লকডাউনে মানবিক মুখ; রক্ত দিয়ে প্রাণ বাঁচালেন মোহনবাগান সমর্থক
মোহনবাগান সমর্থক ঋত্বিক ঘোষ থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত। লকডাউনের মধ্যে হঠাৎ করে তার রক্তের প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: মানবিকতা আজও আছে। মনুষ্যত্ব মানুষের মন থেকে এখনও মুছে যায় নি। যদি বিবেক ,মানবিকতা আর মনুষ্যত্বের রং ফিকে হয়ে যেত তাহলে ঋত্বিক ঘোষের প্রাণ বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়তেন না জয়ন্ত ঘোষ।
মোহনবাগান সমর্থক ঋত্বিক ঘোষ থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত। লকডাউনের মধ্যে হঠাৎ করে তার রক্তের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। যেখানে রক্তের আকাল সেখানে ছেলেকে রক্ত দিয়ে কীভাবে বাঁচাবেন এটা ভেবে দিশেহারা হয়ে পড়েন ঋত্বিকের বাবা গৌতম ঘোষ। ঘটনাটি ঋত্বিকের বাবা, ছেলের বন্ধুদের জানান। ব্যস বেড়িয়ে এল সমাধানের রাস্তা। পুরো ঘটনা জানিয়ে তাঁর মোহনবাগান সমর্থক বন্ধু সমস্ত মোহনবাগান সমর্থকদের নিয়ে তৈরি করেন একটা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। সেই গ্রুপে রক্তের গ্রুপ দিয়ে ডোনারের আবেদন করা হয়। মূহুর্তের মধ্যে একাধিক মোহনবাগান সমর্থক রক্ত দিতে রাজি হয়ে আগ্রহ দেখান। অবশেষে বেলেঘাটার বাসিন্দা মোহনবাগান সমর্থক জয়ন্ত ঘোষ রক্ত দিয়ে বাঁচিয়ে তোলেন আর এক মোহনবাগান সমর্থক ঋত্বিক ঘোষকে।
ছেলের জীবন ফিরে পেয়ে ঋত্বিকের বাবা গৌতম ঘোষ জানান , "মোহনবাগান সমর্থকদের কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ। হঠাৎ করে ছেলের রক্তের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। লকডাউনের মধ্যে রক্ত জোগাড় করা কার্যত অসম্ভব ছিল। দিশেহারা হয়ে পড়ি। তারপর সোশ্যাল মিডিয়া মাধ্যমে মোহনবাগান সমর্থকরা যেভাবে রক্ত দেওয়ার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েন তা দেখে আমি অভিভূত। এই সময় মোহনবাগান সমর্থকরা আমার পাশে না দাঁড়ালে ছেলেকে বাঁচতে পারতাম না। আমি মোহনবাগান সমর্থকদের কাছে চিরঋণী হয়ে থাকব।"
রক্তদাতা বেলেঘাটার জয়ন্ত ঘোষ এটাকে তার নৈতিক দায়িত্ব বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "মানুষ হয়ে মানুষের বিপদে এগিয়ে যাওয়া কর্তব্য। বেশি কিছু করি নি। আর ৠত্বিক আমার ভাইয়ের মত,সেইসঙ্গে মোহনবাগান সমর্থক। একবার নয় আবার লাগলে আবার রক্ত দেব। আমরা সব মোহনবাগান সমর্থকরা ওর পাশে আছি। ঋত্বিকের এবং তার পরিবারের চিন্তার কিছু নেই। আমরা সবসময় ওর খোঁজ নেব। হাজার হাজার মোহনবাগান সমর্থক ওর পাশে আছে।"
সবুজমেরুন সমর্থকরা আজ যে মনুষ্যত্বের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা বাংলার ময়দানে ভবিষ্যত প্রজন্মকে প্রেরণা যোগাবে।
আরও পড়ুন - হাসির 'সেরা শত্রু একাদশে' তিন ভারতীয়!