'হোমকে জানিয়েও লাভ হয়নি', লিলুয়াকাণ্ডে বিস্ফোরক নির্যাতিতা; মনেই পড়ছে না সুপারের
''ওরা নিরাপত্তারক্ষীর মতো ঘুরে বেড়ায়, কিছু দেখে না।'
নিজস্ব প্রতিবেদন: খাতায়-কলমে সরকারি হোম। কিন্তু নজরদারি কোথায়! পুরুলিয়ার (Purulia) পর এবার হাওড়ার (Howrah) লিলুয়ার (Liluah) হোমে চরম নৃশংসতা শিকার নাবালিকা। ২০ দিন পর হাতে সেফটিপিনের দগদগে ক্ষত নিয়ে বাড়ি ফিরেছে সে। Zee ২৪ ঘণ্টাকে নির্যাতিতা কিশোরী জানিয়েছে,'হোমে সবাই সবার হাতে নাম লিখছিল। সিনিয়র দিদিরা বলল, তোর হাতেও নাম লিখতে হবে। আমি রাজি ছিলাম না। জোর করে হাতে নাম লিখে দিয়েছে।' যদিও নির্যাতিতা হোমে ছিল না, সেটাই মন করতে পারছেন না হোমের সুপার! প্রশ্নের মুখে সরকারি হোমের নিরাপত্তা। দোষীদের শাস্তির দাবিতে সরব নির্যাতিতার পরিবার।
জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা ওই কিশোরীর বাড়ি হুগলিতে। স্থানীয় একটি স্কুলে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সে। গত ১৫ ডিসেম্বরের রাতে বাবা-মার সঙ্গে ঝগড়া করে বাড়ি ছাড়ে ওই নাবালিকা। তারপর? এদিক-সেদিক ঘুরতে ঘুরতে সে চলে আসে হাওড়া (Howrah Railway Station) স্টেশনে। সেখানে প্রথমে ওই নাবালিকাকে উদ্ধার করে জিআরপি (GRP)। শেষপর্যন্ত চাইল্ড লাইনের আধিকারিকদের মারফৎ তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় হাওড়ারই লিলুয়ার একটি সরকারি হোমে। ২০ দিন পর যখন বাড়ি ফেরে, তখন পরিবারের লোকেরা দেখেন, ওই নাবালিকার শারীরিক ও মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। কেন? বাড়ির লোককে গোটা ঘটনাটি জানায় ওই নাবালিকা। Zee ২৪ ঘন্টাকে সে জানিয়েছে, 'হোমের দিদিরাই সব। নতুনদের বড়দের কথা শুনে চলতে হয়। হোম কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনও লাভ নেই। ওরা নিরাপত্তারক্ষীর মতো ঘুরে বেড়ায়, কিছু দেখে না।'
আরও পড়ুন: নাবালিকার হাতে সেফটিপিনে খোদাই সিনিয়রদের নাম, নৃশংস অত্যাচার লিলুয়ার সরকারি হোমে
অভিভাবকহীন ছেলে-মেয়েদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য রাজ্যের সর্বত্র হোম চালায় সরকার। কিন্তু সেই হোম যারা থাকে, তাদের সুরক্ষা দেবে কে! লিলুয়াকাণ্ডের পর সেই প্রশ্ন উঠেছে। কী বলছে হোম কর্তৃপক্ষ? লিলুয়ার ওই হোমের সুপারের দাবি, 'কোনও অভিযোগ আসেনি। হোম ওই নাবালিকা ছিল কিনা, তা মনে করতে পারছি না'! উল্লেখ্য, সরকারি হোমে কোনও নাবালিকা এলে, নাম নথিভুক্ত করে রাখা হয়। সেক্ষেত্রে সুপার কীভাবে ঘটনাটি বেমালুম ভুলে গেলেন? প্রশ্ন উঠেছে।