KKR vs PBKS | IPL 2023: মোকা নয়, ইডেন দেখল রাসেল ঝড়! শেষ বলে রিঙ্কুর ব্যাটে রুদ্ধশ্বাস জয় কলকাতার
KKR beats PBKS by 5 wickets: সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে জয়ের পর ইডেনের পরবর্তী ম্যাচেও জিতল কলকাতা নাইট রাইডার্স। চেনা ছন্দে ব্যাট করে ম্যাচের নায়ক সেই আন্দ্রে রাসেল। শেষ বলে চার মেরে কলকাতার হৃদয় জিতলেন রিঙ্কু সিং। প্লেঅফের আশা জিইয়ে রাখল কেকআর।
পঞ্জাব কিংস ১৭৯/৭
কলকাতা নাইট রাইডার্স ১৮২/৫
৫ উইকেটে জয়ী কেকেআর
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: মিশন আইপিএল প্লেঅফ! কলকাতা নাইট রাইডার্সকে (Kolkata Knight Riders) যেতে হবে শেষ চারে। ইডেন গার্ডেন্সে (Eden Gardens, Kolkata) সোমবার পঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে নামার আগে কলকাতার কাছে সমীকরণ ছিল অত্যন্ত সোজা। পঞ্জাব ম্যাচ নিয়ে লিগ পর্যায়ে চারটি ম্য়াচ জিততেই হবে কেকেআরকে। চারটি ম্যাচই কলকাতার কাছে ডু-অর-ডাই। মরণ-বাঁচন ম্যাচে জেতা ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই। এর মধ্যে একটি ম্যাচে হারলেই কেকেআর ছিটকে যাবে নীতীশ রানার (Nitish Rana) টিম। কেকেআর পঞ্জাবকে পাঁচ উইকেটে হারিয়ে টপকাল প্রথম হার্ডল। এখানেই শেষ নয়, এই ম্য়াচের আগে লিগ তালিকায় আট নম্বরে ছিল কেকেআর। ১১ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে কেকেআর চলে এল পাঁচে!
এদিন ইডেনে টস জিতে শিখর ধাওয়ানরা ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তবে তাঁর ব্যাটাররা এদিন তাঁর সিদ্ধান্তকে ঠিক প্রমাণ করতে পারেননি। ভানুকা রাজাপক্ষ, লিয়াম লিভিংস্টোন, স্যাম কারেনের মতো তারকারা যে দলে আছেন, সেই দলের থেকে যে প্রত্যাশা ছিল, সেই প্রত্যাশার ধারে কাছে যায়নি প্রীতি জিন্টার টিম। নিয়মিত উইকেট হারানোর ইনিংসে, ক্যাপ্টেন ধাওয়ানই একমাত্র মুখরক্ষা করার মতো রান করতে পারলেন এদিন। ৪৭ বলে ৫৭ রান আসে তাঁর ব্যাট থেকে। বাকিরা সকলেই ওই কুড়ির গণ্ডির মধ্যে ঘুরপাক খেয়েছেন।
অবশ্যই প্রশংসা করতে হবে নাইটদের বোলিংয়ের। বিশেষ করে বরুণ চক্রবর্তীর ও হর্ষিত রানার। বরুণ তুলে নেন তিন উইকেট। রানার ঝুলিতে আসে দুই উইকেট। সুযশ শর্মা ও নীতীশ রানার একটি করে উইকেট। সেই স্পিনারা সহায়ক দলে স্পিনাররাই বেশি ছাপ রাখলেন। তরুণ পেসার বৈভব অরোরা পাননি কোনও উইকেট। পঞ্জাব শেষপর্যন্ত সাত উইকেট হারিয়ে ১৭৯ রান তুলতে পারে। এদিন ধাওয়ান করে ফেলেলন পঞ্চাশের ৫০! আইপিএল ইতিহাসে তৃতীয় ক্রিকেটার হিসেবে এই অনন্য রেকর্ডের