বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে ৩-০ গোলে হারিয়েছিল ক্রোয়েশিয়া। ৮০ মিনিটে একটি দূরপাল্লার শটে গোল করেছিলেন মদ্রিচ। তবে এবার আর গ্রুপ পর্ব নয়, একেবারে সেমি ফাইনালে মুখোমুখি দুই দল। মদ্রিচের ক্রোয়েশিয়া যেমন চার বছর আগের স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে মরিয়া হয়ে আছে, তেমনই মেসির আর্জেন্টিনা ৯০ মিনিটের যুদ্ধে বদলা নিতে নামবে।
ব্রাজিলকে ছিটকে দেওয়ার পর ১৬১তম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামছেন মদ্রিচ। টটেনহ্যামে খেলেছেন। ২০১২ সাল থেকে খেলছেন রিয়াল মাদ্রিদে। জিতেছেন ব্যালন ডি'ওর। ২০১৮ বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়াকে তুলেছিলেন বিশ্বকাপের ফাইনালে। তবে সেবার মেগা ফাইনালে ফ্রান্সের কাছে হেরে যায় ক্রোয়েশিয়া। তবে এবার আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে কাপ হাতে তুলতে চান মদ্রিচ। 'পয়া' বিপক্ষের বিরুদ্ধে জোড়া জয় আগেই হয়ে গিয়েছে। এবার মেসির উপস্থিতিতে জয়ের হ্যাটট্রিক করতে মরিয়া হয়ে আছেন মদ্রিচ।