Mamata On Amartya Sen Property: 'মমতা সঠিক হলে অমর্ত্যের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত বিশ্বভারতীর উপাচার্যের'
শান্তিনিকেতনে একটি জমির কিছু অংশ ছেড়ে দিতে অমর্ত্য সেনকে চিঠি দিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের লেখা ওই চিঠিতে দাবি করা হয়েছে অমর্ত্য সেন জোর করে ১৩ ডেসিমেল জায়গা দখল করে রেখেছেন
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: অমর্ত্য সেনের জমি নিয়ে বিশ্বভারতীর সংঘাত নিয়ে এতদিন মুখ খোলেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। সোমবার শান্তিনিকেতনে প্রতীচীতে গিয়ে অমর্ত্য সেনের হাতে তাঁর জমি সংক্রান্ত নথি তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি তিনি বলেন, অমর্ত্য সেন যে তথ্য দিয়েছেন সেটাই তাঁর ঠিক বলে মনে হয়েছে। এদিকে এনিয়ে এবার মুখ খুললেন বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা। এক ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, অমর্ত্য সেনের জমি সংক্রান্ত যে তথ্য প্রেস কনফারেন্সে করে দেওয়া হল তা যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে বিশ্বভারতীয় উপচার্যের উচিত অমর্ত্য সেনের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেওয়া।
আরও পড়ুন-প্রতীচীতে মমতা, অমর্ত্য সেনের হাতে তুলে দিলেন জমির নথি, ঘোষণা Z+ ক্যাটেগরির নিরাপত্তার
সোমবার শান্তিনিকেতনে অমর্ত্য সেনের বাড়িতে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। নোবেল জয়ীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর এক সাংবাদিক সম্মেলনে মমতা বলেন, 'বিশ্বভারতীকে রবীন্দ্রনাথের চোখে দেখি। গৌরীকীকরণের চোখে দেখি না। অশ্রদ্ধা করা কিছু লোকেদের অভ্যাস। জমির ভান্ডার থেকে জমি দেওয়া হয়েছিল বিশ্বভারতীকে। ১৯৮৪-এর পরের ল্যান্ড রেভিনিউ রিপোর্ট অনুযায়ী, যে জমিটা লিজে দেওয়া হয়েছিল তার পরিমাণ ১.৩৮ একর। এখন বিশ্বভারতীর দাবি, ১.২৫ একর জমি লিজে রাখার কথা! সেখানে অমর্ত্য সেন আরও ১৩ ডেসিমেল বেশি জমি অধিগ্রহণ করে রেখেছেন!'হিসেব কষে মমতা বুঝিয়ে দেন, বিশ্বভারতীর দাবি ভুল। কারণ রাজ্য সরকারের জমি রাজস্ব দফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী অমর্ত্য সেনের নামে ১৩৮ ডেসিমেল জমি রয়েছে। এরপরই ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রীর সাফ প্রশ্ন, 'অমর্ত্য সেনকে অপমান করা হচ্ছে না কেন? অমর্ত্য সেনকে শ্রদ্ধা জানাতেই আমি এসেছিলাম। অমর্ত্য সেনের যেন কোনও সমস্যা না হয়। জমির কাগজ নিয়ে এসেছি। তথ্যের উপর ভিত্তি করে সত্য বলতে চাই। সত্য জানাতেই এখানে ছুটে আসা। অসম্মানের বদলে সম্মান জানাতে নথি দিলাম। জমির প্রকৃত নথি অমর্ত্য সেনকে তুলে দিলাম।'
মুখ্যমন্ত্রীর ওই সাংবাদিক সম্মেলনের পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হন অনুপম হাজরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্টে অনুপম মমতার নাম না করে লেখেন, প্রফেসর অমর্ত্য সেনের শান্তিনিকেতনের বাড়ির জমি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য -যা এই প্রেস কনফারেন্সে তুলে ধরা হল, তা যদি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে সঠিক হয়ে থাকে, তাহলে বিশ্বভারতী'র উপাচার্যের উচিত অবিলম্বে প্রফেসর অমর্ত্য সেনের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেওয়া ! তবে দিদিমণিকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া দরকার, বিশ্বভারতী একটি স্বায়ত্তশাসিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান; বিশ্বভারতী'র উপাচার্য এবং বিজেপি সমার্থক নয়; বিশ্বভারতীতে উপাচার্য যা সিদ্ধান্ত নেবেন বা নিয়ে থাকেন -তার দায় বিজেপি'র নয়।
উল্লেখ্য, শান্তিনিকেতনে একটি জমির কিছু অংশ ছেড়ে দিতে অমর্ত্য সেনকে চিঠি দিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের লেখা ওই চিঠিতে দাবি করা হয়েছে অমর্ত্য সেন জোর করে ১৩ ডেসিমেল জায়গা দখল করে রেখেছেন। ওই ১৩ ডেসিমেল জমি দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে হস্তান্তর করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। নোবেল বিজয়ীর বাবা আশুতোষ সেন ১৯৪৩ সালে ইউনিভার্সিটির কাছ থেকে ১২৫ ডেসিমেল জমি লিজ নিয়েছিলেন। এমনটাই দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।