Durga Puja 2022: হেরিটেজের মধ্যে হেরিটেজ! সে গল্প জানেন কি?
Durga Pujo 2022 : কুমোরটুলি সর্বজনীনের পুজোর প্রেসিডেন্ট তখন নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু। কিন্তু সেবার ঘটে এক দুর্ঘটনা। পুড়ে যায় কুমোরটুলির ঠাকুর। ভীষণ বিপদে পড়ে পঞ্চমীর রাতে বরাত যায় জি পালের কাছে। সটান জানান, একদিনের মধ্যে একচালা ঠাকুর বানানো সম্ভব নায়। তা হলে উপায়? অবশেষে একাধিক শিল্পীর রাত জাগা অক্লান্ত পরিশ্রমে পাঁচ চালা ঠাকুর গড়লেন জি পাল। বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে সেই বছর থেকে আলাদা দুর্গা, অসুর, সিংহ, লক্ষী, গনেশ, কার্তিক ও সরস্বতীর আরাধনা প্রবেশ করল বঙ্গজীবনে।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ইউনেস্কো (UNESCO) দুর্গাপুজোকে দিয়েছে হেরিটেজ স্বীকৃতি। এবার তাই বাঙালির প্রাণের উৎসব আরও প্রানবন্ত। তবে দুর্গাপুজোর সঙ্গে হেরিটেজের সম্পর্ক বেশ পুরোনো। আজ খোঁজ দেব হেরিটেজ পুজোর মধ্যে আরও এক হেরিটেজের। তাও আবার কুমোরটুলিতে। দুর্গাপুজো এবং কুমোরটুলি সমনাম। কলকাতার এই কুমোরপাড়াতেই আছে প্রায় একশ ছুঁই ছুঁই স্টুডিও। তাঁদের মধ্যেই অন্যতম জি পাল ও সন্স। এইখানেই প্রথম একচালা থেকে পাঁচ চালায় ঠাকুর গড়া হয় । ২০০৯ সাল থেকে কলকাতা পুরসভার হেরিটেজ খাতায় নাম ওঠে এই স্টুডিওর। প্রায় ১৩বছর পর সেই স্টুডিওর শুরু হয়েছে সংস্কার।
১৯২৭ সালে তৎকালীন বিখ্যাত শিল্পী গোপেশ্বর পাল কুমারোটুলিতে প্রথম স্টুডিও তৈরি করেন। ঠিকানা, চল্লিশ এ কাশিমিত্র ঘাট স্ট্রিট। গোটা বিশ্বে রামকৃষ্ণ মিশনের সমস্ত রামকৃষ্ণ মূর্তি যাদের হাতে বানানো, সেই জি পালের বংশধররাই কৃষ্ণনগর থেকে প্রতিমা শিল্পীদের একত্রিত করে, শোভাবাজার ঘাটের কাছে, কুমোরটুলি এলাকায় প্রতিমা শিল্পের হাব তৈরি করেন।
২০০৯ সালেই কলকাতা পুরসভা এই স্টুডিওটিকে হেরিটেজ স্বীকৃতি দেয়। ১৯৩৮ সাল থেকে এখানেই একচালা দুর্গা প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করেন। কুমোরটুলি সর্বজনীনের পুজোর প্রেসিডেন্ট তখন নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু। কিন্তু সেবার ঘটে এক দুর্ঘটনা। পুড়ে যায় কুমোরটুলির ঠাকুর। ভীষণ বিপদে পড়ে পঞ্চমীর রাতে বরাত যায় জি পালের কাছে। সটান জানান, একদিনের মধ্যে একচালা ঠাকুর বানানো সম্ভব নায়। তা হলে উপায়? অবশেষে একাধিক শিল্পীর রাত জাগা অক্লান্ত পরিশ্রমে পাঁচ চালা ঠাকুর গড়লেন জি পাল। বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে সেই বছর থেকে আলাদা দুর্গা, অসুর, সিংহ, লক্ষী, গনেশ, কার্তিক ও সরস্বতীর আরাধনা প্রবেশ করল বঙ্গজীবনে।
আরও পড়ুন : Durga Puja 2022: দুর্গাপুজো এবার 'স্বর্গে'! এই প্রথম মেঘ-কুয়াশার ভিতরে বেজে উঠবে ঢাক...
এহেন ইতিহাস সৃষ্টিকারী শিল্পীর স্টুডিও কলকাতার হেরিটেজ। দুর্গাপুজোও আজ হেরিটেজ। তাই কান পেতেছি হেরিটেজের ভিতরের হেরিটেজে। জি পাল ও সন্সকে কুমোরটুলির আতুঁরঘর বলা হয়। দীর্ঘকাল ধরে হাজারও ইতিহাসের সাক্ষী এই হেরিটেজ, কিন্তু জানার উপায় কি? পুজোর আগে আগে ঘুরেই আসুন একবার। কান পেতে দেখুন, ধূসর টিনের ছাদ, আলগোছে থাকা গুচ্ছ মূর্তি, বেলজিয়ামের ভাঙা কাচে। ওরা সব জানে, যদি আরও গল্প বলে!