ICDS Worker Death: পাকা বাড়িকে কাঁচা হিসেবে দেখানোর চাপ! স্বরূপনগরে রহস্যমৃত্যু আইসিডিএস কর্মীর
এনিয়ে শাঁড়াপুল নির্মাণ পঞ্চায়েতের প্রধান মায়া রায় মজুমদার বলেন, ওই আইসিডিএস কর্মীর মারা যাওয়ার কথা শুনেছি। পুলিসকে অনুরোধ করব ঘটনার সঠিক তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দিক
বিমল বসু: বাড়ির কাছ থেকে উদ্ধার হল আইসিডিএস কর্মীর মৃতদেহ। সোমবার স্বরূপনগরে শাঁড়াপুলে বাড়ির কাছেই একটি গাছে রেবা বিশ্বাস নামে ওই আইসিডিএস কর্মীর দেহ উদ্ধার হয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, সরকারি আবাস যোজনার সমীক্ষা করছিলেন ওই কর্মী। ওই কর্মীর পরিজনদের দাবি, বেশকিছু দিন ধরে মানসিক চাপে ছিলেন তিনি। প্রসঙ্গত, আবাস যোজনার বাড়ির সমীক্ষা করতে গিয়ে প্রবল সমস্যায় পড়তে হচ্ছে অঙ্গনওয়াড়ী ও আশা কর্মীদের। রাজ্যের বহু জায়গায় ওই সমীক্ষার কাজ করবেন না বলেও জানিয়েছেন তাঁরা। স্বরূপনগরের আইসিডিএস কর্মীর কী ধরনের মানসিক চাপ ছিল? এটাই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
আরও পড়ুন-চিংড়িঘাটা মোড়ে ওঠার মুখে ভয়াবহ দুর্ঘটনা, দুমড়ে-মুচড়ে গেল স্মার্ট ক্যাব
স্বরূপনগরের শাঁড়াপুল বিশ্বাসপাড়ায় বাড়ি ওই আইসিডিএস কর্মীর। বয়স পঞ্চাশের কাছাকাছি। তাঁর পরিবারের লোকজনের দাবি, বেশকিছু দিন ধরে আবাস যোজনার সমীক্ষা করার সময়ে তাঁর উপরে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল। কোথাও কারও পাকা বাড়ি রয়েছে তা কাঁচা বাড়ি হিসেবে দেখাতে বলা হচ্ছিল। এমনকি তাঁকে গাড়ির সামনে ফেলে দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। অন্যদিকে, বিডিও অফিস থেকেও বলা হয়েছিল কোনওরকম অনিয়ম যেন না হয়। এই দুইয়ের মধ্যে পড়ে মানসিক চাপে ছিলেন তিনি। স্থানীয় তৃণমূল নেতা ও রেবার সম্পর্কে কাকা অরুণ বিশ্বাসও জানিয়েছেন, রেবার উপরে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল। গতকালও এনিয়ে তার কথা হয়। এর মধ্যেই এমন মারাত্মক ঘটনা।
অরুণ বিশ্বাস বলেন, গতকাল বাজারে যাচ্ছিলাম। আমাকে ও ডাকল। বলল, কাকা আমি সুইসাইড করব নয়তো চাকরি ছেড়ে দেব। গ্রামে সার্ভে করতে যাচ্ছি, যার দোতলা বাড়ি সে বলছে মাটির বাড়ি লিখে দাও। আমি তো এসব করতে পারব না। এরপর যখন ফের এনকোয়ারি হবে তখন তো আমার উপরে চাপ হবে। আমি এই চাপ নিতে পারছি না। আমি ওকে বললাম, সুইসাইড করার কোনও প্রশ্নই নেই। তুই থানায় বল। নয়তো চাকরি ছেড়ে দে। ওর দাবি ওকে টানা হুমকি দেওয়া হতো। বলা হতো, ঘর না পেলে দেখে নেব। এই চাপ ও নিতে পারছিল না।
মৃত আইসিডিএস কর্মীর পরিবারের দাবি, ওই হুমকির বিষয়টি রেবা-সহ এলাকার বহু আইসিডিএস কর্মী বিডিও অফিসে জানিয়েছেন। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। এলাকার বহু আইসিডিএস কর্মীর দাবি, আমাদের এই পঞ্চায়েতে যদি একশো জনের নাম তালিকায় থাকে তাহলে ওদের সবাইয়ের কাঁচা বাড়ি বলে লেখার চাপ দেওয়া হচ্ছে। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, কাঁচা বাড়ি না লিখলে গাড়ির তলায় ফেলে দেব। কাজের কটা দিন আমাদের সিভিক পুলিস দেওয়া হয়ছে। এরপর কাজ ফুরলো কি আমাদের সঙ্গে সিভিক যাবে?
এনিয়ে শাঁড়াপুল নির্মাণ পঞ্চায়েতের প্রধান মায়া রায় মজুমদার বলেন, ওই আইসিডিএস কর্মীর মারা যাওয়ার কথা শুনেছি। পুলিসকে অনুরোধ করব ঘটনার সঠিক তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দিক।