জ্যোতিষীর কথামতো লাল রঙের বাইকে চেপেই চলত 'চেনম্যান'অপারেশন! কেন মহিলাদের খুন করত সে?

সেই লাল রঙ-ই কাল হয় তার। লাল বাইক ও লাল হেলমেটের সূত্র ধরে পূর্ব বর্ধমানের কালনার 'চেনম্যান' শেখ কামরুজ্জামানকে শণাক্ত করেছিলেন সিভিক ভলেন্টিয়ার অনির্বাণ। 

Updated By: Jun 5, 2019, 12:26 PM IST
 জ্যোতিষীর কথামতো লাল রঙের বাইকে চেপেই চলত 'চেনম্যান'অপারেশন! কেন মহিলাদের খুন করত সে?

নিজস্ব প্রতিবেদন: জ্যোতিষী বলেছিলেন লাল রঙ নাকি তার শুভ, পয়মন্ত। কিন্তু সেই লাল রঙ-ই কাল হয় তার। লাল বাইক ও লাল হেলমেটের সূত্র ধরে পূর্ব বর্ধমানের কালনার 'চেনম্যান' শেখ কামরুজ্জামানকে শণাক্ত করেছিলেন সিভিক ভলেন্টিয়ার অনির্বাণ। এখন কামরুজ্জামান পুলিসের জালে। দীর্ঘ আট বছর ধরে তার শিকার হয়েছেন বহু মহিলা। বলাগড়, পাণ্ডুয়া, কালনায় রীতিমতো ত্রাস হয়ে উঠেছিল সে। বাড়িতে একা থাকার সুযোগ নিয়েই লোহার শিকল ও রড নিয়ে মহিলাদের ওপর হামলা চালাত সে। তারপর চলত বিকৃত যৌন অত্যাচার। কামরুজ্জামানকে জেরা করে পুলিসের হাতে উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। 

জানা গিয়েছে, কামরুদজ্জামানের হাতে খড়ি ২০১৩ সালে। ওই বছর চুরি করতে গিয়ে প্রমাণ লোপাটের উদ্দেশে দুই মহিলাকে খুন করেছিল সে। তারপর থেকে খুনের নেশা চেপে যায় তার মাথায়। এরই মধ্যে জ্যোতিষীকে হাত দেখায় কামরুজ্জামান। জ্যোতিষী তাকে বলেছিলেন, লাল রঙ তার শুভ। লাল রঙের বাইক ও হেলমেট কিনে ফেলে সে। এরপর তাতে চেপেই চলত অপারেশন। ফিটফাট জামা পড়ে সক্কাল সক্কাল বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ত সে। কোন কাজে যাচ্ছে তা কেউই জানত না। 
কামরুজ্জামানের আগেও একটি বিয়ে ছিল। কিন্তু সেই বিয়ের কথা পুলিসের কাছে প্রথমে স্বীকারই করেনি সে। জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদে প্রথম বিয়ে হয়েছিল তার। কিন্তু পরে তা বিচ্ছেদ হয়ে যায়। এরপর দ্বিতীয়বার বিয়ে করে কামরুজ্জামান। দ্বিতীয় স্ত্রী তার এসব কীর্তির ব্যাপারে কিছুই জানতেন না বলে দাবি। 
ঘটনার পুনর্নির্মাণ করতে গিয়ে পুলিসের হাতে কামরুজ্জামান সম্পর্কে উঠে এসেছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গিয়েছে, মিটার দেখার নাম করে একাকী মহিলাদের বাড়িতে ঢুকতে সে। এরপর পিছন থেকে লোহার রড দিয়ে মাথার আঘাত করত। তারপর লোহার চেন গলায় পেঁচিয়ে খুন করার ছিল তার উদ্দেশ্য। মৃত্যুর পর মহিলাদের যৌনাঙ্গ ছিন্নভিন্ন করার চেষ্টাও করত সে। 
আট বছর ধরে এই কাজ করে চলেছে সে। ধরা পড়ার পরও তার মধ্যে কোনও অনুশোচনা নেই। জেলে সহবন্দিদের সঙ্গে দিব্যি গল্প করতে দেখা গিয়েছে তাকে। ঠিকঠাক মতো জেলের দেওয়া খাবার-চাও খেয়ে ঘুমোচ্ছে সে। 
কিন্তু হঠাত্ কেন এভাবে মহিলাদের শিকার বানাত সে? 
এই প্রশ্নের উত্তর এখনও পুলিস হাতড়াচ্ছে। কামরুজ্জামানকে জেরা চলছে। তার দুই স্ত্রীয়ের সঙ্গেও কথা বলবে পুলিস। তার 'মোটিভ' কী ছিল? নেতাই লুঠপাট নাকি বিকৃত যৌন চাহিদা? তা এখনও অস্পষ্ট পুলিসের কাছে। 
এদিকে, যে  সিরিয়াল কিলারকে নিয়ে রাতের ঘুম ছুটেছিল পুলিসের, তাকে ধরিয়ে দিয়ে সাহসিকতার নজির গড়েছেন সিভিক ভলেন্টিয়ার অনির্বাণ। তাঁকে পুলিসের তরফে পুরস্কৃত করা হবে বলে জানা গিয়েছে।  

 

.