ইস্টবেঙ্গলে খেলার স্বপ্ন অধরা, মাঠেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চলে গেলেন ফুটবলার Debyojyoti Ghosh

ঠিক এমন পরিস্থিতির মোকাবিলা করেছিলেন প্রাক্তন ফুটবলার দেবজিত ঘোষ। ২০০৩ সালে ঠিক এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিলেন দেবজিত। আশিয়ান কাপ চলার সময় তাঁর হৃদযন্ত্রে সমস্যা দেখা দিয়েছিল।

Updated By: Mar 19, 2022, 10:56 PM IST
ইস্টবেঙ্গলে খেলার স্বপ্ন অধরা, মাঠেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চলে গেলেন ফুটবলার  Debyojyoti Ghosh
২৫ বছরে থেমে গেলেন প্রতিশ্রুতিমান দেবজ্যোতি ঘোষ।

নিজস্ব প্রতিবেদন: এক বছর আগেও তিনি দাপিয়ে খেলে গিয়েছেন কলকাতা ময়দানে। কলকাতা লিগে রানার্স আপ রেলওয়ে এফসি দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন দেবজ্যোতি ঘোষ। সেই পারফরম্যান্সের সুবাদে এ বার লাল-হলুদে সইও করে ফেলেছিলেন এই প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলার। কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের হয়ে আর খেলা হল না। কারণ শনিবার খেলার মাঠেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন ২৫ বছরের এই যুবক। তাও আবার খেলা শেষ হওয়ার মাত্র পাঁচ মিনিট আগে মারা যান দেবজ্যোতি। 

দেবজ্যোতি ঘোষের বাড়ি নদিয়ার কৃষ্ণনগর চৌরাস্তার সুকুল রোডে। শনিবার কৃষ্ণনগর সেন্ট্রাল ক্লাবের হয়ে ধুবুলিয়া থানার বেলপুকুর নামের একটি গ্রামে খেলতে গিয়েছিলেন দেবজ্যোতি। খেলা চলাকালীন অসুস্থ হয়ে পড়েন মাঠের মধ্যেই। দেবজ্যোতির এক সতীর্থের কথায়, "খেলা শেষ হওয়ার মিনিট পাঁচেক আগে ও হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে যায়। আমরা ওর কাছে ছুটে গিয়ে দেখি ওর দাতকপাটি লেগে গিয়েছে। প্রথমে মাথায় জল দিয়ে, হাওয়া দিয়ে ওকে সুস্থ করার চেষ্টা করা হয়।" 

ঠিক এমন পরিস্থিতির মোকাবিলা করেছিলেন প্রাক্তন ফুটবলার দেবজিত ঘোষ। ২০০৩ সালে ঠিক এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিলেন দেবজিত। আশিয়ান কাপ চলার সময় তাঁর হৃদযন্ত্রে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। সেই সময় দেবজিতের প্রাণ বাচিয়েছিলেন ব্রাজিলিয়ান ডগলাস। এহেন দেবজিত বলেছিলেন, "ছেলেটা নিজের যোগ্যতায় ধীরে ধীরে উঠে আসছিল। মাত্র ২৫ বছর বয়সে এ ভাবে চলে যাওয়া একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না। খবরটা শুনে খুব খারাপ লাগছে।" 

 

Debu

সদ্য প্রয়াত দেবজ্যোতির সঙ্গে আবার দেবজিতের নামের মিল রয়েছে। দুজনেই নদিয়া জেলা থেকে উঠে এসেছেন। সেই প্রসঙ্গে এই প্রাক্তন ফুটবলার যোগ করলেন,"যে কোনও মানুষের মৃত্যু বেদনাদায়ক। কিন্তু সেই মৃত্যু যদি মাঠে হয় সেটা আরও বেদনাদায়ক হয়ে যায়। কিন্তু আমার মূল বক্তব্য হল মফস্বল থেকে আসা ছেলেরা সংসার চালানোর জন্য খেপ ফুটবল খেলে। কারণ কলকাতা মাঠে খেলে খুব বেশি টাকা রোজগার করা যায় না। তাই যারা খেপ ফুটবলের প্রতিযোগিতা আয়োজন করে তাঁদের আরও যত্নশীল হওয়া উচিত। মাঠের ধারে ফার্স্ট এইড ও অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা রাখা উচিত। কারণ একটা খেপ প্রতিযোগিতায় অনেক টাকা লগ্নি করা হয়। তাই ফুটবলারদের স্বাস্থের ব্যাপারে আরও বাড়তি দায়িত্ব নেওয়া উচিত। সবাই জানি মৃত্যু বলে আসে না। কিন্তু নুন্যতম প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থা থাকলে দেবজ্যোতি ও অন্যান্য পরিবারকে সারাজীবন ধরে আক্ষেপ করবে না।"  

সতীর্থদের প্রাথমিক চিকিৎসার পরও সুস্থ না হওয়ায় মিনিট পনেরো পরে ধুবুলিয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। ধুবুলিয়া হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাঁর অবস্থা সংকটজনক বলে জানান। দ্রুত দেবজ্যোতির বন্ধুরা তাঁকে কৃষ্ণনগর শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে শেষরক্ষা হয়নি। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ডাক্তাররা।  

দেবজ্যোতি পরিবারের একমাত্র সন্তান। অভাবের সংসার চলত তাঁর উপার্জনেই। তাঁর মৃত্যুতে অথৈ জলে পরিবার। দেবজ্যোতির মতো প্রতিভাবান ফুটবলারের মৃত্যুতে কৃষ্ণনগরের ক্রীড়ামহলে স্বভাবতই শোকের ছায়া নেমে এসেছে। দেবজ্যোতি এলাকার বেশ নামী ফুটবলার। এ বছরই ইস্টবেঙ্গলের হয়ে স্থানীয় লিগে খেলার কথা ছিল তাঁর। তিনি নিয়মিত বরানগর অ্যাডামাস ক্লাবে অনুশীলন করতেন। গত বছর কলকাতা লিগে রানার্স হওয়া রেলওয়েজের হয়ে মাঝমাঠে তাঁর খেলা নজর কেড়েছিল ইস্টবেঙ্গলের। সেখান থেকেই ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের নজরে আসেন তিনি। 

আরও পড়ুন: All England 2022: পঞ্চম ভারতীয় হিসেবে ২১ বছর পর নজির গড়া Lakshya Sen-এর 'লক্ষ্য' এ বার কী?

আরও পড়ুন: IPL 2022: ছবিতে দেখুন ক্রোড়পতি লিগের সেরা ১০ বিতর্কিত ও চমকে দেওয়া ঘটনা

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App) 

.