Wriddhiman Saha: অচিরেই থমকে গেল ঋদ্ধিমান সাহার আন্তর্জাতিক কেরিয়ার! কিন্তু কেন?
শোনা যাচ্ছে ঋদ্ধিকে থামিয়ে দেওয়ার জন্য এক অদ্ভুত সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাহুল দ্রাবিড়ের টিম ম্যানেজমেন্ট!
সব্যসাচী বাগচী: তাহলে কি শেষ পর্যন্ত থমকে গেল ঋদ্ধিমান সাহার আন্তর্জাতিক কেরিয়ার! আরও সোজা ভাষায় লিখলে, তাঁকে থেমে যেতে বাধ্য করা হল! কারণ সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ঋষভ পন্থের 'ব্যাক আপ' হিসেবে ঋদ্ধি নন, বরং কোনা শ্রীকর ভরতকে দেখা যাবে। যদিও ঋদ্ধি ও তাঁর পরিবার এমন স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে এখনও মন্তব্য করতে রাজি হচ্ছেন না। তবে তাঁর ঘনিষ্ট সূত্রে জানা গিয়েছে যে, তাঁর আন্তর্জাতিক কেরিয়ারকে জবরদস্তি থামিয়ে দেওয়ার জন্যই বাংলার হয়ে রঞ্জি ট্রফি খেলতে রাজি হননি পাপালি।
শোনা যাচ্ছে ঋদ্ধিকে থামিয়ে দেওয়ার জন্য এক অদ্ভুত সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাহুল দ্রাবিড়ের টিম ম্যানেজমেন্ট। এই বঙ্গজ উইকেটকিপারকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে ,৩৭ বছর বয়স হওয়ার জন্য তাঁকে আর টেস্ট দলে রাখা সম্ভব নয়। ফলে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজে তাঁর দলে থাকার রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হল। আর সেই জন্যই রঞ্জি খেলতে চাইছেন না ঋদ্ধি। যদিও এই বিষয় নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি নন তিনি। তবে তাঁর ঘনিষ্ট মহলের দাবি, "যদি ভারতের হয়ে ঋদ্ধি টেস্ট খেলতে না পারে, তাহলে রঞ্জি খেলে কী লাভ! একটা জায়গা আটকে রাখার কোনও মানেই হয় না। এর চেয়ে ওর জায়গায় কোনও তরুণ সুযোগ পেলে তার কেরিয়ারের সুবিধা হবে। তাই বাংলার অনুশীলনেও ঋদ্ধিকে দেখা যায়নি।"
আরও পড়ুন: IND vs WI 2nd ODI Playing 11 Prediction: সম্ভাব্য একাদশে থাকতে পারেন যাঁরা
শোনা যাচ্ছে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের এই অদ্ভুত সিদ্ধান্তে মারাত্মক আহত হয়েছেন ঋদ্ধি। তাঁর ঘনিষ্ট মহলের আরও দাবি, "চেতেশ্বর পূজারা ও অজিঙ্কা রাহানে গত দুই বছর লাগাতার ফ্লপ হওয়ার পরেও, রঞ্জি খেলে জাতীয় দলে ফিরতে চাইছেন। বোর্ড তাঁদের এই মঞ্চকে ব্যবহার করতে দিচ্ছে। শিখর ধাওয়ানের বয়স ৩৬। তিনিও দিব্যি একদিনের দলে খেলে যাচ্ছেন। হার্দিক পান্ডিয়া ফিরে আসার জন্য আইপিএলকে মঞ্চ হিসেবে বেছে নিয়েছেন। বরোদাকে তিনি জানিয়ে দিয়েছে যে, রঞ্জি খেলবেন না। বাকিদের জন্য এক রকম নিয়ম, ঋদ্ধির জন্য নিয়ম আলাদা! এটা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।"
আন্তর্জাতিক কেরিয়ারের শুরুতে মহেন্দ্র সিং ধোনির আলোতে ঢাকা পড়েছিলেন ঋদ্ধি। ধোনি বিদায়ের পর টেস্ট কেরিয়ার যখন মধ্যগগনে তখন পন্থের সঙ্গে তাঁর ছায়াযুদ্ধ লাগিয়ে দেয় একদল প্রচারমাধ্যম। সেই ২০২০ সালের নিউজিল্যান্ড সফর থেকে তাঁর গায়ে 'ব্যাকআপ' তকমা লেগেছিল। ২০২১ সালের শেষ দিকে অ্যাডিলেড টেস্টের পর 'সুপারম্যান' গত বছর কিউইদের বিরুদ্ধে মাঠে নামার সুযোগ পান। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরেও অনুশীলন করা ছাড়া কোনও উপায় ছিল না। কারণ ম্যাচের পর ম্যাচ খারাপ ব্যাটিং ও কিপিং করলেও, 'তরুণ' তকমা লাগানো পন্থের প্রতি টিম ম্যানেজমেন্ট বড্ড বেশি স্নেহশীল।
আরও পড়ুন: Dhoni-র বিরাট ওয়ানডে রেকর্ড ভাঙতে শুধু এই কাজ করতে হবে Rohit-কে
এত লাঞ্ছনা হজম করার পরেও দেশের মাঠে কিউইদের বিরুদ্ধে শেষ সিরিজ়ে ঋদ্ধি ঘাড়ে ব্যথা নিয়ে অপরাজিত ৬১ রানের লড়াকু ইনিংস খেলেছিলেন। বিদেশের মাঠে তিনি বেশ কয়েকটা ইনিংসে রান করতে পারেননি। তবে সেই তালিকায় তো ঋদ্ধি একা নন। আরও বড় রথি মহারথীদের নাম আছে। তাহলে শুধু ঋদ্ধির মতো নীরব যোদ্ধার প্রতি বারবার অবিচার কেন করা হচ্ছে? প্রশ্ন তুলেছে তাঁর ঘনিষ্ট মহল।
জাতীয় দলের দুই সিনিয়র পূজারা ও রাহানেকে কামব্যাক করার জন্য বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় রঞ্জি খেলার পরামর্শ দিয়েছিলেন। হার্দিকের জন্যও তাঁর একই প্রেসক্রিপশন ছিল। এহেন বোর্ড প্রধান কি আর বঙ্গ সন্তানের পাশে দাঁড়াবেন? সেটা দেখার অপেক্ষায় ভারতীয় ক্রিকেট। সেটা না হলে ঋদ্ধিমানের সব চোখ ধাঁধানো ক্যাচ, ৪০টি টেস্টে ১৩৫৩ রান, ৩টি শতরান ও ৬টি অর্ধ শতরান, ধোনির ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ১১৭ এই পরিসংখ্যানগুলো থেকে যাবে আজীবনের জন্য।