Explained | FIFA World Cup 2022: কাতার কাঁপাচ্ছে কালো মাস্ক! বিশেষ মুখাবরণে ফুটবলাররা, নেপথ্যের প্রকৃত কারণ কী?
FIFA World Cup 2022: সন হিউং-মিন থেকে ইয়োসকো গাওয়ারদিওল, কাতারে কেন ফুটবলারদের মুখে উঠেছে এই বিশেষ মাস্ক? নেপথ্যের বিশেষ কারণ জানুন।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: তাঁরা কেউই ব্যাটম্যান বা সুপারম্যান নন, এমনকী মার্বেল কমিকসের জনপ্রিয় চরিত্রও নন, তাহলে দক্ষিণ কোরিয়ার (South Korea) সন হিউং-মিন (Son Heung-min) থেকে ক্রোয়েশিয়ার (Croatia) ইয়োসকো গাওয়ারদিওলের (Jasko Gvardiol) মতো ফুটবলাররা কেন বিশেষ মুখাবরণেই কাতার বিশ্বকাপে (FIFA World Cup 2022) খেলছেন? এই চোখ-নাক ঢাকা এই কালো মাস্ক কি স্টাইল স্টেটমেন্ট না কি অন্য কিছু? ফুটবলারদের বিশেষ প্রোটেক্টিভ মাস্ক ব্যবহারের নেপথ্যে রয়েছে নির্দিষ্ট কারণ।
কোরিয়ান মিসাইল সন হিউংকে দিয়েই শুরু করা যাক আলোচনা। টটেনহ্যামের বছর তিরিশের এই তারকা ফরোয়ার্ড, গত নভেম্বরে বুকে কাঁপুনি ধরিয়ে দিয়েছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার ফুটবল ফ্যানদের বুকে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে টটেনহ্যাম ২-১ গোলে হারিয়েছিল মার্সেলিকে। আর সেই ম্যাচেই চোখে ভয়ংকর চোট পেয়ে, ফিজিয়োদের কাঁধে ভর দিয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার অধিনায়ক। আই সকেটে চিড় ধরায় অস্ত্রোপচার করাতে হয়েছিল সন হিউংয়কে। অনেকেই ভেবেছিলেন যে, সং হিউং সম্ভবত কাতারের বিমান ধরতে পারবেন না। কিন্তু সকলকে চমকে দিয়ে দাপিয়ে বিশ্বকাপ খেলছেন তিনি। সন হিউং আর কোনও ঝুঁকি নিতে চাননি। এবার রক্ষাকবচ পরেই মাঠে নেমেছেন। ওই মাস্ক পরেই স্বাচ্ছন্দ্যে বিচরণ করতে পারছেন মাঠে।
পর্তুগালকে হারিয়ে বিশ্বকাপের প্রি-কোয়ার্টারে চলে গিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। কাতারে উরুগুয়ের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছিল সনির টিম। ম্যাচের পর এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, 'এই মাস্ক খুবই আরামদায়ক। আমি এটা ভেবেই খুশি যে, এই মাস্কের জন্য আমি খেলতে পারছি।' সনি কিন্তু একা নন ক্রোট ডিফেন্ডার গাওয়ারদিওলা থেকে শুরু করে টিউনিশিয়ার মিডফিল্ডার এলিয়েস স্কিরি ও ইরানের গোলকিপার আলিরেজা বেরানভান্ডও চাপিয়েছেন এই মাস্ক। মোদ্দা কথা, বিশ্বকাপের আগে যে সব ফুটবলাররা মাথা, চোখ, মুখ এবং নাকে চোট পেয়েছেন, তাঁরাই বাড়তি সুরক্ষা নিয়ে কাতারে নেমেছেন মাস্ক চাপিয়ে। এত বড় টুর্নামেন্টে আর কোনও ঝুঁকিই নিতে চান না তাঁরা।
গাওয়ারদিওলা জার্মানির ক্লাব আরবি লেপজিগের হয়ে খেলেন। খেলতে গিয়ে মাথায় আঘাত পাওয়ায় তাঁর নাকে এবং চোখে সমস্যা দেখা দেয়। যার জন্য তিনি ঝুঁকি নিতে চান না। বেছে নিয়েছেন এই কালো মাস্ক। গাওয়ারদিওলার মতো এলিয়েস স্কিরিও খেলেন জার্মানির ক্লাবে। গত অক্টোবরে এফসি কোলোনের হয়ে খেলতে গিয়ে তাঁর চিকবোন ভেঙেছিল। এই মাস্ক তাঁকে সুরক্ষিত রাখছে। চোট থেকে শিক্ষা নিয়েছেন ইরানের গোলকিপার আলিরেজাও। মাস্ক পরেই কাতারে প্র্যাকটিস করেছেন। কিন্তু ম্যাচে পরেননি তিনি। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে খেলতে হিয়ে মাথায় চোট পান তিনি, ওয়েলসের বিরুদ্ধে গ্রুপের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে পারেননি। গ্রুপ পর্যায়ের শেষ ম্যাচে তিনি কিন্তু মুখোশ ছাড়াই খেলেছে ইউএসএ-র বিরুদ্ধে।
যাঁরা নিয়মিত বিদেশি ফুটবল দেখেন, তাঁরা জানেন যে, বিশ্বকাপেই প্রথম নয়, মুখের চোট থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য একাধিক ফুটবলারই বিশ্বব্যাপী লিগ জুড়ে মাস্ক পরেন মাঠে। তালিকায় রয়েছেন অ্যান্টোনিও রুডিগার, হ্যারি কেন, রবার্ট লেওয়ানডস্কি ও ভিক্টর ওসিমেন ও সের্জিও ব়্যামোসের মতো ফুটবলাররাও। এই মাস্কের ব্যবহার নতুন কিছু নয় ফুটবলে। ফুটবলারদের এই মাস্ক কিন্তু মানায়। কারণ তাঁরা কমিকসের সুপারহিরো নন, তাঁরা কখনও ক্লাবের তো কখনও দেশের হয়েই সুপারহিরো অবতারে উত্তীর্ণ হন মাঠে।
(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)