অধিকারী হলেন শিখর। পঞ্জাব পুত্তর ছাড়া ক্রোড়পতি লিগে ৫০টি অর্ধ-শতরান করার নজির রয়েছে ডেভিড ওয়ার্নার ও বিরাট কোহলির। চলতি আইপিএলে আট ম্যাচে ধাওয়ানের হয়ে গেল তিনটি হাফ-সেঞ্চুরি। পঞ্জাব এই মরসুম শুরুর আগে ময়াঙ্ক আগরওয়ালকে ছেড়ে দিয়েছিল। তাঁর পরিবর্তে প্রীতি জিন্টার দল অধিনায়ক হিসেবে বেছে নেয়ে শিখরকে। আট ম্যাচে তাঁর ৩৪৯ রান করা হয়ে গেল। একটি ৯৯ রানের অপরাজিত ইনিংসও রয়েছে তাঁর।
এই রান তাড়া করতে নেমেছিলেন জেসন রয় (ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার) ও রহমানুল্লাহ গুরবাজ। ওপেনিং জুটিতে মাত্র ৩৮ রান আসে ৪.৪ ওভারে। ১২ বলে ১৫ রান করে গুরবাজ ন্য়াথান এলিসের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে যান। এরপর জেসন ২৪ বলে ৩৮ রান করে আউট হয়ে যান। ৬৪ রানে ২ উইকেট চলে যায় কলকাতার। এরপর ক্যাপ্টেন নীতীশের ব্যাট জ্বলে ওঠে। ৩৮ বলে দুরন্ত ৫১ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। তবে এদিন নীতীশের অর্ধ-শতরানের ইনিংসকেও ছাপিয়ে গেলেন আন্দ্রে রাসেল ও রিঙ্কু সিং।
রাসেল আবারও বুঝিয়ে দিলেন যে, কেন নাইট ম্যানেজমেন্ট তাঁর পরের পর ফ্লপ শো দেখেও এত এত আস্থা রেখেছেন। রাসেল এদিন ২৩ বলে করলেন ঝোড়ো ৪২ রান। ইডেন মাতালেন তিনটি চার ও তিনটি ছয়ে। দলকে একেবারে জয়ের দোরগোড়ায় নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ১৯.৫ নম্বর বলে তিনি দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আউট হয়ে যান। কেকেআরের জয়ের জন্য শেষ বলে দরকার ছিল দুই রান। কেকেআর সমর্থকদের হৃদপিণ্ড হাতে চলে এসেছিল। কিন্তু অর্শদীপ সিংয়ের থাইয়ের ওপরে আসা হাই ফুলটসকে বাউন্ডারির রাস্তা দেখিয়ে দিলেন রিঙ্কু। ডিপ ফাইন লেগ ও ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়ার লেগের ফাঁক দিয়ে গলিয়ে ইডেনকে মাতালেন উচ্ছ্বাসে। রাসেল-রিঙ্কুর ২৬ বলে ৫৪ রানের এই পার্টনারশিপ ছিল বাঁধিয়ে রাখার মতো।
গতকাল প্রাক ম্য়াচ সাংবাদিক বৈঠকে বৈভব বলেছিলেন, 'আমাদের সব ম্যাচ জিততে হবে। তবে আমরা ম্যাচ ধরে ভাবছি। গত ম্যাচ জিতে আমরা আত্মবিশ্বাসী। ড্রেসিংরুমের পরিবেশও ভালো। রিঙ্কু আগেই দেখিয়েছে যে, আমরা যে কোনও কঠিন পরিস্থিতি থেকে ম্যাচ বার করতে পারি।' মরণ-বাঁচন ম্যাচে ভরসা সেই রিঙ্কুই ফের করে দেখালেন। টানা চার ম্যাচ জিতলেই কিন্তু কলকাতার শান্তি নেই। বাকি চার ম্যাচ থেকে আট পয়েন্ট তুলতে পারলে, মোট পয়েন্ট হবে ১৬। সেটাও যথেষ্ট হবে না, যদি চার দল ১৮ পয়েন্ট পেয়ে যায়, সেক্ষেত্রে অন্য গল্প হবে।