দাবার 'হ্যারি পটার'-কে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হতে পারবেন 'ফিনিক্স' আনন্দ?
মঞ্চ প্রস্তুত। তৈরি যোদ্ধারাও। অপেক্ষা আর এক দিনের। কাল থেকেই শুরু মহাযুদ্ধ। এই মাসের শেষেই বিশ্ব দাবার নয়া চ্যাম্পিয়নকে পেয়ে যাব আমরা।
ওয়েব ডেস্ক: মঞ্চ প্রস্তুত। তৈরি যোদ্ধারাও। অপেক্ষা আর এক দিনের। কাল থেকেই শুরু মহাযুদ্ধ। এই মাসের শেষেই বিশ্ব দাবার নয়া চ্যাম্পিয়নকে পেয়ে যাব আমরা।
এবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে আরও একবার মুখোমুখি অধুনা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন নরওয়ের ম্যাগনাস কার্লসেন ও ভারতের বিশ্বনাথন আনন্দ।
গতবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের আসর বসেছিল চেন্নাইয়ে। তৎকালীন বিশ্ব সেরা দাবাড়ু আনন্দের হোম গ্রাউন্ডে। দাবার লেজেন্ড আনন্দকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন দাবার বিস্ময় ২৩ বছরের কার্লসেন।
এই বছর প্রতিদ্বন্ধীরা একই আছেন। শুধু রোলটা রিভার্স হয়ে গেছে। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন কার্লসেনের বিরুদ্ধে এবারে চ্যালেঞ্জারের ভূমিকায় আনন্দ। বদলে গেছে যুদ্ধক্ষেত্রেটাও। এবারের দাবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের আসর বসছে রাশিয়ার সোচিতে।
গত বছর চেন্নাইয়ে পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আনন্দের থেকে সেরার মুকুট ছিনিয়ে নিয়েছিলেন নরওয়ের কার্লসেন। দাবার ইতিহাসে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা হয়েছিল সেখান থেকে।
তবে কার্লসনের এই উত্থান আকস্মিক নয়। দাবায় ওপেন এরা চালু হওয়ার পর কার্লসেনই প্রথম গ্র্যান্ড মাস্টার যিনি র্যাঙ্কিংয়ে ১ নম্বর হয়েই বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে চ্যালেঞ্জার হয়ে খেলতে এসেছিলেন। এখনও কিন্তু র্যাঙ্কিয়ে তিনিই পয়লা নম্বর।
বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ খেলার আগেই মেমারি মেশিন নামে প্রসিদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন কার্লসেন। দাবার আর এক কিংবদন্তী কাসপরভতো বহুদিন আগে থেকেই কার্লসেনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। কার্লসেনকে দাবার হ্যারি পটার আখ্যা দিয়েছেন তিনি। প্রখর স্মৃতি শক্তির দৌলতে দাবার দুনিয়ায় ম্যাজিশিয়ন বলে পরিচিত তিনি।
অন্যদিকে, কার্লসেনের কাছে পরাজয়ের পর ক্রীড়া সাংবাদিকরা মোটামুটি বিশ্বনাথন আনন্দের দাবা কেরিয়ারের শেষ অধ্যায় লিখে ফেলেছিলেন।
প্রত্যেকবার দাবা বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের পর জয়ীকে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করার পর খোঁজ পরে তাঁর চ্যালেঞ্জার খোঁজার।
ওয়ার্ল্ড চেস ফেডারেশন চ্যালেঞ্জারকে খুঁজতে আয়োজন করেন ক্যান্ডিডেটস টুর্নামেন্টের। চ্যাম্পিয়ন ছাড়া বিশ্বের অনান্য তাবড় তাবড় দাবাড়ুরা অংশগ্রহণ করেন এই টুর্নামেন্টে। সবাই যখন এবারে চ্যালেঞ্জার রূপে নয়া মুখের প্রত্যাশা করছিলেন তখনই ফিনিক্সের মত জ্বলে উঠলেন আনন্দ। প্রমাণ করলেন বয়সটা একটা সংখ্যা ছাড়া আর কিছুই নয়। ৪৪ বছরের আনন্দ প্রায় হাঁটুর বয়সী প্রতিদ্বন্ধীদের টপকে জিতে নিলেন চ্যালেঞ্জারের আসন। শুধু তাই নয়, সাম্প্রতিক কার্লসেন ছাড়া বিশ্বের সেরা সাত দাবাড়ুর বিরুদ্ধে একটাও গেম হারেননি তিনি।
পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়ন আনন্দের নতুন করে কিছু প্রমাণ করার নেই। তিনি এমনিতেই জীবন্ত কিংবদন্তী। বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরাদের মধ্যে নিজের নাম বহুদিন আগেই তিনি প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছেন।
এবার যদি আনন্দ চ্যাম্পিয়ন হতে পারেন তাহলে দাবার ইতিহাসে এখনও পর্যন্ত নিঃসন্দেহে সেটাই হবে সেরা কামব্যাক।
আর কিছু ঘণ্টা পরেই সম্ভবত শতকের সেরা দাবার লড়াইয়ের সাক্ষী হতে চলেছে ক্রীড়া বিশ্ব।
শেষ হাসিটা কে হাসবেন, ম্যাজিশিয়ন না ফিনিক্স? তার উত্তর একমাত্র লুকিয়ে আছে সময়ের গহ্বরেই।
বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের ক্রীড়াসূচী:
8 November: Game 1
9 November: Game 2
11 November: Game 3
12 November: Game 4
14 November: Game 5
15 November: Game 6
17 November: Game 7
18 November: Game 8
20 November: Game 9
21 November: Game 10
23 November: Game 11
25 November: Game 12
27 November: Tie-break games