টিটাগড়ে তৃণমীল কর্মী খুনের ঘটনায় ধৃত আরও ৪
আগেই ধৃত ভোলাকে জেরা করে টিটাগড় গুলিকাণ্ডে সামনে আসে খুনের মোটিভ। জেরায় ভোলা স্বীকার করে যে, খুনের পিছনে রয়েছে প্রোমোটিং নিয়ে বিবাদ।
নিজস্ব প্রতিবেদন : টিটাগড় গুলিকাণ্ডে গ্রেফতার করা হল আরও ৪ জনকে। খুনের ষড়যন্ত্রে যুক্ত ছিল এই ৪ জন। ধৃতরা হল আজাদ আলি, এমডি নইম,বলরাম পাসি ও মুকেশ রায়। অভিযোগ, ধৃতরা অস্ত্র সরবরাহ ও ঘটনার দিন দুষ্কৃতীদের এলাকা থেকে পালাতে সাহায্য করেছিল।
এর আগেই ধৃত ভোলাকে জেরা করে টিটাগড় গুলিকাণ্ডে সামনে আসে খুনের মোটিভ। জেরায় ভোলা স্বীকার করে যে, খুনের পিছনে রয়েছে প্রোমোটিং নিয়ে বিবাদ। পুলিসকে ভোলা জানায় যে, এলাকায় প্রোমোটিং সিন্ডিকেটের যে একচ্ছত্র রাজত্ব সে কায়েম করেছিল, সম্প্রতি তাতে ভাগ বসাতে চাইছিলেন কাউন্সিলর। কাউন্সিলর নিজে সরাসরি এ বিষয়ে কথাবার্তা না চালিয়ে তার ডান হাত বলে পরিচিত সতীশকে বারবার ভোলার কাছে পাঠাতেন। সিন্ডিকেট দখলদারির আশঙ্কা থেকেই ষড়যন্ত্রের প্রাথমিক ছক কষা হয়। প্রথমে সুপারি কিলার ভাড়া করে হত্যার ছক করা হলেও, পরে নানা দিক খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত বদল করে ভোলা।
পুরনো অপরাধী পুলিসের হাতে তাড়াতাড়ি ধরা পড়ার সম্ভাবনা থাকে। কারণ এদের ট্র্যাক রেকর্ড আগে থেকেই পুলিসের খাতায় থাকে। সেক্ষেত্রে খুনের মামলা নেই এমন কোনও ছোটখাট অপরাধীকে মোটা টাকার লোভ দেখিয়ে এই কাজ করানো অনেক বেশি নিরাপদ বলেই মনে করেছিল ভোলা। তার সঙ্গে যোগাযাগ হয় কালা মুন্না ও শেখ সমীরের। পরে সেই দলে যোগ দেয় সঞ্জয় দাস। চার জন মিলে মণীশকে খুনের ছক কষে। কিন্তু ঘটনাস্থলে মণীশ থাকলেও প্রচুর লোকজন থাকায় ঘাবড়ে যায় মুন্না। ঘটনাচক্রে তখনই কাজ থেকে বাড়িতে টিফিন খেতে ফিরছিলেন সতীশ। তাঁকেই হাতের কাছে পেয়ে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি চালিয়ে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন, 'কুকথায় ট্যাগ লাইন' অনুব্রতকে নজিরবিহীন আক্রমণ শতাব্দীর
সোমবার টিটাগড়ের মুচিপাড়া তালপুকুরে স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সোসাইটি ক্লাবের নির্মীয়মান কালীমণ্ডপের সামনে গুলিবিদ্ধ হন ২২ বছরের এক যুবক সতীশ মিশ্র। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ২ দুষ্কৃতী হেঁটে এসে তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত সতীশকে প্রথমে ব্যারাকপুরের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে সোমবার রাতেই বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। রাত্রে ৮ ঘণ্টা অস্ত্রোপচারের পরেও সতীশ মিশ্রের দেহ থেকে বুলেট বের করা সম্ভব হয়নি। বন্ধ হয়নি রক্তক্ষরণও। মঙ্গলবার ভোরে সতীশের মৃত্যু হয়।
তৃণমূল কর্মী সতীশ মিশ্র খুনের ঘটনায় তদন্তে নেমে প্রথমে ভোলা প্রসাদ ও কালা মুন্নাকে গ্রেফতার করে পুলিস। মঙ্গলবার দুপুরে গ্রেফতার করা হয় দলের বাকি ২ জন সদস্য সঞ্জয় দাস ও শেখ সমির ওরফে সঞ্জীবকে।