শহর-জেলার বাজারে খুচরো আতঙ্কে জেরবার ক্রেতা-বিক্রেতা
ওয়েব ডেস্ক: একসময় ছিল কয়েনের আকাল। এখন আবার বাজার উপচে পড়ছে কয়েনে। কয়েনভীতিও তৈরি হয়েছে শহরের হাটে বাজারে। দুটাকা, এক টাকা, পাঁচ টাকা , দশ টাকার কয়েন নিতেই চাইছেন না ক্রেতা বা বিক্রেতা কেউই। শহরের খুচরা টাকার লেনদেন হয় সোনাপট্টি এলাকায়। আমরা কথা বলেছি পাইকারি ব্যবসায়ীদের। তাদের বক্তব্য , থলে থলে কয়েন নিয়ে বাজারে আসছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। কিন্তু এতো খুচরা তারাই বা রাখবেন কোথায়, কারণ তাদের থেকে খুচরো নেওয়ার লোকই নেই। রিজার্ভ ব্যাঙ্কেও খুচরা দিয়ে টাকা নেওয়ার পথ বন্ধ।
একসময় রেজগি বদলের কারবারে ভালোই লাভ ছিল। খুচরোর সেই ব্যবসাতেও টান পড়েছে। একশ টাকার খুচরো দিলে ব্যবসায়ীকে ১০৫ টাকা ফেরত দিতেন রেজগি ব্যবসায়ী। তিনি আবার ১০০ টাকার বিনিময়ে নিতেন ১০৭ টাকা। মানে ১০০ টাকায় সাত টাকা লাভ। এখন সে ব্যবসাওয় ভরাডুবি। বরং বদলে গেছে ব্যবসার চরিত্র। এখন বিক্রেতাকেই ১০০ টাকার খুচরা জমা দিয়ে ফিরতে হচ্ছে ৮০ টাকা নিয়ে। খুচরোর বদলে টাকা নিতে গেলে লোকসানেই হাঁটতে হচ্ছে তাদের।
জেলার বাজারেও সেই একই খুচরো আতঙ্ক। উত্তর চব্বিশ পরগনার বারাকপুর শিল্পাঞ্চল থেকে শুরু করে বাসুদেবপুর বা পুনপুর সর্বত্রই একই ছবি। চায়ের দোকান থেকে, বাসের কন্ডাক্টর সবার মনেই খুচরো ভীতি। মাছের আড়ত থেকে সবজি ব্যবসায়ী সবারই এক কথা। ক্রেতাদের থেকে নেওয়া খুচরো জমে জমে পাহাড় হয়ে গেছে। কিন্তু খুচরো ক্রেতাদের দিতে গেলেই বাঁধছে গন্ডগোল। কারনণ কোনও ক্রেতাই খুচরো নিতে চাইছে না। খুচরোর জোগান বাজারে বেড়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই। সবথেকে বড় সমস্যায় মুদি দোকানিরা। মহাজন খুচরাো না নেওয়াতে খুচরো টাকার বাড়িতেই জমা হচ্ছে। বাড়িতেই জমছে কয়েনের পাহাড়। ফলে পুঁজি সঙ্কটে মুদি দোকানিরা।
বিক্রেতাদের দাবি, ব্যাঙ্ক খুচরো নেওয়া বন্ধ করে দেওয়াতেই সমস্যা আরও বেড়েছে। হুগলির তারকেশ্বর, শেওড়াফুলি, শ্রীরামপুর , চুচুঁড়া জুড়ে এখন সর্বত্রই এই খুচরো আতঙ্কের ছবি। খুচরো দেখলেই মুখ ফেরাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। খুচরো আতঙ্কের জেরে ক্রেতারাও পড়েছেন মহা সমস্যায়। বাড়িতে জমছে খুচরোর পাহাড়। অথচ নেওয়ার লোক নেই। খুচরো আতঙ্কে সমান জেরবার বাসের কন্ডাক্টররাও। খুচরো দিয়ে টাকা নেওয়ার বাজারেও একই সমস্যা। আগে ১০০ টাকার বাটা দিলে ক্রেতা পেতেন ১২০ টাকা। এখন ফুল লস। এখন ১০০ টাকা দিলে মিলছে ৮০ টাকা। ক্ষতি মেনেই পথ চলতে হচ্ছে অটো, বাস, চালক, বাসচালক থেকে সব্জি ব্যবসায়ীদের ও ছোট ব্যবসায়ীদের।