নাগপুরের ২২গজেও নাকানিচোবানি ভারতের

নাহ্‌, নাগপুরেও বোধহয় হল না। সঞ্চিত থাকা কিঞ্চিৎ সম্মানও ইংল্যান্ড-ভারত সিরিজের চতুর্থ টেস্টের দ্বিতীয়দিনে নিলামে পাঠালেন ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। আরও একবার বেআব্রু হয়ে গেল ভারতীয় ক্রিকেটের দৈন্যদশা। ইংল্যান্ডের ৩৩০ রানের জবাবে খেলতে নেমে দ্বিতীয়দিনের শেষে ভারতের ৪ মহারথী ইতিমধ্যেই প্যাভিলিয়নবাসী হয়ে গেছেন। স্কোরবোর্ডে অবদান ৮৭। ফলাফল? সিরিজের অন্তিম টেস্টেও আপাতত চালকের আসনে ইংল্যান্ড।

Updated By: Dec 14, 2012, 07:16 PM IST

নাহ্‌, নাগপুরেও বোধহয় হল না। সঞ্চিত থাকা কিঞ্চিৎ সম্মানও ইংল্যান্ড-ভারত সিরিজের চতুর্থ টেস্টের দ্বিতীয়দিনে নিলামে পাঠালেন ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। আরও একবার বেআব্রু হয়ে গেল ভারতীয় ক্রিকেটের দৈন্যদশা। ইংল্যান্ডের ৩৩০ রানের জবাবে খেলতে নেমে দ্বিতীয়দিনের শেষে ভারতের ৪ মহারথী ইতিমধ্যেই প্যাভিলিয়নবাসী হয়ে গেছেন। স্কোরবোর্ডে অবদান ৮৭। ফলাফল? সিরিজের অন্তিম টেস্টেও আপাতত চালকের আসনে ইংল্যান্ড।
কালকে ভারতীয় বোলারদের মোটামুটি সাফল্যে খেটে গিয়েছিল ধোনির ৩ স্পিনার আর ১ পেসারের ফাটকা। মনে করা হচ্ছিল নাগপুরের ২২গজ অন্তত টিম ইন্ডিয়ার দখলে থাকবে। প্রত্যাশার বেলুনটা সবে ফুলতে আরম্ভ করেছিল। কিন্তু ভারতের তথাকথিত বিশ্বসেরা লাইনআপ আজ দায়িত্ব নিয়ে সেটা ফাটিয়ে দিলেন। ইংল্যান্ডের পেসার জেমস অ্যান্ডারসনকে সামলাতে নাকানিচোবানি খেলেন সবাই। নাগপুরের বিতর্কিত এবড়োখেবড়ো বাউন্সি পিচে তিনি একাই ভারতীয়দের ৩টি উইকেট তুলে নিলেন।
ভারতীয় ইনিংসের প্রথমেই শূন্য রানে আউট হয়ে দ্রুত ড্রেসিংরুমে ফিরে যান বীরেন্দ্র সেওয়াগ। দ্বিতীয় উইকেটে আরেক ওপেনার গম্ভীর, পুজারাকে সঙ্গে নিয়ে যখন সবে কিছুটা প্রতিরোধ তৈরি করছেন তখনই সয়ানের বলে বেলের অনবদ্য ক্যাচে মাত্র ২৬ রানে আউট হয়ে যান পূজারা। তবে ক্যাপ্টেনের সমালোচনার জবাব এবারও দেওয়া হল না গতির। সাঁইত্রিশ রানেই শেষ হয়ে গেল তাঁর সমস্ত প্রতিরোধ। এবং সচিন রমেশ তেন্ডুলকার। তিনি নিজেই তাঁর সমালোচকদের রসদ জুগিয়ে দিয়ে গেলেন আরও একবার। দলীয় স্কোরবোর্ডে যোগ করলেন মাত্র দুটি রান।
ঝুলিতে ১৯৯টি রান আর ৫ উইকেট নিয়ে খেলতে নেমে আজ গতকালের ধাক্কা বেশ কিছুটা সামলে নিয়েছিলেন কুকবাহিনী। নবাগত জো রুট (৭৩), ম্যাট প্রায়র (৫৭) আর সয়ানের (৫৬) সৌজন্যে লড়াই করার মত ৩৩০ রান খাড়া করেন ইংরেজরা।
অশনি সংকেতটা আসলে দিয়ে রেখেছিলেন কেভিন পিটারসন। ফর্মের তুঙ্গে থাকা কেপি কালকেই ঘোষণা করেছিলেন নাগপুরের পিচে জীবনের কঠিনতম ইনিংসটি খেললেন তিনি। এই পিচ যে ভারতীয়দের বেগ দিতে চলেছে তার ইঙ্গিত কালকেই পাওয়া গিয়েছিল। ক্রমশ স্লো হয়ে আসা আউটফিল্ড আর বাউন্সি অসমান উইকেটে রান তোলা যে ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠবে তা বোঝাই যাচ্ছিল। আজ ভারতীয়রা নাগপুরের কুখ্যাত পিচের ঐতিহ্য বজায় রাখলেন।
দিনের শেষে ৭ রানে ক্রিজে রয়েছেন ক্যাপ্টেন ধোনি। সঙ্গে ১১ রানে অপরাজিত বিরাট কোহলি। এই ম্যাচটা যদি তিনি খেলে দিতে পারেন তাহলে এক্ষুনি তাঁর সমালোচোকদের মুখে যে কুলুপ এঁটে যাবে তা ভালই জানেন মাহি। কিন্তু যদি এই ইনিংসেও ব্যর্থ হন? স্বয়ং শ্রীনিবাসনও কতখানি তাঁর সিংহাসন রক্ষা করতে পারবেন তা নিয়ে ধোনি নিজেও বোধহয় যথেষ্ট সংশয়ে। এমনিতেই তাঁর খারাপ কিপিং আর অধিনায়কত্ব আগের দুই টেস্টের মতোই নাগপুরেও ইতিমধ্যেই বেশ নিন্দা কুড়িয়েছে। এরপর এই টেস্টেও হারলে দেশের মাঠে ইংল্যান্ডের কাছে ২৮ বছর পর সিরিজ হারার লজ্জার মূল দায়টা তাঁকে নিতেই হবে। সেই দায়ভার অধিনায়কত্বতো দূরের কথা দলেও তাঁর জায়গাটা কেড়ে নিতে পারে। এই সবটাই ধোনি নিজেই বিলক্ষণ জানেন। অতএব তাঁর ভাগ্য এখন তাঁরই হাতে। ক্রিজে কিন্তু ধোনির সঙ্গে আছেন তাঁর সিংহাসনের প্রধান দাবিদার।

.