হেমন্তের আকাশপ্রদীপ মিলে গেল চূর্ণীর ঘিয়ের প্রদীপে

এই কার্তিক মাসে নদিয়ার চূর্ণী নদীতেও জ্বালানো হয় প্রদীপ।

Updated By: Nov 12, 2020, 07:38 PM IST
হেমন্তের আকাশপ্রদীপ মিলে গেল চূর্ণীর ঘিয়ের প্রদীপে

নিজস্ব প্রতিবেদন: বাংলায় চলে এসেছে হেমন্ত। বর্ষা আর শীতের মাঝে অবশ্য শরৎ আর হেমন্তকে প্রায়শ বোঝাই যায় না। তবে, এই সময়-পর্বে বাঙালির এমন কিছু উৎসব থাকে, যার জেরে হেমন্তকে সে অবজ্ঞা করতে পারে না। 

এই সময়ে থাকে ধনতেরাস, দীপাবলি, লক্ষ্মীপুজো, ভাইফোঁটা, ছট। এই সব ধর্মীয় ও লোকাচারের মাঝেই হেমন্তের এক মৃদু কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হল আকাশপ্রদীপ। বাংলার ঘরে-ঘরে এই সময়ে জ্বেলে দেওয়া হয় প্রদীপ। এখন অবশ্য অনেক জায়গাতেই আর প্রদীপ জ্বালানো হয় না। বিদ্যুতের বাল্ব ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। যা সারামাস জ্বলে।

হিমের রাতের ওই গগনের তারা এখন আর কে খুঁজতে যায়? দূরের তারার মতো আকাশপ্রদীপও তো এখন হিমের ছায়ায় ঢাকা পড়েছে।

তবে আকাশপ্রদীপের একটা অন্যরকম ভাবনা আছে। গোটা কার্তিক মাস ধরে পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে বাতি জ্বালানো হয়। যাতে তাঁরা স্বর্গ থেকে এসে ওই আলোয় পথ চিনে স্ব-স্থানে ফিরতে পারেন। এমনিতেই অবশ্য ভারতীয় সংস্কৃতিতে প্রদীপ জ্বালানোর মধ্যে একটা পবিত্রতার ধারণা কাজ করে।  

এই কার্তিক মাসে নদিয়ার চূর্ণী নদীতেও জ্বালানো হয় প্রদীপ। সেখানে মনস্কামনা পূরণ করার জন্য নদীর জলে প্রদীপ ভাসানো একটি পবিত্র লোকাচার। উদ্দেশ্য একটিই-- যে যেখানে আছে সে যেন শান্তিতে থাকে। 

এ বারও সেখানে এই অনুষ্ঠান হয়ে গেল। তবে ভাবনায় একটু বদল এসেছে। এ বছর অতিমারীর কারণে মানুষ প্রদীপ জ্বালিয়ে করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তির প্রার্থনাই করেছেন। 

গতকাল সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলল এই প্রদীপ ভাসানোর কাজ। রাতের অন্ধকারে চূর্ণী নদীর বুকে লক্ষ লক্ষ জ্বলন্ত প্রদীপ এক আলাদা মাত্রা এনে দিল। আকাশপ্রদীপ যেন নেমে এল মাটির বুকে, কিংবা জলের বুকে। নদীর স্রোতে ভাসতে ভাসতে সেই আলো চলে গেল বহু দূরের অন্ধকারের ওপারে। যেখান থেকে সে পাঠাবে আশিস, আনন্দ, সুখ, স্বস্তি। 

আরও পড়ুন: আমিও ফ্ল্যাগ ছাড়া মিটিং করি, কৌশল হতে পারে, শুভেন্দু প্রসঙ্গে অনুব্রত

.