South 24 Parganas: আগে ৬৯ জনের পরে ফের বাংলাদেশের হাতে গ্রেফতার সুন্দরবনের ১৬ মৎস্যজীবী...
South 24 Parganas: কিছুদিন আগে কাকদ্বীপ থেকে 'ঝড়' নামে একটি ট্রলার বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়েছিল। ট্রলারটি সমুদ্রে বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করেছিল বলে অভিযোগ ওঠে।
নকিব উদ্দিন গাজী: অশান্ত বাংলাদেশ হিন্দুদের উপর আক্রমণের খবর আসছেই। আর তার মধ্যে আবারও নতুন করে বাংলাদেশ প্রশাসনের হাতে গ্রেফতার সুন্দরবনের ১৬ জন মৎস্যজীবী! চাঞ্চল্য, আলোড়ন।
কিছুদিন আগে কাকদ্বীপ থেকে 'ঝড়' নামে একটি ট্রলার বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়েছিল। ট্রলারটি সমুদ্রে বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করেছিল বলে অভিযোগ ওঠে। সেই 'অপরাধে' ১৬ জন মৎস্যজীবীকে গ্রেফতার করে বাংলাদেশ প্রশাসন। আর এতেই এখন প্রহর গুনছে সুন্দরবনের মৎস্যজীবীদের পরিবার।
কিছুদিন আগেই গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে বাংলাদেশ প্রশাসনের হাতে আটকে পড়েছিলেন ৬৯ জন মৎস্যজীবী। এরপর আবার নতুন করে ১৬ জন মৎস্যজীবীকে গ্রেফতার করল বাংলাদেশের নৌসেনা।
একদিকে অশান্ত বাংলাদেশের দিকে দিকে হিন্দুদের উপর আক্রমণের খবর আসছে। অন্য দিকে, তারই মধ্যে কারওর বাবা কারোর স্বামী আবার কারোর ভাই আটকে পড়ে রয়েছেন বাংলাদেশের জেলে। এঁরা কবে ফিরবেন, সে উত্তর কারোরই জানা নেই। ফলে দিন-আনা-দিন-খাওয়া পরিবারগুলি চোখের জলে দিন কাটাচ্ছে!
কাকদ্বীপের পশ্চিম গঙ্গাধরপুর এলাকার বাসিন্দা ওই ট্রলারের মাঝি তেজেন্দ্র মাঝি গিয়েছিল মাছ ধরতে। কিন্তু হঠাৎ করেই পরিবারের কাছে খবর আসে বাংলাদেশ প্রশাসনের কাছে আটকে পড়েছেন তেজেন্দ্র মাঝি। এর পর থেকেই চিন্তায় রয়েছে তাঁর পরিবার। এমনকি তাঁদের পরিবারের অনেকেরই বাংলাদেশের আত্মীয় রয়েছে। বারে বারে তাঁদের ফোন করে সেখানকার পরিস্থিতির কথা খোঁজ নিচ্ছে তেজেন্দ্র মাঝির পরিবার। কবে ফিরবে সে উত্তর তাঁদের জানা নেই।
কাকদ্বীপের অক্ষয় নগর বসন্তপুরের বাসিন্দা প্রসেনজিৎ দাস। পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম তিনিই। ছোট্ট একটি দরমার ঘরে কোনক্রমে ত্রিপল ঘিরে মা-বোনকে নিয়ে থাকতেন। এহেন প্রসেনজিৎ সংসারের হাল ধরতে বেশ কিছু বছর ধরেই গভীর সমুদ্রে যাচ্ছিলেন মাছ ধরতে। কিন্তু হঠাৎ করে বাংলাদেশ প্রশাসনের হাতে আটকে পড়েন প্রসেনজিৎ। সেই খবর পরিবারের কাছে এসে পৌঁছতে কান্নায় ভেঙে পড়েছে তাঁর গোটা পরিবার। হাউ হাউ করে কাঁদছেন প্রসেনজিতের মা। কিছু বলতে পারছেন না। কীভাবে চলবে সংসার? কীভাবে খাওয়া-দাওয়া হবে? এসব তাঁদের জানা নেই। মালিক পক্ষের কাছে বারে বারেই যাচ্ছেন তাঁরা, কিন্তু কোনও সদুত্তর মেলেনি এখনও পর্যন্ত।
অন্য দিকে, মাসখানেক আগেই অক্ষয় নগর বসন্তপুরের বাসিন্দা রাধা দাসের স্বামী মাছ ধরতে গিয়ে আটকে পড়েন বাংলাদেশ প্রশাসনের হাতে। সপ্তাহ পেরোতে না পেরোতে ভাই অভী দাস গিয়েছিলেন মাছ ধরতে। তিনিও আটকে পড়েন বাংলাদেশের জেলে। স্বামী ও ভাই দুজনে আটকে পড়ায় এখন দিশেহারা এই পরিবার।
এর আগে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে বাংলাদেশ প্রশাসনের হাতে গ্রেফতার হওয়া সুরজিৎ দাসের স্ত্রী জানান বাংলাদেশের জেলে নাকি তাঁদের ঠিকঠাক খেতে দেওয়া হচ্ছে না। কষ্টের মধ্যে রয়েছেন তাঁর স্বামী। পাশাপাশি কাকদ্বীপের একাধিক এলাকার বাসিন্দার আত্মীয় রয়েছেন বাংলাদেশে। অশান্ত বাংলাদেশের খবর যখনই তাঁদের কাছে এসে পৌঁছচ্ছে, তখনই প্রিয়জনের চিন্তায় প্রহর গুনছে এই সমস্ত মানুষগুলি।
আরও পড়ুন: Potato Supply: মঙ্গলবার থেকেই আর পাতে পড়বে না আলু? আত্মারাম খাঁচাছাড়া বাঙালির...
তবে এই বিষয় নিয়ে সুন্দরবন সমাজজীবী মৎস্য ইউনিয়নের সম্পাদক সচিনাথ পাত্র জানান, ইতিমধ্যেই প্রশাসনের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলা হয়েছে, যে সমস্ত আইনি পদক্ষেপে করা দরকার, তা আমরা নিয়েছি। আমরা চেষ্টা করছি, যত শীঘ্রই সুন্দরবনের মৎস্যজীবীদের ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়। তবে কবে ফিরবেন বাংলাদেশে আটকে-থাকা সুন্দরবনের এই সমস্ত মৎস্যজীবীরা, কবে শান্ত হবে বাংলাদেশ-- এসব উত্তর হয়তো কারোরই জানা নেই!
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)